সন্ধান২৪.কম ডেস্ক: নিউ ইয়র্কে আয়োজিত সভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, ধর্মস্থান এবং ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের উপর হামলারও নিন্দা করেছেন হাসিনা। তাঁর অভিযোগ, অন্তর্র্বতী সরকারের মদতেই চলছে হিংসা।
ভারতের মাটি থেকে আমেরিকার নিউইয়র্কে বিজয়ের মাস উপলক্ষে ১ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে ভারত থেকে ভার্চুয়ালে বক্তব্যে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির আলোকপাত করেন এবং প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। ওজোনপার্কে লাবন্য পার্টি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে টেলিফোনে এই বক্তব্যের সমন্বয় করেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী। সুত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
ভার্চুয়াল বক্তৃতায় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতী সরকারকে দুষেছেন তিনি। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর মন্তব্য, ‘‘ইউনূসের পরিকল্পনাতে গণহত্যা চলছে বাংলাদেশে।
নিউ ইয়র্কের ওই সভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, ধর্মস্থান এবং ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের উপর হামলারও নিন্দা করেছেন হাসিনা। তিনি বলেন,‘‘আজ আমার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছ। কিন্তু বাস্তবে মুহাম্মদ ইউনূসই ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে একটি সুনিপুণ পরিকল্পনার মাধ্যমে গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছেন। তাঁরাই মাস্টারমাইন্ড। এমনকি, তারেক রহমান (প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তথা বিএনপি নেতা) লন্ডন থেকে বলেছেন যে, যদি মৃত্যু চলতেই থাকে, তা হলে সরকার টিকে থাকবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে তৈরি হওয়া জনবিক্ষোভের জেরে গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশত্যাগ করেছিলেন হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন। গত মাসে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পরেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মুজিবুর রহমানের কন্যা। মঙ্গলবার কার্যত ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়েই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চলছে। কেন আক্রান্ত হচ্ছে মন্দির, গির্জা?’’
সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ঢাকা ছেড়ে দিল্লি যাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন হাসিনা, তিনি বলেন, ‘‘আমি গণহত্যা চাইনি। আমি যদি ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকতে চাইতাম, তা হলে গণহত্যা হত। যখন নির্বিচারে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, তখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমার চলে যাওয়া উচিত। আমাকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমার নিরাপত্তারক্ষীরা তা ঠেকাতে যদি গুলি চালাতেন তবে গণভবনে বহু মানুষের মৃত্যু হত। আমি তা চাইনি।’’
কোটাসংস্কার আন্দোলনে পতিত এই প্রধানমন্ত্রী যুবসমাজের উদ্দেশ্যে বলেন যে, তারা যেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার চেষ্টা করে। কত ত্যাগের মধ্যদিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা জানা উচিত। প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি অর্জনে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং আমার এই বক্তব্য সর্বত্র প্রচার করতে পারবেন-সে অনুমতিও দিয়ে রাখলাম।
আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগনের সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুইন্স ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার ড. দীলিপ নাথ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ড.প্রদীপ কর, সামাদ আজাদ, ডা. মাসুদুল হাসান, শরাফ সরকার, মমতাজ শাহনাজ, জয়নাল আবেদীন, হাজী এনাম, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী প্রমূখ।
আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন নূরল আমিন বাবু, আশরাফুজ্জামান, সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, রফিকুর রহমান রফিক, এমদাদ ভূইয়া রাজু, মোর্শেদা জামান, মোতাসিম বিল্লাহ দুলাল, নূরল ইসলাম সেন্টু, গাজী লিটন, আব্দুল হামিদ, মাহমুদ হাসান, সোহেল মোহাম্মদ প্রমুখ।