বর্তমান সময়ে এসে নিউইয়র্কে প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে ব্যাপকহারে জন্মদিন পালনের প্রবণতা বেড়েছে। বছর কয়েক আগেও জন্মদিনের আনন্দ কিংবা জন্মদিন পালন করার এমন হিড়িক ছিল না।
কমিউনিটিতে যাদের প্রচুর কাঁচা পয়সা আছে,তারা বা তাদের শুভাকাঙ্খিরা এমন উৎসবের আয়োজন করছে।
জন্মদিন পালন করা এটি আধুনিক পুঁজিবাদ সমাজের ব্যবসা করার আরেকটি কৌশল বলে মন্তব্য করেন একজন সমাজসেবক।
একজন সাংস্কৃতিক কর্মীর মতে, নিউইয়র্কে অনেকেই প্রচুর কাঁচা পয়সার মালিক হয়েছেন। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে এরা নাকি কর আইনে কালো টাকা সাদা করার জন্য সুযোগে নিয়ে এসব অনুষ্ঠান করছে। পাশাপাশি এমন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করছে।
একজন সাংবাদিক জানান, কমিউনিটিতে এমনও দুই/একজন আছেন যারা,মেসি,জেসিপেনি বা নামকরা প্রতিষ্ঠান থেকে দামী কোট, টাই ,জুতা,জামা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কিনে এনে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পড়ে আসেন। তারপর দুই/ একদিন পর সেই সব পোষাক আবার সেই দোকানে ফিরে দিচ্ছেন।
এমনও শোনা যাচ্ছে, যাদের প্রকৃত জন্ম তারিখের ঠিক-ঠিকানা জানা নাই,তারাও সার্টিফিকেটের জন্ম তারিখে মেনে জন্মদিন পালন করছে।
জন্মদিনের উৎসব-আয়োজন থেকে কেউ দূরে সরে থাকতে চাইলেও শুভাকাঙ্খীদের আন্তরিকতায় বা চাপে পড়ে অনেক সময় জন্মদিন পালন করতে হচ্ছে। এই উপলক্ষে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে আনন্দ-ফূর্তি করে কেক কেটে জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
জন্মদিন উপলক্ষে হরেক রকমের কেকের দেখাও মিলছে আজকাল। আত্মীয়-সজন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে আনন্দ উল্লাস, হাঁসি-তামাশা করা হয়, আয়োজন করা হয় বিশেষ অনুষ্ঠান বা উৎসবের। এতে আমন্ত্রিত মেহমানদের আপ্যায়ন করা হয়ে থাকে। সেই সাথে মেহমানরা জন্মদিনের ব্যক্তির জন্য উপহার সামগ্রীও দিয়ে থাকেন।
একজন সমাজ কর্মীর মতে,নিউইয়র্কে বাঙালি কমিউনিটিতে যে হারে জন্মদিন পালনের প্রবণতা বাড়ছে,এতে করে সমাজে ইতিবাচক দিকটির চেয়ে নেতিবাচক দিকই বেশী দেখা যাচ্ছে। কারণ,জাঁকজমক ভাবে,ঘটা করে যাদের জন্মদিন পালন করার সামর্থ্য নেই তাদের উপর মানসিক চাপ বাড়ছে। পাশাপাশি এটি একটি সংক্রমণ ব্যধির মত সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে অনেককেই অবৈধ পথে পয়সা উপার্জন করার পন্থা খুঁজতে হচ্ছে। একজনের দেখাদেখি আর একজনের মধ্যে জন্মদিন পালন করার ইচ্ছা বাড়ছে।
একজন ভুক্তভোগী বলেন, যে হারে জন্মদিনের অনুষ্ঠান বাড়ছে,তাতে তিনি বেশ কিছুটা বেকায়দায় ও বিব্রত পরিস্থিতিতে আছেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান,প্রায় প্রতিদিন কোন না কোন জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যেতে হচ্ছে এবং জন্মদিনের দিনের উপহার দিতে হচ্ছে। এর ফলে তাকে প্রচুর পয়সা খরচ করতে হচ্ছে। আবার অনুষ্ঠানে না গেলেও সম্পর্কের অবনতী হচ্ছে।