সন্ধান২৪.কম: বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যে দূষণ ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতির চিত্র ভয়ংকর ভাবে উঠে এসেছে ।
খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত তিন ভাগের এক ভাগ শিশু মারা যাচ্ছে। শুধু খাদ্যবাহিত রোগে প্রতি বছর বিশ্বে ৬০ কোটি এবং বাংলাদেশে ৩ কোটি শিশু আক্রান্ত হয়- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে ।
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, খাবারে চার ধরনের দূষক থাকতে পারে। ভারী ধাতু, কীটনাশক-জীবনাশকের অবশিষ্টাংশ, তেজস্ক্রিয়তা ও জৈবদূষক। এ বছর ৮১৪টি নমুনা পরীক্ষায় অতিরিক্ত মাত্রায় পাওয়া গেছে সিসা বা সিসা ক্রোমেট। ইউনিসেফের এক জরিপে জানা গেছে, বাংলাদেশে সাড়ে ৩ কোটি শিশু সিসার সংক্রমণে আক্রান্ত। গবেষণায় ৫ শতাংশ গর্ভবতী নারীর দেহেও সিসার সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, কৃষি কর্মকর্তারা জানালেন হাঁস-মুরগির খামারগুলোতে অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে। মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হলে তা ৭ থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত থেকে যায়, ২৮ দিন পার হওয়ার আগেই মুরগিকে বাজারজাত করা হলে সেই মুরগির মাংসের মাধ্যমে মানবদেহে অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক ঢুকতে পারে।
খাদ্যে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি, এর প্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি মোকাবিলায় কার্যক্রম গ্রহণ এবং খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধের লক্ষ্যে গতকাল রবিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যুমনায় এক বৈঠক হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকে খাদ্যদূষণের ভয়াবহ এই চিত্র উঠে আসে।
দেশের খাদ্যপণ্যে দূষণ ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি নিয়ে বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। খাদ্যদূষণ প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমাতে জরুরি উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘খাদ্যে বিভিন্ন দূষণের অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা জানি; এটাকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সেই ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে। আমাদের সন্তান, বাবা-মা, আপনজন সবাই এর ভুক্তভোগী। নিজেদের স্বার্থেই আমাদের সবাইকে একসঙ্গে এই সংকট মোকাবিলায় কাজ করতে হবে। বাস্তবায়নের দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব কোনটি এখনই শুরু করা জরুরি। এ বিষয়ে জরুরি উদ্যোগগুলো আমরা তাত্ক্ষণিকভাবে নেব।’


