Thursday, October 30, 2025
  • Login
No Result
View All Result
Advertisement
সন্ধান
  • যুক্তরাষ্ট্র
  • নিউ ইয়র্ক
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • প্রবাস
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ভারত-পাকিস্থান
  • প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মতামত
  • আরো
    • অর্থনীতি
    • জীবনশৈলী
    • মুক্তিযুদ্ধ
    • সম্পাদকীয়
    • সাহিত্য
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • উপ-সম্পাদকীয়
সন্ধান
  • যুক্তরাষ্ট্র
  • নিউ ইয়র্ক
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • প্রবাস
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ভারত-পাকিস্থান
  • প্রবন্ধ-নিবন্ধ-মতামত
  • আরো
    • অর্থনীতি
    • জীবনশৈলী
    • মুক্তিযুদ্ধ
    • সম্পাদকীয়
    • সাহিত্য
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • উপ-সম্পাদকীয়
সন্ধান
No Result
View All Result
Home উপ-সম্পাদকীয়

সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত অপ্রাপ্তি ও অর্জন

April 7, 2022
in উপ-সম্পাদকীয়
Reading Time: 1 min read
0
0
0
SHARES
0
VIEWS
Share on Facebook

ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ : বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। এটা গর্বের, অহংকার এবং আনন্দের। কয়েক যুগ ধরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে অস্বস্তিকর এবং বিশৃঙ্খল অবস্থায় বিরাজমান। জনগণের মাঝেও ভয়-ভীতি, ক্ষোভ, চিকিৎসক এবং চিকিৎসাব্যবস্থার প্রতি অনাস্থার কমতি নেই। ২০২০ সালের মার্চ থেকে করোনায় একদিকে যেমন চলেছে ধ্বংসের তাণ্ডবলীলা, অন্যদিকে উন্মোচিত হয়েছে স্বাস্থ্যব্যবস্থার অনেক নগ্নদিক। দিনের শুরুতে সংবাদপত্রের পাতা খুললেই দেখা যায়-স্বাস্থ্য-সুরক্ষা সামগ্রীর সংকট, হাসপাতালে হাই-ফ্লো অক্সিজেন এবং আইসিইউর অভাব, পর্যাপ্ত বেড নেই, বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে ভর্তি হতে না পেরে রাস্তাতেই করোনা রোগীর মৃত্যু, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে জনসমাগম, স্বাস্থ্য খাতে ও ব্যবস্থাপনায় নানা দুর্নীতি ইত্যাদি।

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করেন। তিনি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের সব ক্ষেত্রে একটি শক্ত নীতিমালা, পরিকল্পনা এবং অবকাঠামো রেখে গেছেন, যার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে আজকের স্বাস্থ্যব্যবস্থা। তার পরিকল্পনা শুধু রাজধানী বা শহরকেন্দ্রিক ছিল না; বরং জেলা, থানা, ইউনিয়ন, গ্রামসহ তৃণমূল পর্যায়ে সেগুলো নিশ্চিত করাই ছিল মূল উদ্দেশ্য আর তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, প্রতিটি জেলায় হাসপাতাল, থানা হেলথ কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুবিন্যস্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রণয়নের পথ দেখিয়েছিলেন। স্বাস্থ্যকে সংবিধানের মূল অধিকার, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গুরুত্ব এবং চিকিৎসকদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদাদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অগ্রযাত্রা শুরু।

বঙ্গবন্ধু দেশেই স্নাতকোত্তর পর্যায়ে চিকিৎসকদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ ও আন্তর্জাতিক মানের বিশেষজ্ঞ তৈরির জন্য তৎকালীন শাহবাগ হোটেলকে ‘আইপিজিএম অ্যান্ড আর’ এবং ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ কলেজ ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স বা বিসিপিএস প্রতিষ্ঠা করেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইপিজিএম অ্যান্ড আর’কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করেন। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের সুচিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেন নিটোর বা পঙ্গু হাসপাতাল এবং প্লাস্টিক সার্জারির কার্যক্রমও শুরু হয়। ফিজিওথেরাপি নিশ্চিত করতে তিনি ১৯৭২ সালে এ বিষয়ে উচ্চতর কোর্স ও চিকিৎসাসেবা চালু করেন। এ ছাড়া তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল এবং তৎকালীন কলেরা হাসপাতালকে আইসিডিডিআর.বি হিসাবে রূপান্তরিত করেন।

মেডিকেল ছাত্রদের পাশাপাশি প্যারামেডিকেল এবং নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধুর সময় শুরু হয়েছিল। তিনি শিশু-কিশোরদের চিকিৎসার জন্য ঢাকা শিশু হাসপাতাল, মায়েদের স্বাস্থ্যসেবায় মাতৃমঙ্গল কেন্দ্র এবং জমি প্রদানের মাধ্যমে বারডেম হাসপাতাল ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গোড়াপত্তন করেন। ‘প্রতিকারের থেকে প্রতিরোধ শ্রেয়’-এ নীতি বাস্তবায়নের জন্য তিনি ১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (নিপসম) এবং চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণার প্রচলন, মান নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) প্রতিষ্ঠা করেন। জনবিস্ফোরণের বিষয়টি উপলব্ধি করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে তিনি পরিবার-পরিকল্পনা দফতর স্থাপন করেন। ১৯৭৪ সালে ‘জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান’ এবং ১৯৭৫ ‘বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ’ গঠিত হয় তার নির্দেশনায়। ক্ষতিকর, অপ্রয়োজনীয় ও বেশি দামি ওষুধ আমদানি বন্ধ এবং ওষুধের যৌক্তিক ও নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেন।

স্বাস্থ্য খাতের বর্তমান চিত্র

রোগী বা জনগণের বিরাট অংশই ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রতি কমবেশি ক্ষুব্ধ। তাদের অভিযোগের পাহাড় যেমন-হাসপাতালে ভালোভাবে চিকিৎসা হয় না, ডাক্তার-নার্স ঠিকমতো দেখে না, চিকিৎসকের উচ্চ ফি, পরীক্ষা-নিরীক্ষায় কমিশন ও ওষুধ কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত নানা উপঢৌকনের বিনিময়ে ওষুধ লেখা এবং অযথা অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা, রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, এমনকি অনেকের দৃষ্টিতে ডাক্তাররা ‘কসাই’। অভিযোগগুলো অযৌক্তিক নয়, অনেকাংশেই সত্যও বটে। এ ছাড়া চিকিৎসার খরচও দিন দিন বেড়েই চলছে। হঠাৎ কেউ জটিল রোগে আক্রান্ত হলে তাকে চিকিৎসার খরচ মেটাতে বেশ হিমশিম খেতে হয়। সরকারি হাসপাতালে খরচ কম হলেও অতিরিক্ত রোগীর চাপে এবং প্রয়োজনের তুলনায় সুযোগ-সুবিধা কম থাকায় প্রত্যাশিত এবং সুষ্ঠু চিকিৎসা পাওয়া সম্ভব হয় না।

বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা খরচ আকাশচুম্বী, সেখানে চিকিৎসা নেওয়া অনেকেরই সামর্থ্যরে বাইরে। ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধের ছড়াছড়ি, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মানহীনতা, মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্টের ব্যবহার, প্রায়ই অনেক ল্যাবরেটরির বিরুদ্ধে ভুল রিপোর্টের অভিযোগ, অদক্ষ টেকনিশিয়ান আর ভুয়া ডাক্তারের আধিক্য, এমনকি দালালদের দৌরাত্ম্যে রোগীরা দিশাহারা। এ ছাড়া প্রায়ই রোগী বা তার আত্মীয়-স্বজন চিকিৎসায় অবহেলা বা ভুলজনিত কারণে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ তোলেন। এ নিয়ে রোগীর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের গোলযোগ, হাতাহাতি, এমনকি ভাংচুরের ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। একইসঙ্গে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তাসহ অনেকের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে দেখা যায়। মাঝে মধ্যেই দেখা যায়, ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বিভিন্ন ল্যাবরেটরি, হাসপাতাল বা ক্লিনিকে গিয়ে অভিযান চালান, সঙ্গে সঙ্গে অনিয়মের দায়ে জরিমানাও করেন। কিন্তু তাতে অবস্থার পরির্বতন হয় না। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব ও প্রশাসনিক অদক্ষতায় ভরপুর গ্রাম-গঞ্জ, উপজেলা, জেলা; এমনকি বিভাগীয় পর্যায়েও স্বাস্থ্যব্যবস্থার হ-য-ব-র-ল অবস্থা। সব মিলিয়ে সারা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার হতাশাজনক চিত্রটাই ফুটে ওঠে সর্বত্র। চিকিৎসকের প্রতি রোগীরা অসন্তুষ্ট ও আস্থা রাখতে পারছেন না। সামর্থ্যবান রোগীরা চলে যাচ্ছেন বিদেশে।

বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতে আমাদের অর্জন

কয়েক দশক ধরে চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সীমাবদ্ধ সম্পদ, দারিদ্র্য, জনসংখ্যার আধিক্য ও প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের অর্জন কম নয়। স্বাস্থ্য বিষয়ক সহস তবে বর্তমানে বাংলাদেশের সফলতা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। বাংলাদেশ পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজারসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষার উপকরণ উৎপাদনে সক্ষম হয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে সারা বিশ্বে রপ্তানি করছে। করোনা যুদ্ধে ফ্রন্ট লাইন যোদ্ধাদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী নিশ্চিত করা হয়েছে।

শুরুতে করোনা পরীক্ষার সুযোগ ছিল সীমিত, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে তার সমাধান হয়েছে। অনেক বাধা বিপত্তি এবং অব্যবস্থাপনা পেরিয়ে বেশকিছু কোভিড ডেডিকেটেড ও ফিল্ড হাসপাতাল, আইসিইউ এবং হাই-ফ্লো অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সহজলভ্য ও নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক কোভিড যুদ্ধে শামিল হয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসা সুনিশ্চিত করে। ফলে অনেক উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের দেশের মৃত্যুর হার কম। বিশেষ ব্যবস্থায় অনেক চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ করা হয়।

প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকার কর্মসৃজন ও কর্মসুরক্ষা, অভ্যন্তরীণ চাহিদা সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মানুষ বাঁচানো, খাদ্য, চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা যাতে ঠিক থাকে, সরকার সেদিকেও লক্ষ রেখেছে। করোনা মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া সময়োপযোগী পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সবচেয়ে যুগান্তকারী এবং ঐতিহাসিক সাফল্য হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দক্ষতা, দূরদর্শী এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের মানুষের জন্য করোনার টিকা প্রাপ্তি ও সরবরাহ নিশ্চিত করা। বাংলাদেশ যেহেতু আগেই ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়ায় সফলকাম ছিল, তাই জনগণকে করোনার টিকা সহজে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই করোনার টিকা আমাদের দেশেই তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। মার্কিন সংস্থা ‘ব্লুমবার্গ’ কর্তৃক একটি দেশের সার্বিক কোভিড পরিস্থিতি, চিকিৎসা, মৃত্যুহার, কোভিড মোকাবিলায় প্রস্তুতি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অভিঘাত ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে ‘কোভিড সহনশীলতা ক্রম’ অনুসারে পৃথিবীর ২০তম সহনশীল ও নিরাপদ দেশের তালিকায় অবস্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ-যা উন্নয়নশীল দেশের জন্য ‘বিস্ময়’।

স্বাস্থ্যখাতে অন্যান্য অর্জন

মজবুত অবকাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে, যা উন্নয়নশীল অনেক দেশের জন্য মডেল। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। ‘১৬২৬৩’ নম্বর ব্যবহার করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত তথ্য প্রদান এবং ৯৫টি হাসপাতালে টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়েছে। ২০১১ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশকে ‘ডিজিটাল হেলথ ফর ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক বাংলাদেশকে পোলিও ও ধনুষ্টংকারমুক্ত ঘোষণা, ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, উন্নত শিশু স্বাস্থ্যসেবা, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের স্বাস্থ্য পরিসেবা ব্যবস্থা, চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য ফ্রি চিকিৎসাব্যবস্থা করা হয়েছে। উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবার উন্নয়নে আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন, নতুন হাসপাতাল চালুসহ উন্নয়নমূলক অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার।

মহিলা, শিশু ও সুবিধা বঞ্চিতদের সেবা প্রাপ্তির সহজলভ্যতা এবং স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টিসেবাগুলোর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস এবং পুষ্টিমান বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে। শিশু, নবজাতক এবং মাতৃমৃত্যু হার অনেক কম, ফলে গড় আয়ু ৭২.৮-এ উন্নীত হয়েছে এবং ৯১.৩ শতাংশ শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। ইপিআই-এর মাধ্যমে টিকা কার্যক্রমের সফলতার স্বীকৃতি স্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭ শতাংশে হ্রাস, পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারকারীর হার ৬২.৪ শতাংশে উন্নীত এবং সন্তান জন্মদানের হার ২.০৫-এ হ্রাস পেয়েছে। ‘১৬৭৬৭’ নম্বর ব্যবহার করে ‘সুখী পরিবার’ সেবায় প্রদান করা হচ্ছে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম। বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রায় পাঁচশ অ্যাম্বুলেন্স এবং গর্ভবতী মায়েদের অ্যাম্বুলেন্সসেবা বিনামূল্যে প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারা দেশে ১৮,৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশব্যাপী বিস্তৃত স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ ছাড়া ‘কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট’ গঠন করা হয়েছে। টাঙ্গাইলের কয়েকটি এলাকায় অতি দরিদ্রদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সহজলভ্য করতে ‘শেখ হাসিনা হেলথ কার্ড’ বিতরণ শুরু এবং ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা পর্যায়ে বহু হাসপাতাল নির্মিত হয়েছে এবং শতাধিক সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল চালু রয়েছে। অনেক বিশেষায়িত হাসপাতালে বিনামূল্যে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, প্রসূতিসেবা, অর্থোপেডিক, চোখ, নাক-কান-গলা, হৃদরোগ, নবজাতক ও অপুষ্টিজনিত সেবার ব্যবস্থা রয়েছে। সংক্রামক ব্যাধি, কুষ্ঠ ও অন্যান্য রোগের জন্য ১৪টি বিশেষায়িত হাসপাতাল ছাড়াও সব মেডিকেল কলেজ, জাতীয় হৃদরোগ এবং অনেক জেলা হাসপাতালে ‘সিসিইউ’-এর চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে। ক্যানসার চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জাতীয় ক্যানসার ইনস্টিটিউটে।

এ ছাড়াও ১০টি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট চালু এবং চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে। কয়েক হাজার চিকিৎসক এবং নতুন নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকদের জন্য উচ্চশিক্ষার আসন বৃদ্ধি, নতুন কোর্স চালু, নার্সিং বিষয়ে পিএইচডি ও মাস্টার্স প্রশিক্ষণ, বিএসসি নার্সিংয়ের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি কোর্স চালুসহ দক্ষ জনবল তৈরিতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। মেডিকেল কলেজগুলোর জন্য আসন এবং সরকারি হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো হয়েছে। ১৩টি বেসরকারি হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ, সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অফিসার ও প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

নতুন অনেক ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মিত হয়েছে, যেমন-শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স, অত্যাধুনিক ক্যানসার ও জাতীয় কিডনি হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, জাতীয় হৃদরোগ ও পঙ্গু হাসপাতালের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, অ্যাজমা সেন্টার ও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে সরকারি হাসপাতালে রূপান্তর, মুগদায় ৫শ’ শয্যার হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ই এন টি হাসপাতাল, জাতীয় নার্সিং উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, বক্ষব্যাধি ও কুর্মিটোলা ৫শ’ শয্যাবিশিষ্ট এবং ঢাকার ফুলবাড়িয়ায় সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল, খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত ও গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল এবং এ হাসপাতালকে কেন্দ্র করে অনলাইন চক্ষুসেবা কার্যক্রম চালু করতে ‘ভিশন সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে।

এ ছাড়া ২০২১ সালে ৫ বিভাগের ২০টি জেলার ৭০টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘কমিউনিটি ভিশন সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি সেন্টারে প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেজ হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে রোগীর যাবতীয় তথ্য পাঠিয়ে ও রোগীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চক্ষু বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা দেন। সারা দেশে পর্যায়ক্রমে সব উপজেলায় আরও সেন্টার স্থাপন করা হবে। ২০১১ সালে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি, জাতীয় ওষুধনীতি-২০১৬, মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আইন-২০১৮ সংযোজনসহ নানাবিধ আইনকাঠামো প্রণয়ন, জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠনের মাধ্যমে দেশে পুষ্টিসেবা জোরদার, নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস প্রচলনের মাধ্যমে মা ও শিশুস্বাস্থ্যের প্রতি গুরুত্ব আরোপ, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট নার্সিং ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসাব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে যুগান্তকারী। আগে যেসব রোগে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়া হতো, বর্তমানে এসব রোগের চিকিৎসা দেশেই হচ্ছে। ব্যয়বহুল পরীক্ষা-নিরীক্ষা যথেষ্ট কম খরচেই হচ্ছে। বিভিন্ন হাসপাতালে অনেক জটিল রোগের চিকিৎসাসহ শত শত অপারেশন সফলভাবে করা হচ্ছে। এমনকি কিডনি, লিভার ও বোনমেরো ট্রান্সপ্লান্ট, হৃদরোগের বাইপাস, রিং পরানো, চোখের লেন্স ও নিউরোসার্জারিসহ অনেক চিকিৎসা দেশেই হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ হাসপাতাল এবং ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করে জনগণকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে; যদিও সেখানকার খরচ অনেকটাই আকাশচুম্বী। তারপরও বিত্তবানরা বিদেশে না গিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন।

অনেক প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন, যা সম্পন্ন হলে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় আরও যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে; যেমন-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণ, ঢাকা মেডিকেল কলেজকে ৫ হাজার শয্যা ও জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালকে ১৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণ। এ ছাড়াও ২০টি মেডিকেল কলেজের সম্প্রসারণ, সব বিভাগে বার্ন ইউনিট নির্মাণ, ৩৬টি জেলা হাসপাতাল ও ৩৪টি উপজেলা হাসপাতালের সংস্কার ও সম্প্রসারণ প্রকল্প। সারা দেশে জেলা হাসপাতালগুলোতে ১০ তলাবিশিষ্ট ক্যানসার, কিডনি এবং হৃদরোগ ব্যবস্থা সংবলিত হাসপাতাল নির্মাণ, প্রতিটি উপজেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল এবং ৯৭টি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ চলছে। আরও কয়েক হাজার চিকিৎসক নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রণীত ৫ বছরমেয়াদি ‘চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি কর্মসূচি ২০১৭-২০২২’-এর কাজ শুরু হয়েছে, যা বাস্তবায়ন হলে দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। ওষুধশিল্পে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। ইউডিসিএল-এর নতুন প্ল্যান্ট চালু এবং দেশেই ওষুধের কাঁচামাল তৈরির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের ওষুধের চাহিদা পূরণ করে বিশ্বের ১৫৭টি দেশে বাংলাদেশের ওষুধ রপ্তানি করছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত ৩টি জাতিসংঘ পুরস্কারসহ মোট ১৬টি আন্তর্জাতিক সম্মাননা ও পুরস্কার অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অটিজম চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় অটিজম চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাত আশাতীতভাবে অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছে। চলমান প্রকল্পগুলো সুষ্ঠু ও সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন এবং ভবিষ্যতের সুচিন্তিত নতুন পরিকল্পনা এ অগ্রযাত্রার পথে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ : ইমেরিটাস অধ্যাপক, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক

Related Posts

উপ-সম্পাদকীয়

দিদারুল ইসলাম: যে মৃত্যু হিমালয়ের চেয়েও ভারী

August 1, 2025
19
উপ-সম্পাদকীয়

জালালাবাদঃ চলছে সংঘাত আর বিদ্বেষের আবাদ : সুব্রত বিশ্বাস

June 15, 2023
79
No Result
View All Result

Recent Posts

  • ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ আমেরিকার ! ট্রাম্পের নির্দেশে ৩৩ বছর পর পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা
  • ঘরের শোভা বৃদ্ধি করতে পারে ফল রাখার শৌখিন পাত্র, ধাতব, কাঠ, প্লাস্টিক
  • ‘বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচন বানচালের ছক কষছে দেশি-বিদেশি শক্তি !’ হাসিনার বক্তব্যের পরেই মন্তব্য ইউনূসের
  • Zohran Mamdani — Whose Side Are You On? Hindu, Buddhist, Christian, or Muslim?
  • নিউইয়র্কে গণগ্রেপ্তার নিয়ে বিভ্রান্তি, জনমনে আতঙ্ক, ল-ইয়ারদের আয় বাড়ছে

Recent Comments

    Sanjibon Sarker
    Editor in Chief/ President

     

    Weekly Sandhan Inc.
    Address: 70-52 Broadway 1A, Jackson Heights, NY 11372.
    Contact: +1 646 897 9262
    Email: weeklysandhan@gmail.com,
    www.sandhan24.com

    Bimal Sarkar
    Executive Editor
    Contact: +1 512-576-2944

    Quick Link

    • সম্পাদক
    • গ্যালারি

    © 2020, All Rights Reserved by সন্ধান - কালের দেয়ালে সাতদিন

    No Result
    View All Result
    • Home
    • Login

    © 2020, All Rights Reserved by সন্ধান - কালের দেয়ালে সাতদিন

    Welcome Back!

    Login to your account below

    Forgotten Password?

    Retrieve your password

    Please enter your username or email address to reset your password.

    Log In
    This website uses cookies. By continuing to use this website you are giving consent to cookies being used. Visit our Privacy and Cookie Policy.
    Go to mobile version