(সম্প্রতি ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে নিউইয়র্কে বাঙালি কমিউনিটিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও এই ডিগ্রি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। এই ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে ফেসবুকে ধারাবাহিক ভাবে লিখছেন,সাংবাদিক হাবিব রহমান। আজ তার লেখার প্রথম কিস্তি প্রকাশ করা হলো। সম্পাদক : সন্ধান )
ধার করা লেখা দিয়ে শুরু করছি।আনিসুল হকের এই লেখাটাসম্ভবত ২০১৩ সালে কোন একটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছিলোঃ
“একটা কুকুর লাভ করেছে এমবিএ ডিগ্রি। আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে। বিবিসি নিউজনাইট এই তথ্য উন্মোচন করেছে। আবার একটা কুকুরকেও যে একটা বিশ্ববিদ্যালয় এমবিএ ডিগ্রি দিতে পারে, সেই নাটকটা সাজিয়েছেও তারাই। তারা এইউওএল নামের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএর জন্য আবেদন করেছে কুকুরের নামে। বলেছে, এমবিএ ডিগ্রি চাই। তারা একটা জীবনবৃত্তান্ত বানিয়েছে, সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম হলো, পুরোনো ডিগ্রির কপি, শিক্ষার্থীর ফটো জমা দিতে হবে। যেহেতু আবেদনকারী একটা কুকুর, কাজেই তারা তা জমা দিতে পারেনি। ‘তাই বলে কি আমি ডিগ্রি পাব না?’ ফোনে জানতে চাওয়া হয়েছে। ‘কেন নয়? আপনাকে ৪৫০০ পাউন্ড জমা দিতে হবে।’ ওই পরিমাণ পাউন্ড দেওয়া হয়ে গেলে কুকুরের নামে চলে এসেছে এমবিএ ডিগ্রি। কুকুরটির নাম পিট। সে থাকে ব্যাট্রেরেসা কুকুর-সদনে। সম্প্রতি এই খবর প্রকাশিত হয়েছে, হইচই পড়ে গেছে বিলেতে। সবচেয়ে লজ্জায় আছেন তাঁরা, যাঁরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি তাঁদের নামের শেষে ব্যবহার করে মুখ-উজ্জ্বল করে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবু হেনা মোস্তফা কামালের ছেলে সুজিত মোস্তফার একটা স্মৃতিচারণ এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে।তিনি লিখেছেনঃ
“আব্বা কোনো সময় নামের আগে ডক্টর লিখতেন না। এই বিষয়ে তাকে একদিন জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, ডক্টর কি আমার বাপের দেওয়া নাম? আজকাল পিএইচডি প্রাপ্তদের বেশির ভাগ নামের আগে ডক্টরেট না লিখলে মনে করেন যে তাদের যেন পরিচয় দেওয়া সম্পূর্ণ হচ্ছে না। অথচ এই পিএইচডির মধ্যে আজকাল কতো ভেজাল। আমি সংগীতের উপরে একটি পিএইচডি থিসিস পড়ে দেখেছি যে এটির গবেষকের ম্যাট্রিক পরীক্ষাটাও ঠিক মতন পাস করার যোগ্যতা নাই। এই মুহূর্তে পিএইচডি বিষয়টির বড়ই খারাপ অবস্থা চলছে দেশে। “�
ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে নানা ধরনের রসিকতা চালু আছে। যাঁদের ডিগ্রি অকৃত্রিম; পরিশ্রম, মেধা আর সময় বিনিয়োগের মাধ্যমে পাওয়া, তাঁরা আশা করি ক্ষমার চোখেই দেখবেনডক্টরেট ডিগ্রী নিয়ে নীচের এই রসিকতাকে।
গণ্ডমূর্খ ধনী ফরাসী জমিদার প্যারিস থেকে অনেকদিন বাদে গ্রামের বাড়িতে এসেছেন । নিজের প্রিয় ঘোড়ায় চেপে বেরিয়েছেন গ্রাম পরিদর্শনে । যেতে যেতে দেখেন গ্রামের এক প্রান্তে একটা বিরাট বাড়ি, তার সামনে বহু ছেলেমেয়ের ভীড় । দেখে কৌতুহল হ’ল । একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, এখানে কি হচ্ছে ? ছেলেটি বললে, এটা বিশ্ববিদ্যালয় । ৫oo ফ্রাঁ-এর বিনিময়ে পি এইচ ডি ডিগ্রি দেওয়া হয় । যারা হাতে বা পায়ের বড়ো আঙ্গলে কেবল মাত্র টিপ ছাপ দিতে পারে আর টাকাটা দিয়ে দেয় তাদের হাতে হাতে ডিগ্রি মেলে ।
উৎসাহী জমিদার তাই শুনে ভেতরে গেলেন । ৫oo ফ্রাঁ আর টিপ ছাপ দিয়ে একটা ডিগ্রি নিয়ে এলেন। বাড়ি ফেরার পথে হঠাৎ তাঁর মনে হোল ৫oo ফ্রাঁ ও পায়ের টিপ ছাপ দিয়ে তার প্রিয় ঘোড়াটিও তো ডক্টরেট হতে পারে । ডক্টরেট এর ঘোড়াও হবে ডক্টরেট মন্দ কি!না হয় ক’টা টাকাই গেলো।
যা ভাবা সেই কাজ। ফিরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে বললেন, এই নিন ৫oo ফ্রাঁ আমার ঘোড়ার নামে একটা ডিগ্নি লিখে দিন, ও পায়ের টিপ ছাপও দিয়ে দেবে।
উপাচার্য : সরি, আমরা শুধুমাত্র গাধাদের ডক্টরেট দিয়ে থাকি, ঘোড়াদের দিই না।
(চলবে)।