সন্ধান২৪.কমঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি “সংখ্যালঘু কমিশন” গঠন করেননি “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” পাশ করেননি। শুধু তাই নয়, তিনি ঐক্য পরিষদের দাবি উপেক্ষা করে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ডজন খানিক চিহ্নিত সংখ্যালঘু বিদ্বেষী-সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন, যাদের নাম ইতিমধ্যে মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছে এবং নিন্দা জানিয়েছে।
ঐক্য পরিষদের সভাপতিত্রয়: অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, ড. টমাস দুলু রায়, ও রণবীর বড়ুয়া এবং সাধারণ সম্পাদক ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার স্বৈরাচারী এরশাদ প্রণীত রাষ্ট্রধর্ম-ইসলাম আইনকে সাংবিধানিকভাবে পাকাপোক্ত করেছে, এবং রামু থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অপরাধীদের সুষ্ঠূ বিচার না করে ধর্মীয় মৌলবাদী ও উগ্রপন্থীদের সংখ্যালঘু নির্যাতনে প্রশ্রয় দিয়েছে। এই সরকার সারা দেশে শতশত মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে, কিন্ত একটিও নতুন মন্দির, প্যাগোডা বা গীর্জা নির্মাণ করেনি, যা সংখ্যালঘুদের প্রতি চরম বৈষম্যের দৃষ্টান্ত । পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরীষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথাকথিত প্রগতিশীল সরকার তাঁদের স্ব-প্রতিশ্রুত “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” পাশ করেনি অথবা ”সংখ্যালঘু কমিশন” গঠনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি, যা স্পষ্টত:ই দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রতারণামূলক আচরণ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত । ৩০লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষাধিক নারীর সম্ভ্রম, এবং জীবন রক্ষার তাগিদে প্রায় ১কোটি হিন্দুর দেশত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি এ’ উদাসীনতা বেদনাদায়ক। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের মৌলবাদী তোষণ নীতির ফলে দেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের অস্তিত্ব যেমন বিপন্ন হয়েছে তেমনি সেকুলার ডেমোক্র্যাটিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়েছে।
মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে, যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ এ’ আত্মঘাতি পথ পরিহার করে, মুক্তিযুদ্ধ ও একুশের চেতনার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের মূল্যবোধ পুন:প্রতিষ্ঠিত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানায়। আর, যে সকল আসনে সংখ্যালঘু বিদ্বেষী, সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে, সেগুলো অবিলম্বে বাতিল করে ঐসব আসনে জোট-শরিকদের প্রার্থী দেয়ার দাবি জানায়। ঐক্য পরিষদ সরকারের কাছে তাঁদের প্রেরিত খসড়া অনুযায়ী “সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন” প্রনয়ণ ও “মাইনরিটি কমিশন” গঠন পূর্বক ২০১৮ সালের নির্বানী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে আবারো জোর দাবি জানায়।