এস.কে. সরকার
`৫ আগস্ট গনতন্ত্র, ছাত্র-জনতা-পুলিশ হত্যা দিবস’ এ নিউইয়র্কের টাইম স্কয়ারে বিক্ষোভ সমাবেশে পালন করেছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগ। ৫ আগষ্ট রাত আটটায় টাইমস্কয়ারের মূল চত্ত্বরে এই সমাবেশ হয়।
সমাবেশে সব মিলিয়ে নেতা-কর্মী ছিলেন ৩৫/৩৬ জন। এই হাতে গোনা কয়েকজনের উপস্থিতিকেই তারা ‘বিশাল সমাবেশ’ হিসেবে দাবী করছেন।
টাইম স্কয়ারের মত বিশাল জায়গায় নগন্য সংখ্যক উপস্থিতিকে সমুদ্রে একফোঁটা জলের মতই মনে হবে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের এই ‘সমাবেশের’ একই অবস্থা । এনারা গুটি কয়েক নেতা-কর্মী নিয়ে টাইম স্কয়ারে সমাবেশ করে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে বলবেন,বিশ্বের রাজধানী হিসেবে খ্যাত টাইম স্কয়ারে সমাবেশ করেছি। দ্যাখেন আপা, আমরা কতবড় বাঘ মেরেছি। কিন্তু সেটা যে প্রবাদের মত ‘নামেই তালপুকুর,কিন্ত ঘটিটিও ডোবে না’,শেখ হাসিনা হয়তো তা জানতে পারবেন না।
‘মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী তার ফেসবুকের পাতায় লিখেছেন, ‘বিশ্বের রাজধানী নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বাংলাদেশের আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ।’ ৩৫/৩৬ জনের মিছিল যদি ‘বিশাল’ হয় তবে সত্যিকারের বিশালকে কি বলা হবে ?
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটির প্রায় ৫০ জনের বেশী সদস্য আছেন নিউইয়র্কে। এছাড়াও নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েটি শাখাসহ অনেকগুলি সহযোগি সংগঠন আছে। তবুও এই করুণ অবস্থা কেন ? এই সংগঠনটিকে কেন এতিম এতিম মনে হয় ?
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষককের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে আ.লীগের রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়াত্বপনা অনেক দিন থেকেই চলে আসছে। ক্ষমতার অপব্যবহার আর দলাদলির কারণে দিন দিন দলটি নিষ্ক্রয়তার দিকে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, দলটির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার সীমাহীন দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারীতা,হটকারী সিদ্ধানের কারণে কর্মীরা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশে আওয়ামী সরকার পতনের পর অর্ন্তবর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে নিউইয়র্কে যারা সোচ্চার ছিলেন, তারা আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
আ‘লীগের একজন বলছেন, দলটি তাদের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং, দ্বন্দ্ব,সংঘাত ও ইগোর ফলস্বরূপ, দলের সাংগঠনিক কাঠামো এক ধরনের ভাঙনে পরিণত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের আর একজন নেতা বলেন, রাজনৈতিক এই সংকটময় সময়ে দলের নেত্রী শেখা হাসিনা যখন দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্ববান জানিয়েছেন,সেখানে দলের ভিতরে দ্বন্দ্ব আর বিভক্তি শেখ হাসিনার হাতকে দূর্বল করবে।
টাইম স্কয়াওে ‘৫ আগস্ট গনতন্ত্র, ছাত্র-জনতা-পুলিশ হত্যা দিবস’ সমাবেশে সভাপতিত্বে করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। বক্তব্য দেন আব্দুস ছামাদ আজাদ, মমতাজ শাহনাজ, তানভির সিদ্দিক, শাহীন আজমল,এমদাদ চৌধুরী,রফিকুল ইসলাম,মোহাম্মদ সোলেয়মান আলী প্রমুখ।
এদিকে ৫ আগস্ট মঙ্গলবার জ্যকসান হাইটসের ডাইভারসিটিতে প্রায় একই সময়ে ‘বাংলাদেশের গনতন্ত্র হত্যার দিবস’ পালন করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ পরিবার।
অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকারীদের আগুন সন্ত্রাস, মব ভায়োলেন্স হত্যা খুন খারাবি ডাকাতি ছিনতাই লুটপাট জুলুম নিপীড়ন নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ সমাবেশ।
এতে বক্তব্য রাখেন বাকসুর সাবেক জিএস ড.প্রদীপ রন্জন কর,মুক্তিযোদ্ধা শওকত আকবর রিচি,মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হোসাইন, মুক্তিযোদ্ধা খুরশীদ আনোয়ার বাবলু, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী,আলী আহসান কিবরিয়া অনু, শাহ বকতিয়ার,জয়নাল আবেদীন,জালালউদ্দিন জলিল, চিত্রশিল্পী প্রবীর গুন,নুরুজ্জামান সরদার, হাকিকুল ইসলাম খোকন,মহিউদ্দিন দেওয়ান,করিম জাহাঙ্গীর, কায়কোবাদ,জেডএ জয় প্রমুখ।