মনজুরুল ইসলাম
সন্ধান২৪.কমঃ স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ১ টাকার নোট প্রচলনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম নিজস্ব কাগজের মুদ্রা চালু হয়। স্বাধীনতার মাত্র তিন মাসের মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে ভারতের সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস (নাসিক) থেকে ছাপানো হয় ১ ও ১০০ টাকা মূল্যমানের নোট। পরে ১৯৭২ সালের ৪ মার্চ এসব নোটকে নিজস্ব মুদ্রা হিসেবে অবমুক্ত করা হয়।

এসব নোটের প্রতিটিতেই স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র মুদ্রিত ছিল । পরবর্তী সময়ে ১৯৭২ সালের ২ মে ১০ টাকা মূল্যমানের নোট অবমুক্ত করা হয়। আর বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত ৫ টাকা মূল্যমানের নোট বাজারে অবমুক্ত করা হয় একই বছরের ২ জুন। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশী মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয় প্রতি ডলারে সাড়ে সাত থেকে আট টাকা। সে সময় এ নোটগুলোই হয়ে উঠেছিল স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অন্যতম বড় নিদর্শন।
যেকোনো দেশের মুদ্রা ছাপাতে হলে এর বিপরীতে সম্পদ বা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকা দরকার। কিন্তু সদ্য স্বাধীন দেশের এমন কোনো সম্পদ বা রিজার্ভ ছিল না। সে সময় ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে ৫০০ ডলারের একটি তহবিল দেয়া হয়, সেটিই ছিল দেশের প্রথম বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি বা রিজার্ভ।
যদিও স্বাধীনতার পরও অন্তর্বর্তীকালীন মুদ্রা হিসেবে দেশে কিছুদিন পাকিস্তানি রুপির প্রচলন ছিল। পরে পাকিস্তানি নোটের অতিরিক্ত প্রচলন বন্ধ করতে বিভিন্ন মূল্যমানের নোট ক্রমান্বয়ে বাজার থেকে তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালের ৫ মার্চ রাষ্ট্রপতির আদেশবলে প্রথমে ৫০ রুপি মূল্যমানের পাকিস্তানি নোট অচল ঘোষণা করা হয়। ক্রমান্বয়ে ১৯৭৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সবগুলো পাকিস্তানি নোট অচল বলে ঘোষণা করা হয়।
এর আগে ইংল্যান্ডের থমাস ডিলারু থেকে ছাপানো নতুন ১০০ টাকা মূল্যমানের নোট বাজারে ছাড়া হয় ১৯৭২ সালের ১ সেপ্টেম্বর। পরবর্তী সময়ে সুইজারল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া থেকেও বাংলাদেশের নোট ছাপা হয়।অন্যদিকে ১৯৭৪ সালের ১৫ জুলাই ১ পয়সার ধাতব মুদ্রা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১ টাকার ধাতব মুদ্রার প্রচলন হয় ১৯৭৫ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে। বনিক বার্তা