সন্ধান২৪.কম: চরম বিশৃঙ্খলা, ভুল উচ্চারণে উপস্থাপনা, অব্যবস্থাপনা আর নানান আয়োজনের মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে উদযাপিত হলো আওয়ামী লীগের ৭৫ বছর জন্ম জয়ন্তী উৎসব।
রোববার ২৩ জুন জ্যাকসন হাইটসে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার প্লাটিনাম জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড.সিদ্দিকুর রহমান। এসময় শান্তির কপোত ও বেলুন উড়িয়ে দেয়া,দুই দেশের জাতিয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। সব শেষে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উদযাপন করা হয়।
ডাইভারসিটি প্লাজায় ট্রাকের ওপর স্থাপিত ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সময়কালের নানা ইতিহাস। এছাড়াও ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষনও ডিজিটাল স্ক্রিনে দেখানো হয়।
ডাইভারসিটি প্লাজায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় কে কার আগে সামনে দাঁড়াবে তা নিয়ে রিতিমত প্রতিযোগিতা হয়। নিজের চেহারা ক্যামেরায় দেখানোর জন্য আ.লীগের নেতা-কর্মীরা সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুস ছামাদ আজাদসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদেরও কুনই দিয়ে গুঁদিয়ে পিছনের সারিতে ঠেলে দেয়। এসময় সিদ্দিকুর রহমান, আব্দুস ছামাদ,আব্দুল হামিদসহ কয়েকজন নেতা শৃঙ্খলতা ফিরে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
অনুষ্ঠানের ঘোষক সাংগঠনিক সম্পাদক অজ¯্র ভুল বাক্য ও শব্দ ব্যবহার করা জন্য উপস্থিত অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা গেছে। সাংগঠনিক সম্পাদক ঘোষনায় সিদ্দিকুর রহমানকে ‘ডক্টর’ না বলে বারবার ‘ডাক্তার’ বলেছেন। বেশ কয়েকবার তাকে সংশোধন করে দিলেও তিনি শেষ পর্যন্ত ‘ডাক্তার’ বলে গিয়েছেন। একজন নেতা বলেন তিনি ডাক্তার আর ডক্টরের পার্থক্য বুঝেন না।
সেই ঘোষক কবুতরকে পায়রা বলায় উপস্থিত সবার মাঝে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। তখন সভাপতি বলেন পায়না না হবে ‘কবুতর’। এ ছাড়াও ঘোষকের অসংখ্য শব্দ ও বাক্য ভুল বলায় বেশ কয়েকজন নেতাকে বিবৃত প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে কে কখন কি বলছেন তার কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। অনুষ্ঠানসূচীও ঠিক ভাবে সাজানো ছিল না। যার জন্য অনুষ্ঠান নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্ত দেখা দেয়। অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত একজন দর্শক এমন পরিস্থিতি দেখে মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগের কাছে থেকে এর চেয়ে আর বেশী কিছু আশা করা বৃথা। শোভাযাত্রার সময়ও সৃষ্টি হয় ঠেলাঠেলি আর হৈ-হট্টগোল।
ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধো সিরাজ উদ্দীন সরকার, সহ সভাপতি ডা: মাসুদুল হাসান,সামছুউদ্দীন আজাদ,লুৎফর করীম,কাজী কযেস, তারিকুল হায়দার চৌধুরী,
আব্দুল হামিদ, রফিকুর রহমান, ইমদাদ চৌধুরী, আশরাফ উদ্দীন, শরিফ কামরুল হিরা, আলী হোসেন গজনবী, সাহানারা রহমান, আবুল কাসেম, গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লিটন, মমতাজ শাহনাজ, মাসুদ হোসেন সিরাজী, গনেশ কীর্তনিয়া, মাহমুদ হাসান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ ও প্রচার সম্পাদক আব্দুল হামিদ।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ড, সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ তার অভিষ্ট্য লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে আসলে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রান্তকারিরা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেন। এবার তা হতে দেব না। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করবে।
উদ্বোধনী পর্বে শিল্পকলা একাডেমীর সভাপতি মনিকায় রায়ে নেতৃত্বে দুই দেশের জাতিয় সংগীত এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমীর সদস্যরা অংশ গ্রহন করেন।
এরপর ডাইভারসিটি প্লাজা থেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা ঢাক-ঢোল, ব্যাজ, পোষ্টার-ফেস্টুন নিয়ে শোভাযাত্রা বের করে। অনুষ্ঠানের শেষে নেতাকর্মি ও সাধারন মানুষের মাঝে বিরানী বিতরণ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ইতিহাসে এই প্রথম এতও জাকজমকপূর্ণ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আয়োজন করা হয় বলে দলটির পক্ষ থেকে দাবী করা হয়।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে আটক ছিলেন। তাঁকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়।