সন্ধান২৪.কম ডেস্কঃ সিরিয়ায় আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে ‘ইসলামিক স্টেট্’ (আইএস)। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাশার এবং তাঁর সঙ্গীরা পালিয়ে যাওয়ার পর সিরিয়ার বিভিন্ন অস্ত্রভাণ্ডারে লুট চালায় এই জঙ্গি গোষ্ঠী। সেই অস্ত্র দিয়ে সংগঠনকে নতুন করে সাজাতে শুরু করেছে আইএস।
সিরিয়ায় আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে ‘ইসলামিক স্টেট্’ (আইএস)। পশ্চিম এশিয়ার এই দেশ থেকে সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করেছে আমেরিকা। সিরিয়ায় মার্কিন সেনাঘাঁটি কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পর থেকেই সিরিয়ায় ফের আইএস শক্তি প্রদর্শন শুরু করে দিয়েছে। কয়েক দিন আগেই মার্কিন মদতপুষ্ট দুই কুর্দ সৈন্যকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে আইএস জঙ্গিরা।
এসডিএফ-এর তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের অগস্ট পর্যন্ত সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব প্রান্তে ১১৭টি হামলা চালিয়েছে আইএস জঙ্গিরা। ২০২৪ সালে গোটা বছরে ৭৩টি হামলার সঙ্গে আইএস জঙ্গিদের নাম জড়িয়েছিল। এ বার তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিরিয়ার এক বাজার এলাকা দিয়ে ট্রাকে চেপে যাচ্ছিলেন ওই দুই কুর্দ সৈন্য। সেই সময়ই বাজারের মধ্যে রাস্তার মাঝখানে বাইক নিয়ে তাঁদের পথ আটকায় আইএস জঙ্গিরা। তাদের সঙ্গে ছিল একে-৪৭। নিমেষে দু’জনকে গুলিতে ঝাঝড়া করে দিয়ে চলে যায় জঙ্গিরা। ওই হামলার এক দিন পরে এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’। ঘটনার পর থেকে বাজার এলাকার বিক্রেতারা প্রায় সকলেই ভীত। একটি দোকানের মালিক জানান, প্রকাশ্য রাস্তায় এ ভাবে আইএস জঙ্গিদের হামলা তিনি আগে কখনও দেখেননি। শঙ্কিত কণ্ঠে তিনি বলেন, “আমরা সকলেই খুব ভয়ে ভয়ে রয়েছি। ওরা (আইএস) আবার শহরে ফিরে এসেছে।”
গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সিরিয়ার একটি বড় অংশের দখল ছিল আইএস জঙ্গিদের হাতে। সিরিয়ায় আইএস-এর ‘সাম্রাজ্য’ ধ্বংস করতে মার্কিন ফৌজ়কে সাহায্য করেছিল কুর্দদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমেক্র্যাটিক ফোর্স (এসডিএফ)। সম্প্রতি যে দুই সৈন্যকে প্রকাশ্য রাস্তায় গুলি করা হয়েছে, তারাও সেই বাহিনীরই অংশ। প্রতিবেদন অনুসারে, আইএস সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর সেই সাফল্য পেয়েছিল, তা নিয়ে আবার প্রশ্ন তুলে দিল সাম্প্রতিক এই হামলা। মার্কিন এবং কুর্দ সেনা আধিকারিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের মধ্যে বদল এনেছে আইএস জঙ্গিরা।
বাশার-আল আসাদের পতন এবং সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনী কমে যাওয়ার সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে আইএস। তারা নতুন করে জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ শুরু করেছে। নিজেদের পরিধি বিস্তার করার চেষ্টা শুরু করেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে বিদ্রোহীরা দামাস্কাসের দখল নিলে বাশার আল-আসাদের সরকারের পতন হয়। সিরিয়া ছেড়ে পালান বাশার। ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ অনুসারে, বাশার এবং তাঁর সঙ্গীরা পালিয়ে যাওয়ার পর সিরিয়ার বিভিন্ন অস্ত্রভাণ্ডারে লুট চালায় এই জঙ্গি গোষ্ঠী। সেই অস্ত্র দিয়ে সংগঠনকে নতুন করে সাজাতে শুরু করেছে আইএস। আপাতত সিরিয়ায় কোনও এলাকাকে সে ভাবে নিজেদের দখলে রাখতে না পারলেও সেখানকার আইনশৃঙ্খলাকে পরীক্ষার মুখে ফেলছে তারা।


