সন্ধান ২৪.কম:আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তিনি বিরতি চান। কারণ, খেলার জন্য যে ‘শারীরিক ও মানসিক’ অবস্থা দরকার, সেটি তার নেই। আফগানিস্তান সিরিজে নিজেকে তার একজন ‘প্যাসেঞ্জার’ বলে মনে হয়েছে।
তা ক্লান্ত যাত্রী বিশ্রামাগারে দুদণ্ড সময় কাটাতেই পারেন। সাকিব আল হাসান এরকম বিরতি আগেও নিয়েছেন। ভবিষ্যতেও নেবেন। এতে দোষের কিছু নেই। খেলোয়াড়রাও মানুষ। মেশিন নন।
সাকিবের ছুটি চাওয়ার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের তোপ, ‘আইপিএলে সুযোগ পেলে তখন কি সাকিব বলত, মানসিক ও শারীরিকভাবে খেলার অবস্থায় নেই?’ খুবই যৌক্তিক কথা।
ধারাবাহিকের তৃতীয় পর্বে বিসিবির পরিচালক ও টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের প্রতিক্রিয়া আরও ঝাঁঝাল, ‘সাকিব বিসিবির এমপ্লয়ি (চাকুরে)। কার জন্য খেলবে সে?’
জমজমাট চতুর্থ পর্ব দেখার আশায় ছিলেন যারা, তাদের জন্য দুঃসংবাদ-এই মেগা সিরিয়াল আপাতত শেষ! এত লম্ফঝম্ফ করে বিসিবি শেষ পর্যন্ত সাকিবকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দিয়েছে। বিসিবির ভাষায় ‘বিশ্রাম’। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, সাকিবের মানসিক ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাকে ক্রিকেট থেকে সাময়িক বিরতি দেওয়া হয়েছে। তার মানে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনটি ওডিআই
এবং দুটি টেস্টের কোনোটিতেই পাওয়া যাবে না সাকিবকে। ১২ মার্চ শুরু হয়ে সফর শেষ হবে ৮ এপ্রিল। সাকিবের ছুটি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।
বুধবার বিকালে বিসিবি সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে সংবাদমাধ্যমকে জালাল ইউনুস বলেন, ‘দুদিন হয়ে যাওয়ায় আজ (বুধবার) তাকে ফোন করেছিলাম। সে বলল, আমি এখনো মনে করি মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্রিকেট খেলার অবস্থায় নেই। সেজন্য সে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেতে চায় না। বোর্ড সভাপতির সঙ্গে এ নিয়ে আমি কথা বলেছি। সিইও এবং কয়েকজন পরিচালকও ছিলেন। সাকিবের ব্যক্তিগত চাওয়ার কথা চিন্তা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম দেওয়ার।’
রোববার দুবাইয়ে উড়াল দেওয়ার আগে সাকিব জানান, অবসন্ন্ন্নতায় ভোগার কথা জানান। যদিও তাকে রেখেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য টেস্ট ও ওয়ানডে দল ঘোষণা করা হয়। আগামী মে মাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে বাংলাদেশের দুই ম্যাচের হোম টেস্ট সিরিজ। জালাল ইউনুসের মতে, এই কারণে ছুটি ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। দুবাই থেকে আজ রাতে দেশে ফেরার কথা সাকিবের। ফেরার পর তার সঙ্গে আলোচনা করবে বিসিবি।
জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমরা চাই সাকিব সব ফরম্যাটেই খেলুক। তাকে চাপ দেওয়া ঠিক হবে না। তাই এ সিদ্ধান্ত।’
তবে বারবার সাকিবের এমন আচরণ ভালো উদাহরণ নয় বলে মনে করেন জালাল। বোর্ডে যারা আছেন তারা যা-ই মনে করুন না কেন, ভবিষ্যতেও এমন ঘটনা ঘটবে না, তার নিশ্চয়তা কে দিতে পারে।