৪০০ বছর আগের পানাম নগর দেখতে দেশের প্রথম ভার্চুয়াল মিউজিয়াম

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আহমেদ জামান সঞ্জীব ও তাঁর স্ত্রী ইয়ামিন রত্না যান পানাম নগর দেখতে। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো পানাম নগরে এখনো মঠবাড়ি, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্য কুঠি, পোদ্দারবাড়ি, কাশীনাথের বাড়ি, আর ছোট-বড় ৫২টি ভবন ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এর মধ্যে ১০টি ভবন প্রায় বিলুপ্তির পথে। বেশির ভাগ ভবনের কক্ষের ইট-পলেস্তারা খসে পড়েছে, কারুকাজগুলোও নষ্ট হওয়ার দশা।

দেখে কষ্ট লেগেছিল সঞ্জীব ও তাঁর স্ত্রীর। এভাবে চলতে থাকলে একসময় নতুন প্রজন্ম হয়তো আর এই নান্দনিক স্থাপনা দেখতে পাবে না।

সঞ্জীব ভাবতে থাকেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের এই ঐতিহ্যটা কিভাবে তুলে ধরা যায়। সেই ভাবনা থেকেই এটাকে ডিজিটালি সংরক্ষণ করার কথা মাথায় এলো। সঞ্জীবের স্বপ্নের সারথি হন আরো কয়েকজন তরুণ। আশেক ই ইলাহি তাঁদের একজন। সঞ্জীব, রত্না ও আশেক—তিনজনে মিলে পুরো প্রকল্পের নকশা সাজাতে থাকেন। শুরুতেই তাঁরা বেছে নেন ষাটগম্বুজ মসজিদ। ২০১৭ সালেই তিন বন্ধু মিলে চলে যান বাগেরহাট। সঙ্গে নেন দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা। টানা দুই দিন প্রায় সাড়ে তিন হাজার ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন তাঁরা।

আইফোন রিফারবিশড কি না বুঝবেন যেভাবেআইফোন রিফারবিশড কি না বুঝবেন যেভাবে
এখন পর্যন্ত পানাম নগর, শিবমন্দির, ষাটগম্বুজ মসজিদ, ছোট সোনামসজিদসহ ছয়টি স্থাপনাকে ভার্চুয়ালি নিয়ে এসেছে সঞ্জীবের দল। এর মধ্যে পানাম নগরের পুরো কাজ শেষ করতে লেগে যায় প্রায় তিন বছর। সঞ্জীব জানালেন, ভবিষ্যতে চার ডজনের বেশি স্থাপনা যুক্ত হবে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির পর্দায়। পরে এই স্থাপনাগুলো নিয়ে ভিডিও গেম বানানোর পরিকল্পনা আছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে ভার্চুয়াল মিউজিয়ামের বেটা ভার্সন। এরপর যে কেউ চাইলে http://www.virtualmuseumbd.com ওয়েবসাইটে ঢুঁ মেরে দেখে আসতে পারবে সঞ্জীবের দলের বিচিত্র সব কাজ। ভিআর প্রযুক্তি এখনো সহজলভ্য নয় দেশে। তা ছাড়া সামর্থ্যের ব্যাপারও আছে।

আশেক ই ইলাহি বলেন, ‘স্কুলে স্কুলে গিয়ে ভার্চুয়াল এই জাদুঘরকে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই আমরা। যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন শিশুও যেন ভার্চুয়াল রিয়ালিটির পর্দায় দেখতে পারে আমাদের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো।

Exit mobile version