Tuesday, September 9, 2025
  • Login
No Result
View All Result
Advertisement
সন্ধান
  • যুক্তরাষ্ট্র
  • নিউ ইয়র্ক
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • প্রবাস
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ভারত-পাকিস্থান
  • প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মতামত
  • আরো
    • অর্থনীতি
    • জীবনশৈলী
    • মুক্তিযুদ্ধ
    • সম্পাদকীয়
    • সাহিত্য
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • উপ-সম্পাদকীয়
সন্ধান
  • যুক্তরাষ্ট্র
  • নিউ ইয়র্ক
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • প্রবাস
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ভারত-পাকিস্থান
  • প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মতামত
  • আরো
    • অর্থনীতি
    • জীবনশৈলী
    • মুক্তিযুদ্ধ
    • সম্পাদকীয়
    • সাহিত্য
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • উপ-সম্পাদকীয়
সন্ধান
No Result
View All Result
Home প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মতামত

বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধ

November 21, 2020
in প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মতামত
Reading Time: 1 min read
0
0
0
SHARES
15
VIEWS
Share on Facebook

।। সরকার আবদুল মান্নান ।।

বাঙালি জীবনের একটি চিরকালীন আর্কেটাইপ আছে। আর তা হলে অসাম্প্রদায়িকতা। হাজার হাজার বছর ধরে এদেশের মানুষ ধার্মিক। বৌদ্ধ, হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান ইত্যাদি ধর্মের মানুষ বহু বছর ধরে এদেশে বসবাস করে আসছে। কিন্তু কখনও তারা ধর্মভিত্তিক ভেদাভেদ তৈরি করেননি, হিংসা বিদ্বেষ ও হানাহানির আশ্রয় নেননি। বরং তারা নিরবচ্ছিন্ন শান্তির ভেতর দিয়ে একসঙ্গে বসবাস করেছেন, এক ধর্মের মানুষের আনন্দ-বেদনায়, উৎসবে, অনুষ্ঠানে অন্য ধর্মের পাড়া-প্রতিবেশীরা অংশগ্রহণ করেছেন, সহযোগিণার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এই অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধ এদেশের মানুষের মনোগড়নের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। জন্মসূত্রেই বঙ্গবন্ধু বাঙালি জীবনের এই অনন্য মনোগড় লাভ করেছিলেন। কেননা, তিনি যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই পরিবারটি এদেশের হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক ঐতিহ্যে লালিত।

খুব শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধু এ দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করেছেন। কখনও কখনও এইসব নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত পিতার সঙ্গে আলোচনা করতেন তিনি। ফলে অনিবার্যভাবেই তিনি অনুধাবন করতে পেরেছেন যে, ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থ নিহিত না থেকে পারে না। ব্রিটিশ শাসিু ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসকগোষ্ঠী কীভাবে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি করেছিল তা তিনি জানতেন। কীভাবে দেশ পরিচালনার সব ক্ষেত্র থেকে মুসলমানদের বিতারিত করে হিন্দুদের প্রতিস্থাপিত করেছিল, এই ইতিহাসও তিনি জানতেন। ফলে যখন তিনি স্কুলে পড়তেন তখন থেকেই মানুষের মধ্যে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা দেখে তিনি খুব বিরক্ত হতেন। এই বিরক্তির প্রকাশও ঘটেছে অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে। তিনি লিখেছেন :

একসঙ্গে লেখাপড়া করতাম, একসঙ্গে বল খেলতাম, একসঙ্গে বেড়াতাম, বন্ধুত্ব ছিল হিন্দুদের অনেকের সঙ্গে। আমার বংশও খুব সম্মান পেত হিন্দু মুসলমানদের কাছ থেকে। কিন্তু আমি যখন কোন হিন্দু বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে যেতাম, আমাকে অনেক সময় তাদের ঘরের মধ্যে নিতে সাহস করত না আমার সহপাঠীরা।

একদিনের একটা ঘটনা আমার মনে দাগ কেটে দিয়েছিল, আজও সেটা ভুলি নাই। আমার এক বন্ধু ছিল ননীকুমার দাস। একসঙ্গে পড়তাম, কাছাকাছি বাসা ছিল, দিনভরই আমাদের বাসায় কাটাত এবং গোপনে আমার সঙ্গে খেণ। ও ওর কাকার বাড়িতে থাকত। একদিন ওদের বাড়িতে যাই। ও আমাকে ওদের থাকার ঘরে নিয়ে বসায়। ওর কাকিমাও আমাকে খুব ভালোবাসু। আমি চলে আসার কিছু সময় পরে ননী কাঁদো কাঁদো অবস্থায় আমার বাসায় এসে হাজির। আমি বললাম “ননী কি হয়েছে?” ননী আমাকে বলল, “তুই আর আমাদের বাসায় যাস না। কারণ, তুই চলে আসার পরে কাকিমা আমাকে খুব বকেছে তোকে ঘরে আনার জন্য এবং সব ঘর আবার পরিষ্কার করেছে পানি দিয়ে ও আমাকেও ঘর ধুতে বাধ্য করেছে।” বললাম, “যাব না, তুই আসিস।” [২০১২, পৃ. ২৩]

আবার এর উলটো দিকও আছে। অনেক হিন্দু পরিবারে তিনি গিয়েছেন। বন্ধুদের মা-বাবারা তাকে অনেক আদর করেছেন। সেই স্মৃতিও তিনি ভুলেননি। হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে এই যে অভিমিশ্র সম্পর্ক এই সম্পর্কের ব্যাকরণ বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে অনুভব করেছেন এবং উত্তরকালে তার প্রবল রাজনৈতিক জীবনে অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধকে বাঙালি জাতির মুক্তির অন্যতম উপায় হিসেবে গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সেই অসাম্প্রদায়িক জীবনভাবনার পথটিও কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। তারও পাঠ তিনি গ্রহণ করেছিলেন শৈশবে, রাজনীতির সূচনালগ্নে, ১৯৩৮ সালে।

একটি রাজনৈতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জের হিন্দুসম্প্রদায় কীভাবে একত্রিত হয়েছিল এবং পরিণামে তরুণ রাজনৈতিক কর্মী শেখ মুজিবুর রহমানকে জেলে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করেছিল সেই তিক্ত অভিজ্ঞতারও পরিচয় আছে অসমাপ্ত আত্মজীবনী শীর্ষক গ্রন্থে। তখন বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। উভয়েই মুসলিম লীগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তারা গোপালগঞ্জে আসবেন। সুতরাং গোপালগঞ্জের মুসলমানদের মধ্যে বিপুল আলোড়ন তৈরি হয়েছে। সভা হবে। এগজিবিশন হবে। তরুণ শেখ মুজিব স্কুলছাত্র। তবে সহপাঠীদের তুলনায় একটু বড়। সুতরাং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করার দায়িত্ব পড়ে তার ওপর। তিনি দলমু নির্বিশেষে সব শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করেন। কিন্তু পরে দেখা গেল হিন্দু ছাত্ররা সরে পড়ছে। হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে কোনো পার্থক্য আছে তা তখনো তরুণ শেখ মুজিবের নিকট প্রতিভাত হয়নি। তিনি লিখেছেন, “আমার কাছে তখন হিন্দু মুসলমান বলে কোনো জিনিস ছিল না। হিন্দু ছেলেদের সঙ্গে আমার খুব বন্ধুত্ব ছিল। একসঙ্গে গানবাজনা, খেলাধুলা, বেড়ানো- সবই চলত।” [পৃ. ১১] সুতরাং তিনি বুঝতে পারছেন না কেন হিন্দু ছাত্ররা সরে পড়ছে। পরে জানলেন, হক সাহেব মুসলিম লীগের সঙ্গে মন্ত্রিসভা গঠন করেছে বলে হিন্দু সম্প্রদায় ক্ষেপেছে। এইসব তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিলেন যে, সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির ঊর্ধ্বে উঠে একটি অভিন্ন লক্ষ্যে জাতিকে সংহত করতে না পারলে এদেশের মানুষের মুক্তি আসবে না। সুতরাং উত্তরকালে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে অসাম্প্রদায়িক জীবনবোধ।

তরুণ শেখ মুজিব ও যুবক শেখ মুজিব পাকিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো মহৎপ্রাণ ও অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তির সান্নিধ্যে তিনি সমৃদ্ধ হয়েছিলেন এবং শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সান্নিধ্যে তিনি কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের মুক্তির দীক্ষা লাভ করেছিলেন। ফলে পাকিস্তান আন্দোলন যে একটি ধর্মভিত্তক রাজনৈতিক আন্দোলন, এই বিষয়টিকে বিবেচনায় না নিয়ে তিনি মূলত ব্রিটিশদের শাসন থেকে মুক্তির বিষয়টিকর গুরুত্ব দিয়েছেন। আবুল হাশিম বলতেন, পাকিস্তান আন্দোলন হিন্দুদের রিরুদ্ধে নয়, এই আন্দোলন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে। যদিও আবুল হাশিমের ওই ধারণা কংগ্রেসের রাজনৈতিক আদর্শের সঙ্গে যায়নি। কারণ কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতা প্রচার করেছিলেন যে, পাকিস্তান আন্দোলন মূলত হিন্দুদের রিরুদ্ধে আন্দোলন। ফলে হিন্দু-মুসলম দাঙ্গা অনিবার্য হয়ে ওঠে। সেই চরম বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যেও যুবক শেখ মুজিবুর রহমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকেই আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং নিষ্ঠা ও সুতার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

সূচনাপর্বে তার অসাম্প্রদায়িক এই জীবনবোধকে অধিকতর শক্তিমান করে তোলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। তাকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধুর বিচিত্র ভাবনা থাকলেও পরিশেষে মনে হয়, “যে নেতা দেশ ত্যাগ করে দেশের স্বাধীনতার জন্য সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে পরেন তিনি কোনো দিন সাম্প্রদায়িক হতে পারেন না। মনে মনে সুভাষ বাবুকে তাই শ্রদ্ধা করতাম।” [পৃ. ৩৬]

কলকাতায় যুবক শেখ মুজিব যে জীবনযাপন করেছেন, বিশেষ করে পাকিস্তান আন্দোলনের দিনগুলোতে এবং দেশ ভাগের উত্তাল সময়ে তখনও তার মধ্যেই এই বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে প্রোথিত ছিল যে, সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তি কিছু সময়ের জন্য রাজনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করলেও এর মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি ও কল্যাণ কখনোই আসতে পারে না। ফলে কলকাতা জীবনে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার দিনগুলোতে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন সব ধর্মের মানুষদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে।

৪৭-এর দেশ ভাগের পর বঙ্গবন্ধু চলে আসেন ঢাকা। ঢাকা এসে উঠেন ১৫০ নম্বর মোগলটুলী মুসলিম লীগের অফিসে। দেশ ভাগের মাত্র দুই মাস পরে। শামসুল হক সভা আহ্বান করেছেন। সভায় ‘গণতান্ত্রিক যুবলীগ’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। বঙ্গবন্ধু প্রস্তাব দেন, “এর একমাত্র কর্মসূচি হবে সাম্প্রদায়িক মিলনের চেষ্টা, যাতে কোন দাঙ্গাহাঙ্গামা না হয়, হিন্দুরা দেশ ত্যাগ না করে- যাকে ইংরেজিতে বলে ‘কমিউনাল হারমনি’, তার জন্য চেষ্টা করা।” [পৃ. ৮৫] দেশ ভাগের সে ঊষালগ্নে শেখ মুজিবুর রহমান তার অসাধারণ দূরদর্শিতার মধ্যমে ‘গণতান্ত্রিক যুবলীগ’কে রাজনৈতিক কর্মকা- থেকে সরিয়ে রেখে শুধু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য চেষ্টা করেছেন।

এই অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে ওঠে ভাষা আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞার মাধ্যমে উপলব্ধি করেছিলেন যে, বাংলা ভাষা সব বাঙালির। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবারই মাতৃভাষা বাংলা। সুতরাং বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক জীবনতৃষ্ণার মূলে স্থান পেয়ে যায় বাংলা ভাষা আন্দোলন। কেননা, বাংলা ভাষা যে সব বাঙালির প্রাণের সম্পদ শুধু তাই নয় বরং একটি জাতির শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সবকিছুই সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে ওই জাতির মাতৃভাষাকে কেন্দ্র করে। সুতরাং ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব বঙ্গবন্ধুর চেয়ে ভালো আর কেউ বোঝোননি। এবং এই জন্যই ভাষা আন্দোলনে জনমু গড়ে তোলার জন্য তিনি সর্বান্তকরণে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। ভাষা আন্দোলনে সাফল্যের পথ ধরেই বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক অবয়ব লাভ করে এবং আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়।

বঙ্গবন্ধুর এই পরিক্রমণ স্পষ্টতই আমাদের একটি অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের দিকে নিয়ে যায়। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুই প্রথম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব যিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ঘটান এবং এই রাজনৈতিক মূল্যবোধকে আশ্রয় করে ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণী, পেশা নির্বিশেষে সব মানুষকে বাঙালি জাতির মুক্তির আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হন। এবং খুবই বিস্ময়কর ব্যাপার এই যে, অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর এই রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মূল্যবোধ এ দেশের সব ধর্ম ও শ্রেণী-পেশার মানুষ সর্বান্তকরণে গ্রহণ করেছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় খুব বেশি পাওয়া যায় না।

৭০-এর নির্বাচনে স্পষ্টভাবেই প্রতীয়মান হয়ে যায় যে, অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক মূল্যবোধ থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধুর সামগ্রিক রাজনৈতিক আদর্শ এদেশের মানুষ সর্বান্তকরণে গ্রহণ করেছেন। এবং ওই আদর্শিক অবস্থান থেকেই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ অনুষ্ঠিত হয়। এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি স্বাধীন জাতিরাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে যার নাম বাংলাদেশ।

স্বাধীন বাংলাদেশে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু একটি আধুনিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান প্রণয়ন করেন। উক্ত সংবিধানের মূল প্রস্তাবনা ছিল :

আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি;

আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সব মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিলÑ জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সব আদর্শ এই সংবিধানের মূলনীতি হইবে;

আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠাÑ যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে;

আমরা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করিতেছি যে, আমরা যাহাতে স্বাধীন সত্তায় সমৃদ্ধি লাভ করিতে পারি এবং মানবজাতির প্রগতিশীল আশা-আকাক্সক্ষার সহিত সঙ্গতি রক্ষা করিয়া আন্তর্জাতিক শান্তি ও সহযোগিণার ক্ষেত্রে পূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে পারি, সেই জন্য বাংলাদেশের জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তিস্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুণœœ রাখা এবং ইহার রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তাবিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য;

এতদ্বারা আমাদের এই গণপরিষদে, অদ্য ১৩৭৯ বঙ্গাব্দের কার্তিক মাসের ১৮ তারিখ, মোতাবেক ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসের ৪ তারিখে, আমরা এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করিয়া সমবেতভাবে গ্রহণ করিলাম।

সাংবিধানিকভাবে একটি রাষ্ট্রকে ধর্ম নিরপেক্ষ আক্ষা দেওয়ার ইতিহাস বিরল। এমনকি ভারতও তখন ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র ছিল না। বঙ্গবন্ধু তার এক জীবনের লালিত স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার জন্য সব ধর্মের মানুষকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অবাধ স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন এবং কেউ যেন অন্য কারও ধর্ম পালনে বিন্দুমাত্র হস্তক্ষেপ করতে না পারে তার নিশ্চয়তা বিধান করেছিলেন।

কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরাজিত শত্রুদের গভীর ষড়যন্ত্রে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবার-পরিজন নির্মমভাবে নিহত হন। পরে তার রাজনৈতিক সহকর্মীদেরও হত্যা করা হয়। এই হত্যাযজ্ঞের ভেতর দিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু স্যু কখনোই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় না। বরং সময়ের ব্যবধানে তা বহুতর রূপরস ও ঐশ্বর্য নিয়ে বিকশিত হয়। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কীতে আমাদের অঙ্গিকার হোক তার জীবনাদর্শকে যেন আমরা আমাদের ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক জীবনে ফলিয়ে তুলতে পারি। দৈনিক সংবাদ

 

Related Posts

নিউ ইয়র্ক

নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে পুড়িয়ে দেয়ার প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া

September 7, 2025
3
প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মতামত

উত্তর আমেরিকায় বাটপারদের রাজত্বে কমিউনিটি অসহায়

September 4, 2025
9
No Result
View All Result

Recent Posts

  • নুরাল পাগলের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় যা বললেন তাহেরি
  • নুরাল পাগলার মরদেহ কবর থেকে পুড়িয়ে দেয়ার প্রবাসীদের প্রতিক্রিয়া
  • অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
  • বাংলাদেশের রাজবাড়ীতে নুরাল পাগলার দরবারে অগ্নিসংযোগ, নিহত ২ ! আহত অর্ধশত
  • যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ জার্সিতে হয়ে গেল কীর্তন মেলা

Recent Comments

    Sanjibon Sarker
    Editor in Chief/ President

     

    Weekly Sandhan Inc.
    Address: 70-52 Broadway 1A, Jackson Heights, NY 11372.
    Contact: +1 646 897 9262
    Email: weeklysandhan@gmail.com,
    www.sandhan24.com

    Bimal Sarkar
    Executive Editor
    Contact: +1 512-576-2944

    Quick Link

    • সম্পাদক
    • গ্যালারি

    © 2020, All Rights Reserved by সন্ধান - কালের দেয়ালে সাতদিন

    No Result
    View All Result
    • Home
    • Login

    © 2020, All Rights Reserved by সন্ধান - কালের দেয়ালে সাতদিন

    Welcome Back!

    Login to your account below

    Forgotten Password?

    Retrieve your password

    Please enter your username or email address to reset your password.

    Log In
    This website uses cookies. By continuing to use this website you are giving consent to cookies being used. Visit our Privacy and Cookie Policy.
    Go to mobile version