সন্ধান২৪.কমঃ ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ ছিল। এই ভাষণকে ঘিরে জাতিসংঘের সামনে শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। অপর দিকে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
দুপুর দেড়টার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অধিবেশনে ভাষণ দেন। কিন্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা সকাল ১০ থেকেই জাতিসংঘের সামনে জড়ো হতে থাকে।
দুপুর ১২টার দিকে ড. সিদ্দিকুর রহমান,হাজি এনাম,আব্দুস ছামাদ আজাদ,ইমদাদ চৌধুরীসহ ৫০ / ৬০ জন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে সমাবেশে দেখা যায়। ততক্ষণে দুইশতাধিক বিএনপির নেতা-কর্মী বিক্ষোভ সমাবেশে এসে উপস্থিত হন।



আওয়ামী লীগের সমাবেশ
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতির সংখ্যা কম হওয়ায় বিমর্ষ দেখা যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও ইমদাদ চৌধুরী সহ উপস্থিত কয়েকজন নেতাকে। এসময় শ্লোগান আর মিছিলে মাঠ গরম করে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের কয়েক শত কর্মী।
অবশ্য সময় বাড়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতির সংখ্যা বাড়তে থাকে। কিন্ত সময় গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি, আওয়ামী লীগের চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়তে থাকে। ঢিল ছোঁড়া দুরত্বে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবস্থান হলেও বিএনপির মিছিল ও শ্লোগানের নিচে ঢাকা পড়ে যায় আওয়ামী লীগের বিজয় উৎসব।
এবার আওয়ামী লীগের এমন করুণ অবস্থা কেন হলো ? এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেন, এবার বিভিন্ন আয়োজন ও সমাবেশ কার বা কাদের নেতৃত্ব্ েহচ্ছে,তা নিয়ে যথেষ্ট দ্বিধায় আছে কর্মীরা। কেউ কোন পরিকল্পিত সিদ্ধান্ত দিতে পারছে না। যার জন্য কর্মীর মাঝে এবার উৎসাহের কিছুটা ভাটা পড়েছে।



বিএনপির সমাবেশ
আওয়ামী লীগের আর একজন নেতা বলেন, এবার প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের মধ্যে শুরু হয়েছে দড়ি টানাটানি। দুই দলই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান তাদেও নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যস্থ সময় ব্যয় করছে। ফলে জাতিসংঘের সামনে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীদের উপস্থিতির ব্যাপারে নেতারা মাথা ঘামাচ্ছেন না। যার জন্য কর্মীরাও দ্বিধা-দ্ব›েদ্ব পড়ে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে।
ড. সিদ্দিকুর রহমান অবশ্য অন্য কথা বলেছেন। তিনি বলেন আজ (২২ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশাল আয়োজনে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হবে। এই সমাবেশের পরেই সেটি অনুষ্ঠিত হবে। তাই বেশী ভাগ নেতা-কর্মী সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রস্ততি নেয়ার জন্য এখানে আসতে পারেন নাই। আজ আমাদের মূল অনুষ্ঠান হলো প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়া।
বিএনপির সমাবেশে এত নেতা-কর্মীর উপস্থিতির কারণ কি ? জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করছে। সর্বপরী এখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাদের অস্তিত্বের জন্য লড়ছে। তাই প্রাণের তাগিতে তারা এই সমাবেশে উপস্থিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবার জাতিসংঘের সামনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশের অবস্থান বদল হয়েছে। প্রতিবার যেখানে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করতো, এবার সেখানে বিএনপি আর বিএনপির জায়গায় আওয়ামী লীগ সমাবেশ করে।