সন্ধান২৪.কম : বাংলা সাহিত্যের প্রকৃতিপ্রেমী কালজয়ী লেখক হুমায়ূন আহমেদকে উৎসর্গ করে নিউইয়র্কের আটলান্টিক সাগর পারে হলো ‘জোছনা উৎসব ২০২৩’। আয়োজকরা জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে কোনো বিচে একটি অনুষ্ঠানে এতো প্রবাসী বাংলাদেশী অংশগ্রহণ এই প্রথম। সেদিন কর্মদিবস থাকা সত্ত্বেও সহস্রাধিক মানুষ সমুদ্র সৈকতে জড়ো হয়ে আনন্দ-উৎসবে মেতে ওঠেন।
হুমায়ূন আহমেদকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এই উৎসবে নিউইয়র্কসহ আশপাশের ষ্টেট থেকে সহস্রাধকি দর্শক-শ্রোতা মধ্যরাতের ‘সুপার মুন’ দেখতে আসেন।
বাঙালী অধ্যুষিত কুইন্সের রকওয়ে বিচ-এ বিকেল ৫ টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বিশাল বিচে এই জল ও জোছনায় রসনা বিলাস চলে। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্ঠা তাজুল ইমাম,শিতাংসু গুহ ও নুরুল আমিন বাবু।
দীর্ঘ ৭ ঘন্টার আয়োজনে ছিল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন,ঘুড়ি উড়ানো,দেশীয় খেলা,সাইকেল চালানো, মহুয়া ও মাদল, ফ্যামিলি গো-শো, পুঁথি পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য। এছাড়া শিশুদের জন্য ছিল নানা আয়োজন। নীলা ড্যান্স একাডেমী, যুগলবন্দী হয়ে সেতার ও তবলায় বাদন করেন মোর্শেদ খান ও তপন মোদক। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আগত অতিথিরা সমুদ্র স্নানে,কবিতায়,গানে,নৃত্যে, আড্ডায়, হৈ-হুল্লোড়ে সময় কাটাান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন জোছনা উৎসবের আহ্বায়ক স্বীকৃতি বড়ুয়া। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমন্বয়কারী গোপাল স্যানাল, জাহেদ শরীফ, আব্দুল হামিদ,সুখেন গোমেজ, হাসানুজ্জামান সাকী ও পিনাকী তালুকদার। অতিথিদেরকে নানা উপহার দিয়ে স্বাগত জানান এ ইউ হাসান, সারোয়ার রাফী ও সুলতান আহমেদ। অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ছিলেন সাহানা ভট্টচার্য্য ও শুভ রায়।
উৎসবে বিকেলে দর্শনার্থীদের তরমুজ, পানীয়, ঝালমুড়ি, চানাচুর ও ছোলা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। রাতে বিরিয়ানী দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। পরিবেশন করেন শায়লা আফতাব।
জোছনা উৎসবের উদ্বোধনী পর্বে তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। পুরো আয়োজন ছিল ছিমছাম গোছানো, পরিপাটি ও শৈল্পিক। উৎসবের উদ্বোধন হয়েছে ঢোলক নজরুল ইসলামের ঢোলের বাদ্যে। এরপর মুক্তিযোদ্ধা শিল্পী তাজুল ইমাম গান শুরু করেন। তিনিই উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা। এরপরই সেতার শিল্পী মোর্শেদ খান অপু ও প্রখ্যাত তবলাবাদক তপন মোদকের যুগলবন্দি পরিবেশনা উপভোগ করেন সবাই।।
নীলা ড্যান্স অ্যাকাডেমির খুদে শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করে। উৎসবে গিটার বাজিয়ে শোনান রেহানা মতলুব, কবি বেনজির শিকদারের লেখা পুঁথি পাঠ করেন আনোয়ারুল হক লাভলু, কবিতা আবৃত্তি করেন গোপন সাহা, নজরুল কবীর ও টেক্সাস থেকে আগত কবি বিমল সরকার। এ সময় ভরা পূর্ণিমার গল্প শোনান চিত্রশিল্পী সৈয়দ আজিজুর রহমান তারিফ।
সংগীত পরিবেশন করেন দিনাত জাহান মুন্নী, শাহ মাহবুব, মরিয়ম মারিয়া, রবিন খান, মাহরুফা তৃণা, কানিজ দীপ্তি, সানজানা তাসমীন, সাগ্নিক মজুমদার,দীলিপ মোদক এবং তুর্য ও আহনাফের সংগীত দল রেন্ডম তালবাহানা। কোরিওগ্রাফি করেন শান্তনু সাজ্জাদ ও সানজানা তাসমীন।।
নিউইয়র্কের ইতিহাসে এই প্রথম নান্দনিক ও ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ১৫ দিন আগে থেকেই জোছনাপ্রেমীরা রেজিষ্ট্রেশন শুরু করেন।
উৎসবে রোমান্টিক জুটি বাছাইয়ে গেম শো সঞ্চালনা করেন নাট্যাভিনেতা খাইরুল ইমলাম পাখি। এতে প্রথম স্থান অর্জন করেন দীলিপ-মুক্তি জুটি। অনুষ্ঠান যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন শামসুন্নাহার নিম্মি, হাসানুজ্জামান সাকী, শুভ রায়, সাদিয়া খন্দকার, স্বাধীন মজুমদার ও মিহির চৌধুরী।
জোছনা উৎসবে আগত দর্শনার্থীরা এম্ফিথিয়েটার থেকে সমুদ্র সৈকতে আসেন । সেখানে সৈকতের বালিতে লণ্ঠন হাতে সবাই গোল হয়ে বসে দীর্ঘ সময় ধরে সমবেত গান ও আড্ডায় মাতেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা তাজুল ইমাম, উপদেষ্টা শিতাংশু গুহ, নূরুল আমিন বাবু, আহ্বায়ক স্বীকৃতি বড়ুয়া, আশা হোম কেয়ারের সিইও ইঞ্জিনিয়ার আকাশ রহমান, জ্যামাইকা সেলিম বিরিয়ানীর স্বত্ত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন সেলিম এবং ঢাকা থেকে আগত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতা ডিভাইন মার্সি হাসপাতাল নির্মাণ কমিটির আহ্বায়ক বাবু মার্কস গোমেজ।
উৎসবে রোমান্টিক জুটি বাছাইয়ে গেম শো সঞ্চালনা করেন নাট্যাভিনেতা খাইরুল ইমলাম পাখি। অনুষ্ঠান যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন শামসুন্নাহার নিম্মি, শুভ রায়, সাদিয়া খন্দকার, স্বাধীন মজুমদার ও মিহির চৌধুরী।
জোছনা উৎসবে আগত দর্শনার্থীরা এম্ফিথিয়েটার থেকে সৈকতে জল-জোছনা অবগাহনে নামেন। সেখানে সৈকতের বালিতে লণ্ঠন হাতে সবাই গোল হয়ে বসে গান ও আড্ডায় মাতেন। এ সময় মোহনীয় এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।