সন্ধান২৪.কম ডেস্কঃ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের স্ত্রীর গুলশান আরা মিয়ার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ার অভিযোগে মামলার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। একই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়েছেন কমিশনের পরিচালক মো. আক্তার হোসেন।মহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা ছাড়াও আবদুস সোবহান মিয়ার (গোলাপ) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে নয়টি ফ্ল্যাট-বাড়ি ক্রয়সহ ৬৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদক জানায়, মো. আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপ সংসদ সদস্য হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্স-এ ৯টি ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিক হয়েছেন। যার মূল্যমান বাংলাদেশি টাকায় ৩২ কোটি টাকা। তার ৩২ কোটি ৩৪ লাখ ২৭ হাজার ৯৬০ টাকার স্থাবর এবং ৩৭ কোটি ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭ টাকার অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে মোট ৬৯ কোটি ৭৬ লাখ ৭৯ হাজার ২৯৪ টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ১ কোটি ৪৪ লাখ ৩ হাজার ৬২৯ টাকা। যা বিবেচনায় নিয়ে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ পাওয়া গেছে ৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৫ টাকা।
গোলাপের স্ত্রীর গুলশান আরা মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের পরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেন, গুলশান আরার সম্পদের উৎস ও যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য গেল ১৫ এপ্রিল তাকে সম্পদ বিবরণী জমা দিতে বলা হয়। ২৩ জুলাই তিনি সময় বাড়ানোর আবেদন করলে দুদক তাকে আরও ১৫ কার্যদিবস সময় দেয়। সে অনুযায়ী ২১ আগস্ট পর্যন্ত জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। তবে তিনি সম্পদ বিবরণী জমা দেননি।
দুদকের মহাপরিচালক বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা না দেওয়ায় তার (শুলশান আরা) বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন করা হয়েছে।”
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গত বছরের ২৫ অগাস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আবদুস সোবহান গোলাপকে ঢাকার নাখালপাড়া থেকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেয় পুলিশ।
চলতি বছরের ১৯ মার্চ ‘শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে গোলাপের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, তিনি ৬৮ কোটি ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৫ টাকার জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ সম্পদ দখলে রেখেছেন। এছাড়া তার নিজ নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৫১টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ৯৭ কোটি টাকার ‘অস্বাভাবিক লেনদেন’ হয়েছে।
তার আগে, গত ১৯ জানুয়ারি আদালত গোলাপ, তার স্ত্রী গুলশান আরা, ছেলে ইভান সোবহান মিয়া এবং মেয়ে আনিশা গোলাপ মিয়ার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেয়।