বিদেশের মাটিতে কী ঘটিয়ে চলেছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকরা? একশ্রেনীর কূটনীতিকের আচার-আচরণ, অনৈতিকতা ও দলবাজি ভুলুণ্ঠিত করছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। অধিকাংশ পেশাদার কূটনীতিক তাদের পেশার মর্যাদা সমুন্নত রেখে দায়িত্ব পালন করলেও একশ্রেনির কূটনীতিক নামধারী চুনকালি মাখিয়ে দিচ্ছে প্রবাসীদের মুখে। দুর্নীতি, অনিয়ম, ক্ষমতার দাপটে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছেন।
অতি সম্প্রতি কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের অপেশাদার আচরণ সম্পর্কে যেসব খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা অত্যন্ত দু:খজনক। জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অব মিশন কাজী আনারকলির বাড়িতে মারিজুয়ানা পাওয়ার অভিযোগে ওই দেশের সরকারের অনুরোধে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। জানা গেছে আনারকলির দক্ষিণ জাকার্তার বাসায় ইন্দোনেশিয়া সরকারের মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গত ৫ই জুলাই আচমকা অভিযান চালায়।
ওই অ্যাপার্টমেন্ট টাওয়ারে নিষিদ্ধ মাদক মারিজুয়ানা রক্ষিত আছে- এমন অভিযোগে চলে অভিযান। পররাষ্ট্র ক্যাডারের ২০ ব্যাচের কর্মকর্তা কাজী আনারকলি একজন নাইজেরিয়ানের সঙ্গে বাসা শেয়ার করতেন। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী কূটনীতিক আনারকলি দায়মুক্তির আওতাধীন থাকলেও ইন্দোনেশিয়ান মাদক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ সেটি উপেক্ষা করেই বাসায় অভিযান চালায় এবং তাকে আটক করে নিয়ে যায়। অবশ্য কয়েক ঘণ্টা পর দূতাবাসের জিম্মায় ছাড়া পান তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনাটি জানার পরপর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। জারি করে তার দেশে ফেরার আদেশ।
উল্লেখ্য, গৃহকর্মী নিখোঁজের দায়ে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনুরোধে কাজী আনারকলিকে লস অ্যানজেলেস কনস্যুলেট থেকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল সরকার। সেসময় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে তাকে জাকার্তায় জরুরি পদায়ন করা হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়ার ভিসা পাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি বাধ্য হয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে।
এদিকে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ডাঃ খলিলুর রহমান একজন প্রবাসী বাংলাদেশীর দ্বারা প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। রাজধানী অটোয়ায় গত ১৭ জুলাই স্থানীয় একটি পার্কে পিকনিকে এ ঘটনা ঘটে। পিকনিক চলাকালে একই হাই কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা প্রবাসী ইউসুফ হারুন তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট না পাওয়ার জন্য দোষারোপ করেন হাইকমিশনারকে।
দীর্ঘ ৬ মাসেও পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় তিনি তার অসুস্থ পিতা-মাতাকে দেখতে দেশে যেতে পারছেন না। পিকনিকের আয়োজকেরা পুলিশ ডেকে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনেন। কানাডার সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশীদের অভিযোগ হাইকমিশনার ডাঃ খলিলুর রহমান একজন অতিশয় স্বেচ্ছাচারী ও দলবাজ কূটনীতিক। জানা গেছে পাসপোর্টের আবেদনকারীদেরকে ফরমে তাদের স্যোসাল মিডিয়ার আইডি নাম্বার উল্লেখের বিধান জুড়ে দিয়েছেন তিনি। যাতে সরকােেরর সমালোচকদেরকে সহজে চিহ্নিত করা যায়। এভাবে সরকার বিরোধীদের তিনি শায়েস্থা করছেন পাসপোর্ট আটকে দিয়ে। হাইকমিশনারের উপর হামলাকারী এমনি একজন ভূক্তভোগী।
১৯৮৮ সালে পররাষ্ট্র বিভাগের চাকুরীতে যোগদানকারী ডাঃ খলিলুর রহমান এর বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনের অভিযোগও রয়েছে বলে জানা গেছে। ৯২-৯৩ সালে দিল্লী হাইকমিশনে কাউন্সিলর হিসেবে নিযুক্ত থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর অভিযোগ উঠে। এমতাবস্থায় কুটনীতিকের চাকুরি ছেড়ে লিয়েনে তিনি যোগ দেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায়। দীর্ঘ ১৯ বছর পর পুনরায় তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফিরে যান তার পররাষ্ট্র সচিব বন্ধুর সহযোগিতায়। বাগিয়ে নেন কানাডার মত দেশে হাই কমিশনারের পদ।
গত জানুয়ারি মাসে কলকাতার উপহাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারী মোঃ সানিউল কাদেরের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যৌন বিষয়ক টেক্সট বিনিময়ের অভিযোগে তাকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে নিউইয়র্কে ডেপুটি কনসাল জেনারেল শাহেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ আদালতে গড়িয়েছিল। গৃহস্থালী কাজে জন্য নিয়ে আসা ব্যক্তির সঙ্গে অসদাচরণ, অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত খাটিয়ে বেতন পরিশোধ না করার অভিযোগে মামলা হয়েছিল এক কনসাল জেনারেলের বিরুদ্ধে। নিউইয়র্কের সাবেক এক কনসাল জেনারেল স্থানীয় এক সুপারমার্কেট থেকে বাকিতে কেনাকাটা করে বকেয়া পরিশোধ না করেই দেশে ফিরে যান। পরবর্তীতে নানা অনিয়ম দুর্নীতির কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে দুদক। সম্প্রতি একই কনস্যুলেটের এক কর্মকর্তা করোনাকালে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে এখন নির্বিঘ্নে বসবাস করছেন কানেকটিকাটে।
বছরের পর বছর ধরে দেশে দেশে, বিশেষ করে যেসব দেশে শ্রমিক হিসেবে সহজ-সরল বাংলাদেশীরা যান, তাদের প্রতি বাংলাদেশী কূটনীতিকদের দুর্ব্যবহার এবং কেউ বিপদে পড়লে সহায়তা দান না করার বহু অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন দূতাবাসে মারপিট এবং ভাংচুরের ঘটনাও ঘটছে প্রায়শ। কিন্তু এখন বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্বকারী রাষ্ট্রের ‘হোয়াইট কলার’ এর দূতদের একটি অংশ তাদের আচরণ দিয়ে প্রমাণ করছেন যে তারা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্য নন। বরং তারা দেশকে কলঙ্কিত করছেন নানাভাবে।
কূটনীতিকরা বিদেশে কী করবেন সে সম্পর্কিত পেশাগত দায়িত্ব পালনের শিক্ষা দেয়া ছাড়াও আদব- কায়দা, বিনয়, শিষ্টাচার বিষয়ে তাদের বিশেষ তালিম দেওয়া হয়। বিদেশে পোস্টিংয়ের আগে থাকে ওরিয়েন্টেশন। তাদের হাঁটা-চলা, কথা-বার্তাসহ যাবতীয় আচরণে যেন বিদেশে ফুটে ওঠে বাংলাদেশের রূপ-সৌন্দর্য। কিন্তু আদতে কী করছেন তারা? অনেকের কাজে প্রমাণ হচ্ছে না যে তারা দেশের স্বার্থ সুরক্ষা নয়, যাবতীয় কাজ করছেন ব্যক্তিগত স্বার্থে। তাছাড়া বর্তমান সরকারের আমলে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় দূতাবাসগুলো ও কূটনীতিকদের দলীয়করণ করে তাদেরকে দেশ ও জনস্বার্থ বিরোধী কাজে লাগানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে নিউইয়র্কে কনস্যুলেট জেনারেল এর সাবেক কনসাল জেনারেলের বিরুদ্ধে গৃহকর্মীর মামলা, মানব পাচারের অভিযোগে ডেপুটি কনসাল জেনারেলের বিরুদ্ধে ও ইউএনডিপি’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগে আদালতে মামলা, গ্রেফতার এবং অবশেষে জামিনসহ পরবর্তী ঘটনাবলি দেশ, জনগণ ও সরকারের জন্য চরম অপমানের। এ ধরনের গ্রেফতার দেশের জন্য সর্বনাশের। আর পররাষ্ট্র ক্যাডারের ভাবমূর্তিতেও প্রচণ্ড চপেটাঘাত। বিদেশে কর্মরত কূটনীতিকরা শুধু চাকরি করেন না, তারা সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধি। তাদের যাবতীয় কর্মকাণ্ড ও আচরণ দেশের মান-মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে জড়িত। যখনই কোনো কূটনীতিকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ওঠে, তারা আত্মপক্ষ সমর্থনে বলেন, অভিযোগ বানোয়াট, ডাহা মিথ্যা। হতে পারে তাদের যুক্তি সঠিক।
শুধু যে পেশাদার কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত আচরণের অভিযোগ ওঠে তা নয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্তদের আচরণ আরও আপত্তিকর। তারা কূটনীতিক হিসেবে নিয়োগ পেলে ধরাকে সরা বিবেচনা করেন। যেমনটি করেছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেপালে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত, হিন্দু মুসলিম ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক। নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ঘটিয়ে এসেছেন গা শিউরে ওঠা যত কাণ্ডকীর্তি। নেপালে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পেয়েই তিনি শুরু করেন অপকর্ম।
দায়িত্ব পালনের সময় নারী কেলেঙ্কারি, মোটরসাইকেলে ড্যান্স বারে বেসামাল যাতায়াত, নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানো, নিজের গাড়িতে ভারতীয় পতাকা লাগিয়ে ঘুরে বেড়ানো, ভিসার জন্য ঘুষ, শিক্ষাবৃত্তি কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে নৈতিক স্খলনের যাবতীয় ক্রিয়াকর্মের আর কিছু বাকি রাখেননি। উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় আসা নেপালি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়, ভারতীয় নারী কূটনীতিকের পেছনে লাগা, লং ড্রাইভে যাওয়ার প্রস্তাব দেওয়া, তার বাসভবনে গিয়ে ওঠা, অভিনেত্রী মনীষা কৈরালার সঙ্গেও অসংযত আচরণ এগুলো কি সুস্থ মানুষের কাজ ছিল? দূতাবাসের কর্মীদের জন্য বরাদ্দ করা ১০ হাজার ডলারের গাড়ি মাত্র তিন হাজার ডলারে বিক্রি করে দিয়েছিলেন তিনি। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে নেপাল সরকার বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছিল নিম চন্দ্র ভৌমিককে কাঠমান্ডু থেকে প্রত্যাহার করিয়ে নিতে।
জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন পেশাদার কূটনীতিক এ কে এম মজিবুর রহমান ভূঁইয়া। তাঁর বিরুদ্ধেও উঠেছিল নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ। জাপানি মেয়ে কিয়োকো তাকাহাসির অভিযোগ ছিল রাষ্ট্রদূতের সোস্যাল সেক্রেটারি হিসেবে যোগদানের প্রথম দিনেই রাষ্ট্রদূত তার রুমে ডেকে নিয়ে জাপটে ধরে তাকে চুম্বন করেন। তাকাহাসিকে তিনি বুঝিয়েছিলেন ঢাকায় এমনই হয়। এটাই বাংলাদেশের সংস্কৃতি। তিনি তাকাহাসির সঙ্গে আরও কিছু করার চেষ্টা করেন। রাষ্ট্রদূতের মতলব বুঝতে পেরে এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করেন তাকাহাসি।
বিভিন্ন সময় কূটনীতিকদের এ ধরনের কেলেঙ্কারির কিছু কিছু তদন্তের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগেরই ফলাফল শূন্য। আলোর মুখ দেখেনি তদন্ত প্রতিবেদন। কখনো তদন্ত প্রতিবেদন ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। কখনো আড়াল করা হয়েছে তদন্তে অভিযুক্ত কূটনীতিকের অপকর্ম। অপরাধকে ‘ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি’তে দেখার সুপারিশও করা হয়েছে। এতে তারা ধরেই নেন শেষতক কিচ্ছু হবে না। তারা সবকিছুর উর্ধ্বে রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়মুক্ত। যা ইচ্ছা করা যাবে এমন একটা মনোবল ও নিশ্চয়তা নিয়েই তারা পোস্টিংয়ে যান দেশে দেশে।
কূটনীতিক বা মিশন কর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের তালিকা বেশ দীর্ঘ। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়ার তালিকা নেহায়েতই ছোট। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন রাষ্ট্রদূত মুজিবুর রহমান, আশরাফ উদ্দীন ও মারুফ জামান। দুদকে মামলা হয়েছে রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা ও এ টি এম নাজিম উল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। অর্থ আত্মসাতের দায়ে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ টি এম নাজিম উল্লাহ চৌধুরীকে। কিন্তু তিনি চম্পট দিয়েছেন। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। কুয়েতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত একজন সংসদ সদস্যের অবৈধ অর্থ হালাল করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন।
পররাষ্ট্র ক্যাডারে চাকরি গৌরবের। বিদেশে দূতাবাস বা মিশনে চাকরি পাওয়া আরও গৌরবের। মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভিতর লুকিয়ে রাখা পরম মমতায় লালিত স্বপ্ন এ ক্যাডারটি। কিন্তু বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস বা মিশনে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের বেশির ভাগেরই এর ওজন বোঝার মুরোদ নেই। যেখানে তাদের মূল দায়িত্ব বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা, সেখানে তারা করেন একেবারে উল্টোটা। দলবাজি এবং সুযোগ পেয়ে ভোগ-উপভোগই তাদের কাছে মুখ্য। যার সরাসরি শিকার প্রবাসীরা। বেশির ভাগ মিশনের ওপরই প্রবাসীরা বিরক্ত। বহু অভিযোগ প্রবাসীদের। বেশির ভাগ মিশনে টাকা ছাড়া প্রবাসীদের কোনো কাজই করে দেওয়া হয় না। তারা বিদেশে বিপদে পড়লে মিশনগুলোকে পাশে পায় না। বরং এ সুযোগে বিপদের সঙ্গে কিছু বাড়তি আপদ যোগে প্রবাসীদের হয়রান করেন মিশন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। করেন উপরি কামাই।
উল্লেখ্য বহির্বিশ্বে বর্তমানে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন কার্যকর রয়েছে। তন্মধ্যে দূতাবাস ও হাইকমিশন আছে ৫৯টি দেশে। কনস্যূলেট জেনারেল, কনস্যুলেট ডেপুটি হাইকমিশন রয়েছে ২০টি। এছাড়া নিউইয়র্ক এবং জেনেভাতে জাতিসংঘের দুটি দফতরে আছে স্থায়ী দু’টি মিশন। মোটা দাগে কূটনীতিকদের কাজ হলো দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন। দেশের সাথে বিদ্যমান পারস্পরিক সম্পর্কের অধিকতর উন্নয়ন। প্রাত্যহিক কর্মকান্ড ও পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত রিপোর্ট নিজ দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা। সংশ্লিষ্ট দেশে বসবাস কিংবা কর্মরতদের পাসপোর্ট, ভিসা ও ভ্রমণ সংক্রান্ত সার্বিক সহায়তা প্রদান করা। এছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণ এবং সেখানে ব্যবসায় বাণিজ্যে ইচ্ছুক বিদেশীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কনস্যূলার সার্ভিস প্রদান করা। বাংলাদেশের প্রতি বিদেশীদের মাঝে আবহ সৃষ্ট মিডিয়া ও প্রচারণার কাজও করতে হয় কূটনীতিকদেরকে।