সন্ধান২৪.কম ডেস্ক : আড়াই দিনের টেস্ট। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাতেও জয়ের জন্য খেললো ভারত।
সাদা জার্সিতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট! ওভার প্রতি রান উঠল ৮.২২। রোহিত শর্মা, যশস্বী জয়সওয়াল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুলদের ব্যাটিং দেখে ভ্রম হতে বাধ্য। আইপিএলের রিটেনশন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হতেই ভারতীয় দলের ক্রিকেটারেরা হাত খুলতে শুরু করলেন। নিজেদের দলের কর্তাদের হয়তো বার্তা দিয়ে রাখলেন রোহিতেরা।
কানপুরের ২২ গজে ভারতীয়েরা ব্যাট হাতে যে তাণ্ডব দেখালেন, তাতে হার মানতে বাধ্য ইংল্যান্ডের ‘বাজ়বল’। ভারতীয় ক্রিকেটে রাহুল দ্রাবিড় জমানা শেষ। অতীত ধ্রপদী ব্যাটিং। গৌতম গম্ভীরের কোচিং বদলে দিয়েছে ব্যাটারদের গিয়ার। আরও সাহসী। আরও আগ্রাসী। প্রতিপক্ষ, পিচ, বোলার এ সব নিয়ে ভাবনা নেই। বল দেখ, ব্যাট চালাও। গৌতি দর্শনে টেস্ট ক্রিকেটেও টি-টোয়েন্টির গতি। বৃষ্টি আড়াই দিন নষ্ট করলেও ১২ পয়েন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা নষ্ট করা যাবে না। কানপুরের ২২ গজে পড়ে প্রায় গড়িয়ে যাওয়া বলই রোহিত, যশস্বীদের ব্যাটে লেগে উড়ে গেল মাঠের বাইরে। এক বার নয়। দু’বার নয়। বার বার। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দলগত দ্রুততম ৫০, ১০০, ১৫০, ২০০, ২৫০ রানের নজির তৈরি হল।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস ২৩৩ রানে শেষ হওয়ার পর টেস্ট ক্রিকেটের নতুন সংস্করণ নিয়ে মাঠে নামলেন ভারতীয়েরা। ইনিংসের প্রথম দু’টি বল দেখে খেললেন যশস্বী। তার পর অন্য খেলা দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। যশস্বী পর পর তিনটি চার মারলেন হাসান মাহমুদকে। দ্বিতীয় ওভারে হাত খুললেন রোহিত। খালেদ আহমেদের প্রথম দু’টি বলই উড়ে গেল গ্যালারিতে। প্রথম আট বলে ভারতীয় ইনিংসের সুর বেঁধে দিলেন দুই ওপেনার। সেই সুরেই ধরে রাখল কোহলি, শুভমন, রাহুলদের উইলো। আউট হওয়ার পরোয়া করলেন না কেউই।
সুনীল গাওস্করের রক্ষণশীল ক্রিকেট বিশেষজ্ঞেরা বলেন টেস্ট ক্রিকেটে ভাল ফল করতে হলে একটা ইনিংসে অন্তত ৯০ ওভার ব্যাট করা দরকার। তাঁর সামনেই রোহিতেরা দেখালেন টেস্ট জেতার চেষ্টার জন্য ৩৫ ওভার (ভারতের ইনিংস ৩৪.৪ ওভারের) ব্যাট না করলেও চলে। গম্ভীরের হাতে পড়া ভারতীয় দল আসলে আগামী প্রজন্মের ক্রিকেট খেলতে শুরু করে দিয়েছে। রোহিত ১১ বলে ২৩ রান করে আউট হলেন। তার আগে তিনটি ছক্কা, একটা চার মারলেন। তিন নম্বরে নেমে শুভমন ৩৯ রান করলেন ৩৬ বলে। চারটি চার, একটি ছক্কা এল তাঁর ব্যাট থেকে। আর এক ওপেনার যশস্বী ৭২ রান করতে নিলেন ৫১ বল। ১২টি চার আর ২টি ছক্কায় সাজালেন ইনিংস। চার নম্বরে নেমে রান পেলেন না পন্থ। আগ্রাসী হতে গিয়ে উইকেট ছুড়ে দিলেন ১১ বলে ৯ রান করে। কোহলির ৩৫ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে ৪টে চার এবং একটি বিরাট ছক্কা। ধরে খেলতে পছন্দ করা রাহুলও নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পারলেন না ‘গৌতিবল’ ক্রিকেটের মাঝে। ৪৩ বলে ৬৮ রান করলেন ৭টি চার এবং ২টি ছয়ের সাহায্যে।