জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন আইন লঙ্ঘন করেছে, এটা বড় ক্রাইম : ড.মোমেন

বক্তব্য রাখছেন ড. মোমেন

সন্ধান২৪.কমঃ ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার যে প্রতিবেদন তৈরী করেছে, তা জাতিসংঘের  সঠিক নিয়ম মেনে করা হয় নাই।  যার ফলে আর্ন্তজাতিক আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে, এটা খুব বড় রকমের একটা ক্রাইম। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্কে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল  মোমেন একথা বলেন।

গত ৭ ডিসেম্বর রাতে ‘জেনোসাইড ‘৭১ ফাউন্ডেশন ইউএসএ’ জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন,সংগঠনের সভাপতি সভাপতি ড. প্রদীপ রঞ্জন কর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের সাবেক  আইনজীবী ওমর আলী ইসলাম ও সাবেক সহকারী এর্টনী জেনারেল আব্দুর রকিব মন্টু। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার।

সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল  মোমেন বলেন, যে কোন গণহত্যার হত্যার ব্যাপারে জাতিসংঘ থেকে কোন ফ্যাক্টফাইন্ডিং মিশন গঠন করা হয়, কিন্ত বাংলাদেশে ব্যাপারে ফ্যাক্টফাইন্ডিং মিশন গঠন করা হয় নাই। ড. ইউনূসের অর্থায়নে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের নেতৃত্বে একটি দল নিয়ে বাংলাদেশে যায়। তারা প্রতিবেদনে বলেন, তিনি বলেন,এই ব্যাপারে আপনারা জাতিসংঘকে জানান, যে তোমরা বড় রকমের আইন অমান্য করেছো। তা হলে জাতিসংঘ নতুন করে রিপোর্ট তৈরী করবে।

ড. মোমেন আরও বলেন, দেশ নিয়ে খুব দু:চিন্তায় আছি, আতঙ্কে আছি। দেশে যে আর একটা জেনোসাইড হবে না তার নিশ্চয়তা আমরা নাও দিতে পারি। দেশে বর্তমানে যে হারে মব কালচার তৈরী হচ্ছে, তা দেশকে ধংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশটা তলানীতে চলে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক ভাবে, রাজনৈতিক ভাবে সবদিক থেকে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার গত ১৫ বছর জিডিপির হার ছিল ৬.৬% আর এখন বিশ্বব্যাংক (আইএমএফ০ বলছে তা নেমে এসেছে ৩.৪% অর্ধেকে নেমে এসেছে। ৩৯৩ টি ফ্যাক্টরী বন্ধ হয়ে গেছে। ২৩ লক্ষ লোক চাকুরী হারিয়েছে, এর মধ্যে শতকরা ৮৫ ভাগ মহিলা । শেখ হাসিনা যথেষ্ট খাবার-দাবার রেখে গিয়েছিলেন,এখন সে খাবার শেষ হয়ে যাচ্ছে,ফলে দেশ দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। দেশে মানুষের চাকুরী নাই,হাহাকার সৃষ্টি হয়েছে। ৪২ মিলিয়ন লোক এখন দু‘বেলা খেতে পারে না।

এই অব্যবস্থা,অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি প্রবাসীদের সোচ্চার হওয়ার আহŸান জানিয়ে বলেন, দেশটা আপনার আমার সবার, আসুন সবাই মিলে দেশকে বাঁচাই।”

আইনজীবী ওমর আলী ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে সরকার রয়েছে তা সাংবিধানিক ভাবে সম্পূর্ণ অবৈধ। তাই তাদের সমন্ত কর্মকান্ডও অবৈধ। এমন কি শেখ হাসিনার তথাকথিত বিচারও অবৈধ।

তিনি বলেন,শেখ হাসিনার এই বিচারে অনেকগুলো গুরুতর সমস্যা আছে।  আদালতের নিযুক্ত আসামিপক্ষে যে আইনজীবী ছিলেন, তিনি প্রসিকিউশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণগুলো নিয়ে একেবারে সাধারণ যে প্রশ্নগুলো তোলা উচিত ছিল, সেগুলোও তুলতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছেন। বিচারকেরা নিজেদের উদ্যোগেও প্রমাণগুলো কঠোরভাবে খতিয়ে দেখেননি। প্রসিকিউশনের পেশকৃত চিত্র এবং তাদের দেওয়া সাক্ষী-প্রমাণ দ্বারা কী প্রতিষ্ঠিত হয়, সে বিষয়ে আদালত প্রসিকিউশনের অবস্থানটাই মেনে নিয়েছেন বলে মনে হয়েছে। আসামিপক্ষের দুর্বল আইনি লড়াইয়ের কারণে বিষয়টা আরও বেশি সমস্যাজনক হয়ে উঠেছে।

আব্দুর রকিব মন্টু  বলেন, ১৪ জুলাইয়ের হাসিনা হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন বলে ট্রাইব্যুনাল যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তার ভিত্তি ছিল বেশ দুর্বল ও ক্রটিপূর্ণ। নিরাপত্তা রক্ষার জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের আদেশ শেখ হাসিনাকে দিতে হয় না, এটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই করতে পারে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীত, শহীদ স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও নিরবতা পালন। মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্য চিত্র প্রদশর্ন করা হয়।

 

 

 

 

Exit mobile version