যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শহর মারিউপোলের একটি বাংকারে দুই বাংলাদেশি ছাত্র আটকা পড়ে আছেন বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। যুদ্ধের কারণে তারা সেখান থেকে বের হতে পারছেন না৷
জার্মান গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে শনিবার এক প্রতিবেদনে জানায়, আটকে পড়া দুই ছাত্রের নাম মাহমুদুল হাসান দোলন ও মেহেদি হাসান। এক মাস আগে তারা ইউক্রেনে আসেন স্টুডেন্ট ভিসায়।
দোলনের ভগ্নিপতি পোল্যান্ড প্রবাসী মাসুদুর রহমান তুহিন টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে জানান, গত শনিবারের পর থেকে দোলনের আর কোন খোঁজ পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, গত শনিবার শেষ কথা হয়েছে। সে সময় পাঁচ ঘণ্টার ‘হিউম্যান করিডর’ দেয়া হয়েছিল। তখন দোলন ও মেহেদিসহ ৪০ জন সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু মাঝপথে ইউক্রেনের সেনারা তাদের গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়। কারণ তখন রাশিয়া সেখানে বোমাবর্ষণ করছিল। আমরাও ফোনে বোমাবর্ষণের আওয়াজ পেয়েছি।
এরপর মারিউপোলে একটি বাংকারে আশ্রয় নেন দোলন ও মেহেদিসহ অন্যরা। সেখানে পৌঁছে ভগ্নিপতিকে ভয়েস মেসেজ পাঠান দোলন।
তিনি বলেন, এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা খুবই অমানবিক অবস্থায় সেখানে আছে। বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, খাবার নেই।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন বলেন, সুমি থেকে এরই মধ্যে নয়জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই দুই বাংলাদেশিকেও উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, সমস্যা হলো, ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না গত পাঁচ-ছয়দিন ধরে। সুমিতে বাংলাদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তাই উদ্ধার করা সহজ হয়েছে। তবে এই দুই বাংলাদেশিকে তাদের ‘লোকেশন’ ধরে উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা অপেক্ষা করছি হিউম্যান করিডরের জন্য।
সুলতানা লায়লা হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের মাধ্যমে এখন তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর মারিউপোলে রাশিয়া আবার বোমাবর্ষণ শুরু করেছে। ওই শহরের কাউন্সিল টেলিগ্রামে একটি পোস্ট দিয়ে বলছে যে রাশিয়ার বাহিনী শহরের কেন্দ্রে বৃষ্টির মতো বোমা ফেলছে।
তারা বলছে আবাসিক এলাকাতেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে।
রুশ সৈন্যরা কয়েক দিন ধরে শহরটি ঘিরে রেখে সেখানে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। এর ফলে সেখানে বিদ্যুৎ, পানি ও খাদ্যের সংকট তৈরি হয়েছে।
ইউক্রেন সরকার বলছে, মানবিক ত্রাণ-সাহায্য নিয়ে গাড়ির একটি বহর মারিউপোল শহরে পৌঁছাতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আক্রমণের কারণে তারা ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছে।