সন্ধান২৪.কম : বাচিক শিল্পী জি এইচ আরজুর একক আবৃত্তি অনুষ্ঠানে শব্দের ঝরনা ধারায় নিমজ্জিত হয়েছিলেন শ্রোতারা। কখনো কখনো ধ্যানমগ্ন আরজুুর কবিতার শব্দাবলী শুনতে শুনতে উপস্থিত সুধীজনরা স্বপ্নঘোরের উৎসভূমে জেগে ছিল।

গত ১৭ জুন কুইন্সের পিএস ১২ মিলনায়ত পরিপূূর্ণ দর্শক -শ্রোতারা তন্ময় হয়ে শুনছিলেন আরজুর যাদুকরী কন্ঠের আবৃত্তি।
ভাস্কর আখতার আহমেদ রাশা’র মঞ্চ সজ্জা, সাবিনা নীহার নীরুর জলের মত সহজ-সরল উপস্থাপনা, সুপ্রিয়া চৌধুরীর গানের কন্ঠ, সব মিলে বৃষ্টি ভেজা সন্ধাটি ছিল সুন্দর।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা ও স্মরণে বেনজির সিকদারের কবিতা “পিতা” দিয়ে কবিতা সন্ধা শুরু হয়। এরপর সুপ্রিয়া চৌধুরীর কণ্ঠে উচ্চারিত হয় ‘বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়’-গানটি।

জি এইচ আরজু আবৃত্তি করেন তাজুল ইমাম, তমিজউদ্দিন লোদী, কাজী আতিক, শামস আল মোমিন, মনজুর কাদের, খালেদ শরফুদ্দিন, মৃদুল আহমেদ, সোনিয়া কাদের, আনোয়ার সেলিম, মিশুক সেলিম, বেনজির শিকদার, আহমেদ ছহুল এবং মামুন জামিল এর কবিতা। এরই মাঝে সুপ্রিয়া চৌধুরী গান করেন ‘ও তোতাপাখিরে, শিকল খুলে উড়িয়ে দিব মাকে যদি এনে দাও, ঘুমিয়ে ছিলাম মায়ের কোলে কখন যে মা গেল চলে’ সহ আরো কয়েকটি গান।
জি এইচ আরজুর আবেগঘন কণ্ঠে সবার শেষের কবিতাটি ছিল এইচ বি রিতার লেখা ‘অচিন্ত্য’।

নিউইয়র্কের ১৪ জন কবি ও ছড়াকারের রচনায় নির্মিত হয়েছিল ‘পরশী কাব্য’ শীর্ষক আয়োজনটি।
তবলায় পিনাকপানি গোস্বামী, কিবোর্ডে মাসুদুর রহমান, মন্দিরায় আশিষ চৌধুরী এবং বাঁশিতে ছিলেন সৌগত সরকার হিল্লোল। নিবীড়ের শব্দ ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাবিনা নীহার নীরু।
শরীরের সমস্ত অর্গান ডোনেট করা জি এইচ আরজু বলেন, “আমি চাই আমার দেহটা শুয়ে থাকুক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কোনোএক টেবিলে, আর প্রজন্মের সন্তানেরা চারপাশ ঘুরে ঘুরে আলোকিত করুক চিকিৎসা বিজ্ঞান।”
দর্শক-শ্রোতাদের মনে দাগ কেটেছে জি এইচ আরজুর এমন আবেগময় শব্দ উচ্চারণে অনেকেরই চোখ ভিজে উঠে।
বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সুপ্রিয়া চৌধূরীর রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।
শিল্পী জি এইচ আরজু দীর্ঘসময় নিউইয়র্ক শহরে যাপিত-জীবন করলেও বর্তমানে স্ত্রী সহবসবাস করছেন নিউইয়র্কের আপস্টেটের সিরাকিউসে।
জি এইচ আরজু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুকে বুকে লালন করে, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্যদিয়ে জীবনের স্বর্ণময় সময় পাড়ি দিচ্ছেন।