সন্ধান২৪.কমঃ নিউইয়র্কে মাদার সংগঠন হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির সুবর্ণ জয়ন্তী পালন উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে সোসাইটির সাবেক ও বর্তমান কর্মকতা,ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, লিখিত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের সাবেক, বর্তমান ও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনের মাঝ পথে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির একজন সদস্যের আপত্তিকর বক্তব্যের কারণে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে সোসাইটির কর্মকর্তারা ক্ষমা চাইলে উত্তপ্ত পরিবেশ শান্ত হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আতাউর রহমান সেলিম, মোহাম্মদ আলী, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ, ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ আজিজ,ডা ওয়াদুদ ভূইঁয়া,মহিউদ্দিন দেওয়ান প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রায় ২৭ হাজার নিবন্ধিত সদস্যের সর্ববৃহৎ প্রবাসী সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্ক। এ বছরের নভেম্বর মাসে গৌরবময় ৫০ বছরে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। অর্ধশতাব্দীর এই ঐতিহাসিক মাইলফলক উদযাপনকে কেন্দ্র করে আমরা হাতে নিয়েছি নানাবিধ কর্মসূচি ও উদ্যোগ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়,বাংলাদেশ সোসাইটি কেবল একটি সংগঠন নয় এটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঐক্যের প্রতীক, পরিবারের বন্ধন, এবং আমাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিচয়ের ভিত্তি। ১৯৭৫ সালে যাত্রা শুরু করা এই সংগঠন আজ অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে একটি স্বনির্ভর, প্রভাবশালী ও সেবামুখী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। আমরা কৃতজ্ঞ তাঁদের প্রতি যাঁরা এই সংগঠনকে গড়ে তুলেছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়,করোনা মহামারি থেকে শুরু করে যে কোন দুর্যোগ-দুর্বিপাকে প্রতিটি সদস্যের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ সোসাইটি প্রমাণ করেছে সদিচ্ছা ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য উদ্দেশ্য থাকলে তার বাস্তবায়ন সম্ভব। এর মাধ্যমে প্রবাসে থাকা সদস্যদের কল্যাণ ছাড়াও বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগেও পীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বার বার অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এই সংগঠন বিভিন্নভাবে প্রবাসীদের সেবা দিয়ে আসছে। প্রবাসীরাও এসব সেবায় উপকৃত হচ্ছেন। ভ্রাম্যমান কনস্যুলেট সার্ভিস, ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত তথ্যসেবা, প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বাংলা শিক্ষার জন্য বাংলা স্কুল স্থাপন যা কুইন্স এবং ব্রæকলিনে নিয়মিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এছাড়াও দৈনন্দিন নানান প্রয়োজনে বাংলাদেশ সোসাইটি পাশে দাঁড়িয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের। নিজস্ব কবরস্থানের মাধ্যমে সোসাইটি তার একটি বড় সামাজিক দায়িত্বে নিজেকে অন্তর্ভূক্ত করতে পেরেছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ৫০ বছরের এই দীর্ঘ যাত্রা উপলক্ষে যে সব কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে তা হলোঃ স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল,রক্তদান কর্মসূচি ও কমিউনিটি আলোচনা সভা।
আগামী ২ নভেম্বর নিউইয়র্কের বিখ্যাত কনভেনশন হল টেরেস অন দা পার্কে, অনুষ্ঠিত হবে সুবর্ণজয়ন্তীর মহা-উদযাপন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে এই অনন্য আয়োজন, যেখানে মিলিত হবে আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, আবেগ, কৃতজ্ঞতা ও ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি বলে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়।
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রাথমিক কর্মসূচিঃ ১. সাবেক কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। ২. যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রধান। ৩. বিশেষ আলোচনা সভা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য প্রদর্শনী। ৪. প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের বিশেষ পরিবেশনা ও সম্মাননা প্রদান। ৫. প্রবাস ও কমিউনিটিতে অবদান রাখা বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ সম্মাননা প্রদান। ৬. সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়,সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের অন্যতম প্রধান উদ্যোগ হলো একটি স্মারকগ্রন্থ (স্মরণিকা) প্রকাশনা। এতে লিপিবদ্ধ হবে বাংলাদেশ সোসাইটির জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত ইতিহাস, অভিজ্ঞতা, সংগ্রাম, সাফল্য, এবং প্রবাসীদের গল্প। লেখা দিতে আগ্রহীদের অবশ্যই আগামী ২১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের ইমেইলে আপনার মূল্যবান লেখাটি পাঠিয়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।