সাড়ে আট ঘন্টার বৈঠকের পর লাদাখ সংঘাত নিয়ে চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সর্বশেষ পর্যায়ের আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে বলে জানাল ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলোচনায় ভারতের দিক থেকে বাকি এলাকাগুলোয় সমস্যা মেটাতে গঠনমূলক প্রস্তাব দেওয়া হলেও চীন তাতে রাজি হয়নি, সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কোনও প্রস্তাবও দেয়নি। তাই অবশিষ্ট এলাকাগুলির সমস্যার সমাধান হয়নি বৈঠকে। তবে দুপক্ষই যোগাযোগ, কার্যক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে।
ভারত চীনের সঙ্গে ১৩ তম রাউন্ডের সামরিক আলোচনায় পূর্ব লাদাখের বাকি সংঘাতের কেন্দ্রগুলি থেকে দ্রুত সেনা সরানোর দাবি তুলেছিল। রবিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত বৈঠক হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, পূর্ব লাদাখের চুসুল-মোলডো সীমান্ত পয়েন্টে চীনের এলাকা নিয়ে কোর কম্যান্ডার পর্যায়ের আলোচনার একটা বড় দিক ছিল পেট্রলিং পয়েন্ট ১৫ (পিপি-১৫) বলে পরিচিত হট স্প্রিংঙ্গস এলাকায় থমকে থাকা বাহিনী প্রত্যাহার পর্ব সম্পূর্ণ করতে হবে।
শেষ দফার আলোচনার ফলে গোগরা (পিপি-১৭এ) থেকে বাহিনী সরানো হয়েছিল। তারপর গত দুমাস ধরে আলোচনা পর্ব চলছিল। গোগরার সমস্যা মেটার ফলে ৬টি সংঘাতের এলাকার চারটি থেকে ভারত, চীন পিছু হটে। বাকিগুলি হল গালোয়ান ও প্যাঙ্গং লেকের উত্তর ও দক্ষিণ পাড়। ডেপসাং, হট স্প্রিঙ্গসে সংঘাত অব্যাহত।
দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে গত বছর জুনে লাদাখের গালোয়ান নদী উপত্যকায় মারাত্মক সংঘর্ষের পর থেকেই উত্তেজনার অব্যাহত রয়েছে। ভারত বরাবর বলছে, ডেপসাং সহ সব সংঘাতের পয়েন্টগুলিতে বিরোধ মিটিয়ে নেওয়াটা দুদেশের সম্পর্কের সার্বিক অগ্রগতির জন্য আবশ্যিক।
গালোয়ান সংঘর্ষের পর দুই প্রতিবেশী দেশই হিমালয়ের বুকে উঁচু জায়গাগুলিতে হাজার হাজার বাড়তি সেনা মোতায়েন করেছে। তবে তারপর আলোচনার মাধ্যমে চারটি এলাকা থেকে ধীরে ধীরে সংঘাতের মাত্রা কমায় তারা। সংবেদনশীল সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর দুদেশেরই ৫০ থেকে ৬০ হাজার জওয়ান মোতায়েন রয়েছে।
সম্প্রতি উত্তরাখন্ডের বারাহোটি সেক্টর, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে ভারতীয় ভূখন্ডে সীমানা পেরিয়ে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে চীনের সেনা। এই দুটি ঘটনার প্রেক্ষাপটেই সাম্প্রতিক আলোচনা হচ্ছিল।
সেনাপ্রধান জেনারেল এমএম নরবনে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, চীনের সামরিক বাহিনী পূর্ব লাদাখে বিশাল বাহিনী রেখে দিলে ভারতীয় সেনাবাহিনী তার এলাকায় শক্তি বজায় রাখবে, পিএলএর মতোই সমান বাহিনী রেখে দেবে।