সন্ধান২৪.কম: নিউইয়র্কের শহরটিতেই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বাড়ি। তাই দেশ সেরা এই অলরাউন্ডারের আমন্ত্রণে তার বাসায় যান ক্রিকেটাররা। সেখানেই টাইগারদের আপ্যায়ন করেন সাকিব-শিশির। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে সেই মুহূর্তের কয়েকটি ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। তবে শুধু ক্রিকেটাররা নয়, দলের কোচরাও গিয়েছিলেন সাকিবের বাসায় নৈশভোজে। সাকিবের বাসায় অনুষ্ঠান নিয়ে নিউইয়র্কসহ বাংলাদেশে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ভারতের সাথে খেলার আগের দিন এ ধরণের অনুষ্ঠানে খোলোয়ারদের অংশ নেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত হয়েছে, তা নিয়ে চলছে বিতর্ক।
২ জুন সকালে ডালাস স্টেডিয়ামে সহ-আয়োজন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের। এই টুর্নামেন্টটিতে অংশ নিতে টাইগারদের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রে। আসরটিতে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম ম্যাচ আগামী ৮ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। মূল পর্বের আগে টাইগাররা গতকাল রাতে ভারতের বিপক্ষে মুখোমুখি হয়েছিল শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে।
ভারতের বিপক্ষে গা গরমের এই ম্যাচটি ছিল নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
গত পরশু শুক্রবার প্রকাশিত হওয়া বিসিবির ধারাবাহিক আয়োজন ‘দ্য গ্রিন রেড স্টোরির’ পর্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান। সেখানে এক প্রশ্ন ছিল ‘অনেকেই বলেছেন যুক্তরাষ্ট্র সাকিবের ‘সেকেন্ড হোম’ (দ্বিতীয় বাড়ি)। হোম অ্যাডভান্টেজ (ঘরের সুবিধা) কি পাবে দল?’ জবাবে সাকিবও মেনে নিয়েছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্র তার দ্বিতীয় বাড়ি। কেননা দেশটিতে বেশ কয়েক বছর আগেই ঘাঁটি গেড়েছেন সাকিব পুরো পরিবারসহ। যদিও সাকিব ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বেশির ভাগ সময়ই অবস্থান করেন বাংলাদেশে। তবে তার স্ত্রী ও সন্তানদের বসবাস যুক্তরাষ্ট্রেই। এছাড়া ছুটি পেলে সাকিবও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রেই।
এদিকে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এক ঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার নিয়ে দল সাজিয়েছে টাইগাররা। যদিও গেল এক বছর ধরে এরাই এই ফরম্যাটে নিয়মিত মুখ। আর ফলাফলও আসছিল ভালো। তবে সম্প্রতি দলের পারফরম্যান্স খানিকটা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে ব্যাটিং ও ফিল্ডিং লাইন আপ। বিশ্বকাপের জন্য দেশ ছাড়ার আগে ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫ ম্যাচ সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ।
তবে ব্যাটারদের পারফরম্যান্স ছিল হতশ্রী। বিষয়টা আরও পরিষ্কার হয় গেল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ দিয়ে। স্বাগতিক দেশটির বিপক্ষে কোনো রকম প্রতিরোধই গড়তে পারেনি প্রথম দুই ম্যাচে তাতেই ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পেয়েছিল ১০ উইকেটের ব্যবধানে। তাতে খানিকটা আশা দেখালেও ব্যাটাররা আলো ছড়াতে না পারলে শূন্য হাতেই ফিরতে হবে টাইগারদের।
আইসিসির ইতিহাসে এবারই প্রথম ২০ দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছে। আসরটি গড়াবে দুটি দেশের। যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে। বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের ৪টি ম্যাচ খেলবে দুটি দেশে। প্রথম দুটি ম্যাচ খেলবে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস ও নিউ ইয়র্কে। যেখানে টাইগারদের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী দুই দল শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এছাড়া গ্রুপ পর্বের শেষ দুটি ম্যাচ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্ট ও ফ্লোরিডায় মাঠে নামবে শান্তরা।
এই দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাবে নেদারল্যান্ডসও নেপালকে। তুলনামূলক কম শক্তির দল হলেও একেবারেই খাটো করে দেখার সুযোগ নাই এদের। কেননা গেল বছর ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। এছাড়া বর্তমান নেপালেরও সামর্থ্য রয়েছে বাংলাদেশকে ভয় ধরানোর। তার সঙ্গে তো রয়েছেই ভ্রমণ ক্লান্তিও। বলতে গেলে এই টুর্নামেন্টের পরের পর্বে যেতে হলে টাইগারদের বেশ চ্যালেঞ্জ পাড়ি দিয়েই যেতে হবে। আর যদি তা করতে পারে শান্তরা। তাহলে এবারের আসরই হবে টাইগারদের সেরা অর্জনের আসর।