আফগানিস্তানে মেয়েদের পরকীয়ায় পাথর ছুড়ে হত্যার সাজা জারি

অন্ধকারের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে তালিবান

সন্ধান২৪.কম ডেস্ক : অন্ধকারের দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে তালিবান। তালিবান শাসন ফিরে আসার পরে আফগানিস্তানে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে। চাকরিস্থলেও তাঁদের আর প্রবেশাধিকার নেই। এ বার তালিবান সরকারের নয়া ফতোয়া— মহিলাদের পরকীয়ার শাস্তি প্রকাশ্যে পাথর ছুড়ে হত্যা।

এ ব্যাপারে ক্ষোভের সাথে মানবাধিকার কর্মী আরেফি বলেন, ‘‘তালিবান নেতার এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই আফগানিস্তানে তাদের নিজস্ব শাস্তি-ব্যবস্থা শুরু হয়ে গেল। আফগান মহিলারা ক্রমশ একা হয়ে পড়ছেন। এখন আর কেউ তাঁদের পাশে নেই। তাঁদের নিরাপত্তার কথা কেউ ভাবছে না। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলি চুপ করে থাকাই শ্রেয় মনে করছে।’’

আফগানিস্তানে তালিবান শাসন  ফিরে আসে ২০২১ সালে । তখনই তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজ়াদা বলেছিলেন, ‘‘কাবুল দখল করেই থেমে যাবে না তালিবান। এই সবে শুরু।’’ সে সময়ে বহু মানুষ দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। যাঁদের অর্থের জোর ছিল, তাঁরা সফল হয়েছিলেন। বাকিরা নিজের দেশেই ‘বন্দি’।

তালিবান অবশ্য দাবি করেছিল, তাদের ‘২.০ সংস্করণ’ নরমপন্থী। নারীশিক্ষা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে তারা আগের মতো কট্টরপন্থী মনোভাব পোষণ করবে না। যদিও এ কথা বিশ্বাস করেননি কেউই।

গত সপ্তাহে আখুন্দজ়াদা ঘোষণা করেছেন, তাঁরা শরিয়তি আইনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। যেমন, প্রকাশ্যে বেত মারা, মহিলাদের পরকীয়ার শাস্তি পাথর ছুড়ে হত্যা। তালিবান-নিয়ন্ত্রিত একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া অডিয়ো-বার্তায় আখুন্দজ়াদা বলেছেন, ‘‘পরকীয়া করলে আমরা বেত মারব মহিলাদের… যত ক্ষণ না মৃত্যু হচ্ছে, পাথর ছুড়ে যাওয়া হবে।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘আপনারা বলতে পারেন মহিলাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। কারণ পাথর ছোড়া, প্রকাশ্যে বেত মারা আপনাদের গণতান্ত্রিক আদর্শের বিপরীত। কারণ আপনারা শয়তানের প্রতিনিধি।’’ আখুন্দজ়াদা তাঁদের এই পদক্ষেপকে ‘পশ্চিমি প্রভাবের বিরুদ্ধে তালিবানের লড়াই’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।

তালিবানের ঘোষণায় অবাক হননি আফগান মহিলারা। তাঁরা ত্রস্ত। ’৯০-এর দশকের সেই অন্ধকার যুগ ফিরে আসার আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের। ঘরে পুরুষ অভিভাবক না থাকায় না খেতে পেয়ে মরে যেতে হয়েছে, তবু ঘরের বাইরে পা ফেলতে পারেননি মহিলারা। কিংবা বিনা অপরাধে শুধুমাত্র পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহে প্রকাশ্যে পাথর ছুড়ে ‘খুন’।

Exit mobile version