সন্ধান২৪.কম ডেস্ক : ছোট্ট একটি দেশ ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের । মাত্র এক লক্ষ ৮০ হাজার জনসংখ্যা । অতীতে কোনও দিন অলিম্পিক্সে তারা পদকই জেতেনি। সেই সেন্ট লুসিয়া একেবারে সোনা জিতল প্যারিস অলিম্পিক্সে এসে। সেই কাজ করলেন যিনি, তাঁকে কয়েক মাস আগেও কেউ চিনতেন কি না সন্দেহ। শনিবার রাতে স্তাদ দ্য ফ্রাঁসে ইতিহাস গড়লেন জুলিয়েন আলফ্রেড। এমন একটা দিনে তিনি নজির গড়লেন যে দিন জামাইকার কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানোর ছিলেন না। যাঁকে সোনার দাবিদার ধরা হচ্ছিল, সেই শাকারি রিচার্ডসনও টক্কর দিতে পারলেন না। হিটে সবার আগে শেষ করেছিলেন। ফাইনালেও সবার আগে শেষ করে ইতিহাস তৈরি করলেন জুলিয়েন।
২২ বছরের জীবনে কষ্ট প্রচুর দেখেছেন জুলিয়েন । অবশেষে সাফল্যের মুখ। তা-ও আবার অলিম্পিক্সের মতো বড় মঞ্চে। ১২ বছর বয়সে তিনি হারিয়েছিলেন বাবাকে। দু’বছর পর বাড়ি ছেড়ে জামাইকা চলে যান। গত বছরের ডিসেম্বরে নিজের শারীরশিক্ষার শিক্ষক সাইমন স্টিফেনকে হারান, যিনি প্রথম জুলিয়ানের মধ্যে প্রতিভা দেখতে পেয়ে তাঁকে স্প্রিন্টে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
আমেরিকার জাতীয় কলেজিয়েট প্রতিযোগিতায় ইন্ডোরে ৬০ এবং ২০০ মিটারে গত বারের বিজয়ী তিনি। আউটডোরে ১০০ মিটারে এবং ২০০ মিটারে চ্যাম্পিয়ন। কলেজিয়েট প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়কে যে ‘বাওয়াম্যান পুরস্কার’ দেওয়া হয়, তা জিতেছেন ২০২৩ সালে। ৬০ মিটার এবং ২০০ মিটারে এ বছর দ্রুততম মহিলা দৌড়বিদ তিনি।
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সেন্ট লুসিয়ায় জনসংখ্যা দু’লাখেরও কম। সে রকম একটি দেশ থেকে উঠে এসেছেন জুলিয়েন। তিনি যেটাই করছেন সেটাই সেই দেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে ইতিহাস। জুলিয়েনও যেন ইতিহাস তৈরি করার খেলায় নেমেছেন।
পাঁচ বছর আগে যুব অলিম্পিক্সের সময়টা ভুলতে পারেন না জুলিয়েন। ওই একটা প্রতিযোগিতা তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। ১০০ মিটারে রুপো পেলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের প্রতিনিধিত্ব কতটা বড় হতে পারে, সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আরও বড় স্বপ্ন দেখার ইচ্ছা শুরু হয়েছিল সেখান থেকেই। অলিম্পিক্সের ওয়েবসাইটে জুলিয়েন বলেছিলেন, “একটা দারুণ কিছু যে শুরু হতে চলেছে, সেটা তখনই বুঝতে পেরেছিলাম। আমেরিকার কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছাটা তখন থেকেই শুরু হয়।”
ইনস্টাগ্রামে তাঁর পরিচিতি দেখতে গেলে তিনটি লাইন পাওয়া যাবে। প্রথমে লেখা ‘অ্যাথলিট’, অর্থাৎ ক্রীড়াবিদ। দ্বিতীয় লাইনে সেন্ট লুসিয়ার পতাকা। তৃতীয় লাইনে লেখা ‘রোমান্স ৮.১৮’। এটি বাইবেলের একটি শ্লোক, যার সারমর্ম, তুমি আগামী দিনে যে সাফল্য পেতে চলেছ তার সঙ্গে এখনকার কষ্টের কোনও মিল নেই।