
এস.কে সরকার
নিউইয়র্ক সিটির আসন্ন এ নির্বাচনে যোহরান মামদানীর ধর্মভিত্তিক বক্তব্য ভোটারদের মধ্য দিন দিন বিভ্রান্তি বাড়াচ্ছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যোহরান প্রকৃত পক্ষে আসলে কার ? হিন্দু ,বৌদ্ধ, খ্রিস্টান না মুসলমানের ?
কারন তিনি যখন মুসলমান ভোটারদের সভা-সমাবেশে যাচ্ছেন, তখন তিনি নিজেকে মুসলমান হিসেবে দাবী করে ভোট চাচ্ছেন।
আবার এই মামদানীই যখন হিন্দুরের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন,তখন তিনি একজন সাচ্চা হিন্দু পরিবার সন্তান হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্যবোধ করছেন।
জানা যায়,এই ভাবে বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের নির্বাচনী সভায় গিয়ে নিজেকে বৌদ্ধ- খ্রিস্টানদের প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন।
মামদানীর এই রকম বক্তব্যকে অনেক ভোটার তাকে সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেছে। অনেকেই প্রশ্ন করছে মামদানী আসলে কার ?
মামদানী বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যেতেই পারেন। সেখানে গিয়ে ভোট চেয়ে বক্তব্য দিবেন,সেটি ঠিক আছে। কিন্ত ধর্মকে পূঁজি করে ভোট প্রার্থনা করলে সেটি হবে চরম অন্যায় ও অনৈতিক-একজন আলেম এমন মন্তব্য করেন।
একজন সচেতন ভোটার বলেন,‘মামদানী হিন্দুদের অনুষ্ঠানে গিয়ে ভারতের পাঞ্জাবের হিন্দু মা মিরা নায়ায়ের প্রসঙ্গ টেনে এনে হিন্দুদের ভোট চান । এবং মঙ্গলসুত্র হাতে বেঁধে নিজেকে হিন্দুবান্ধব প্রমাণ দেয়ার চেষ্টা করেন।
আবার হাতে মঙ্গলসুত্র বাঁধা মামদানী মুসলমানদের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ভারতের গুজরাটের মুসলমান বাবা মাহমুদ মামদানীর কথা বলে ভোট প্রার্থনা করেন। যা আমার কাছে স্ববিরোধী বলে মনে হয়।’
এভাবেই যোহরানের মুসলিম ভোট ব্যাংকের মত হিন্দু ভোটারের মধ্যেও বিভাজন সৃষ্টির প্রয়াস পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন,মামদানী হিন্দু-মুসলমান, মসজিদ- মন্দির ধূয়া তুলে ভোটারদের মাতিয়ে রাখতে চাইবে। তিনি বলেন,শুরু থেকেই মামদানী হিন্দু-মুসলিম ইস্যু তুলে ধর্ম নামক ব্যাধির সংক্রমণ বিস্তার করছেন। এতে করে বাঙালি কমিউনিটিতে প্রবলভাবে ধর্মীয় বিভেদ ও দুরত্ব বাড়ার সম্ভবনা দেখা দিতে পারে।
নির্বাচনী ইতশেহারে জোহরান মামদানির পতিতা ব্যবসাকে সমর্থন দেয়ার বিষয়টি ইসলাম বিরোধী, ইসলাম ধর্ম প্রষ্টিটিউটকে ( বারবনিতা ) কোন দিন অনুমোদন করে না। এন্ড্রু কুমোর একটি নির্বাচনী সভায় একজন আলেম তার বক্তব্যে এমন কথা বলেন।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, নিউইয়র্ক সিটিতে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধরা সমান অধিকার নিয়ে বসবাস করছে। ধর্মীয় এই সম্প্রীতির ধারা কোন ভাবেই ধংস হতে দেয়া যাবে না। জোহরান মামদানি তার বক্তব্যে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করছেন।
ফাহাদ সোলায়মান বলেন, জোহরান মামদানি চার বছর ধরে স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও নিজেকে মুসলমান হিসেবে কখনো তুলে ধরেননি, এখন কেবল ভোটের জন্য কমিউনিটিকে কাছে টানার চেষ্টা করছেন।
নিউইয়র্ক সিটির রেজিস্টার্ড ভোটারের মধ্যে দু’লাখের মত মুসলমান রয়েছেন। দক্ষিণ এশিয়ান হিসেবে ৩ লাখের বেশী।নির্বাচনে মামদানীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো।
উল্লেখ্য, যোহরানের বাবা মাহমুদ মামদানী ভারতের গুজরাটের মুসলমান এবং মা হলেন পাঞ্জাবের হিন্দু মিরা নায়ার। এই দম্পতি উগান্ডায় বসবাসের সময় যোহরানের জন্ম।