আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করবে আইএফসি

কর্মসংস্থানে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করবে বিশ্বব্যাংকের অঙ্গ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। দেশের টেকসই পুনরুদ্ধার ত্বরান্বিত করা এবং সবুজ প্রবৃদ্ধিকে উত্সাহিত করতে নতুন এই বিনিয়োগ করা হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় নিযুক্ত আইএফসির আঞ্চলিক পরিচালক হেক্টর গোমেজ আং তার পাঁচ দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে এমন মন্তব্য করেন।

সফরকালে তিনি ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি, গবেষণা সংস্থা, সম্ভাব্য নতুন গ্রাহক এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেন। গোমেজ আং-এর সঙ্গে বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের জন্য আইএফসির নবনিযুক্ত কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টমান এবং আইএফসির ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

জ্বালানি এবং জ্বালানি সঞ্চালন এবং কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নীত করতে অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সাশ্রয়ী আবাসন আইএফসির বিনিয়োগের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে আং চিহ্নিত করেছেন।

গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গোমেজ আং বলেন, আইএফসি জ্বালানি বৈচিত্র্য উত্সাহিত করে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ২০ শতাংশের বেশি বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করেছে। আমরা জ্বালানির মিশ্রণ এবং সঞ্চালনের ক্ষেত্রে আরো কাজ করতে চাই। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক অঞ্চল, সবুজ, সাশ্রয়ী আবাসনে নতুন সুযোগ অনুসন্ধান করতে চাই। তিনি আরো বলেন, একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ বাসযোগ্য ঢাকা দিয়ে শুরু হবে এবং আমরা সাশ্রয়ী আবাসন খাত উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী যা অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সঙ্গে এক বৈঠকের পর দেওয়া বক্তব্যে গোমেজ আং বাংলাদেশকে উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সহায়তা করতে আরো বেশি প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়া একটি চ্যালেঞ্জ। সুতরাং টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের উত্তরণের জন্য সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এবং বহিস্থ বাণিজ্যিক ঋণের দিকে নজর দেওয়া অপরিহার্য। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা খুবই আশাব্যঞ্জক হয়েছে এবং আমরা ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য উন্মুখ। বিগত বছরগুলোতে আইএফসির বিনিয়োগ বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উন্নয়নে এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প বাস্তবায়নে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। এসব উদাহরণের মধ্যে রয়েছে— বিকাশ, চালডাল, ট্রাক লাগবে এবং সিটি ব্যাংকে ইকুইটি বিনিয়োগ যা মহামারির সময়ে ডিজিটাইজেশনকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করেছে।

মার্টিন হল্টমান বলেন, মহামারির প্রথম ১৮ মাসে আমরা ব্যবসায় সহায়তা করতে এবং কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখতে ৪৭ কোটি ডলার ( চার হাজার কোটি টাকার বেশি) বিনিয়োগ করেছি। এসব বিনিয়োগ ব্যবসা সচল রাখতে, রপ্তানি পুনরায় শুরু করতে এবং কর্মসংস্থান টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে। আমরা আগামী জুনে সমাপ্য চলতি অর্থবছরের মধ্যে আরো ২৫ কোটি ডলার (২১৩৭ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। ২০১০ সাল থেকে আইএফসি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের উন্নয়নে প্রায় ৩৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। আগামী পাঁচ বছরে আইএফসির প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের (৪২৭৫০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ কর্মসূচি রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হালকা প্রকৌশল, অর্থনৈতিক অঞ্চল, আর্থিক ও পুঁজিবাজার এবং প্রবৃদ্ধিসক্ষম টেকসই অবকাঠামো।

Exit mobile version