সন্ধান২৪.কম: গাঁজা-মাদক গ্রাস করে ফেলেছে কুইন্সের জ্যামাইকা এলাকাকে। এ নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন এই জনপদের অধিবাসীরা। হাজার হাজার বাংলাদেশিরও বসবাস জ্যামাইকায়। হিলসাইডে অনেক বাড়ির মালিক এখন বাঙালিরা। কুইন্স ভিলেজ, হলিস পর্যন্ত পুরো এলাকায় এখন বাংলাদেশি জনগোষ্ঠির আবাসন। তাদের পরবর্তী প্রজন্ম বেড়ে উঠছে এখানে। এই পুরো এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে মাদকের বিস্তার। পার্সনস বুলেভার্ড, হান্ড্রেড সেভেন্টি নাইন প্রভৃতি সাবওয়ে স্টেশনের ভেতরটা গাঁজার ধোঁয়ায় অন্ধকার থাকে সবসময়। এক শ্রেণীর ভবঘুরে মানুষ প্রকাশ্যেই সাবওয়েতে গাঁজা সেবন করে। নিউইয়র্কের আইনে গাঁজা সেবন নিষিদ্ধ নয় তবে প্রকাশ্যে এমন সেবন এবং অবৈধ গাঁজা বিক্রি হয় এমন অবস্থানগুলো নিয়ে কমিউনিটিতে ক্ষোভ রয়েছে। জ্যামাইকায় এমন মাদক বিস্তারের সাথে বাঙালিরাও জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মাদকের পাশাপাশি অবৈধ সিগারেটের কারবারও জ্যামাইকায় চলছে ব্যাপকভাবে।
মাদকের বিস্তার নিয়ে কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ডা. আল আমিন রাসেল বলেন, ‘কমিউনিটি বিনির্মাণে ড্রাগ বিস্তারের ঘটনা বড় একটি সমস্যা। গত এক বছরে ২০ জনের বেশি বাংলাদেশি যুবক মাদকের ওভারডোজ নিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। সেসব পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। আমরা বিভিন্ন সময় সামাজিক অনুষ্ঠানে মাদকের কুফল নিয়ে কথা বলি। তবে সুন্দর একটি সমাজ গঠনে প্রথমে দরকার বাবা মার ভ‚মিকা। ডলারের পেছনে ছুটতে থাকা বাবা মা তার সন্তানকে সময় দিতে পারেন না বলে তারা একাকি হয়ে যায়। এক সময় তারা জড়িয়ে যায় ভয়াবহ মাদকে। মাদক এখন অন লাইনেও পাওয়া যায় বলে জানা গেছে। এটি অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।’
কোকেন, ক্র্যাক কোকেন, মেথামফেটামিন, হেরোইন, ফেন্টানিলের মতো সিনথেটিক ড্রাগ জ্যামাইকায় বেচাকেনা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সিনথেটিক ড্রাগ একবার শরীরে প্রবেশ করলে তা আর বের হয়ে যায় না। রক্তে মিশে গিয়ে তা বারবার মাদক গ্রহণে বাধ্য করে থাকে। এভাবে একজন যুবক মাদকের ভয়াবহতায় হারিয়ে যায়। এ ব্যাপারে কিছু রিহ্যাব সেন্টার কাজ করলেও মাদকের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে এলাকার প্রবীণরা মনে করছেন।
এনওয়াইপিডির সাবেক কমিশনার ডারমোট শিয়া এক সময় জ্যামাইকার মাদক বিস্তার নিয়ে তার মন্তব্যে বলেছিলেন, আমরা অনেক অভিযুক্তকে ধরে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অভিযুক্তরা এসব এলাকায় মাদক ব্যবাসায়ির নেটওয়ার্ক হিসেবে কাজ করছিল। যারা বিভিন্ন সময়ে মাদক সরবরাহ করতো। মাদক ব্যবসায়িরা কখনও কোন মাদকের নাম ধরে কথা বলে না। তারা বিভিন্ন সাংকেতিক নাম ব্যবহার করে থাকে। মাদক এবং অবৈধ অস্ত্র এ দুটি ভয়ঙ্কর জিনিস পাশাপাশি থাকে। তাই সাধারণ মানুষ এসব অপরাধীদেও সম্পর্কে জেনেও কোন তথ্য দিতে চায় না। গোয়েন্দা পুলিশ ছদ্মবেশে এসব অপরাধীদের ধরে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে নিরলস চেষ্টা করছে বলে এনওয়াইপিডির সূত্র জানিয়েছে।