সন্ধান২৪.কম : ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া,মুর্শিদি,জারিসারি,ধামাইল,গম্ভীরা, ঝুমুর,আঞ্চলিক গান,পুঁথিপাঠ,পদাবলী কীর্তন,বাউল লালন,হাসন রাজা, রাঁধা রমন,রামকানাইগীতি এবং যাত্রাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে নিউইয়র্কে শেষ হলো লোক সঙ্গীত উৎসব।
৮ জুলাই নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজার উন্মুক্ত চত্ত¡রে দিনভর এই উৎসবে শত শত মানুষ উপস্থিত থেকে বাঙালি প্রাণের ভিতরে লালন করা অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। ‘ফিরে চলো মাটির টানে’ শীষর্ক অনুষ্ঠান শুরু হয় দুপুর ২টায় শেষ হয় রাত ১১টায়।
উৎসবের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন দুই বাংলার বিখ্যাত প্রিয় শিল্পী পবন দাস বাউল এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়।
দুপুরে ‘বেঙ্গলী ক্লাব ইউএসএ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানটির শুভ উদ্বোধন করেন রথীন্দ্রনাথ রায়। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সঙ্গীতের প্রাণপুরুষ পবন দাস বাউল, আর এক জনপ্রিয় লোক সংগীত শিল্পী কালা মিয়া ও বিশেষ অতিথি সিপিএ সারওয়ার চৌধুুরী । অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন হোস্ট সংগঠনের উপদেষ্টা শিতাংশু গুহ, সভাপতি দীনেশ চন্দ্র মজুমদার, আহবায়ক দীপক দাস । এ পর্বটি সঞ্চালনা করেন উৎসব কমিটিরসদস্য-সচিব শিবলী ছাদেক।
উদ্বোধনী বক্তব্যে রথীন্দ্রনাথ রায় বলেন, মূলত লোকগীতি,লোকবাদ্য ও লোকনৃত্যকে একসুতোয় গেঁথে ফেলাই হচেছ লোকসঙ্গীত । একেবারে গ্রামীণ শেকড় থেকে উঠে আসা শিল্পীরাই লোকসঙ্গীতের ঐতিহ্যকে পুরুষানুক্রমে সােেমনর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। লোকসঙ্গীকে গণমানুষের হৃদয়ে লালিত করে চলছে। সেই লোকসঙ্গীকে প্রবাস লালন করার জন্য যারা এই উদ্যোগ গ্রহন করেছেন তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।
পবন দাস বাউল বলেন, বাংলা লোকসঙ্গীতের সীমানা দেশের গন্ডি থেকে, ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। সেই ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রকে আর একটু প্রসারিত করতে এই আয়োজন অত্যন্ত গুরত্ব বহন করে।
অন্যান্য বক্তরা বলেন, মধ্য দিয়ে এই যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কৃতিতে এই আয়োজন আমাদের শত বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাকে মানুষের বুকের মধ্যে লালন করতে কিছুটা ভ‚মিকা রাখতে পারবো। বিশেষ করে নিউইয়র্কের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিকে অবশ্যই সমৃদ্ধ করবে।
প্যারিস থেকে আসা পবন দাস বাউলের পরিবেশনার সময় শত শত দর্শক-শ্রোতা নেচে-গেয়ে পুরো চত্ত¡র মাতিয়ে রাখে। এছাড়াও লোক সংগীতে জীবন্ত কিংবদন্তি শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়ের গানে মুগ্ধ হন উপস্থিত সবাই। কালা মিয়ার দেহতত্ত¡ গান সবাই প্রাণ ভরে উপভোগ করেছে। উৎসবে আরো সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন জোহরা আলিম, শাহ মাহবুব, রানু নেওয়াজ, অনিক রাজ, চন্দ্রা ব্যানার্জি এবং সূতপা মন্ডল। চন্দ্রা ব্যানার্জির নেতৃরেত্ব নৃত্যাঞ্জলি এবং কাবেরী দাসের নেতৃত্বে সঙ্গীত পরিষদের পরিবেশনা সকলে বিমুগ্ধচিত্তে উপভোগ করেছেন। সংস্কৃতির প্রতি গভীরভাবে আগ্রহী একদল নারী এক পর্যায়ে মঞ্চের সামনে নেচে গেয়ে পুরো আয়োজনকে ভিন্ন এক আমেজে নিয়ে গেছেন। পুরা অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাচিক শিল্পী গোপন সাহা। দুপুর থেকে গভীর রাত অবধি এ আয়োজনে ছিল ধামাইল, পদাবলী কীর্তন, পুঁথি পাঠ, কবিগান, নৃত্যসহ বাঙালি সংস্কৃতির সকল ধারার আয়োজন।