সন্ধান ডেস্ক : বাইডেনের কাছে পরাজিত হলে দেশও ছাড়তে হতে পারে মিশিগান গভর্নরের কঠোর সমালোচনায় ট্রাম্প
আগামী ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে হারলে বিপদ আছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ভোটে পরাজিত হলে একের পর এক মামলা-তদন্তের গঁ্যাড়াকলে পড়তে হতে পারে রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে। তখন প্রতারণা থেকে শুরু করে যৌন হয়রানি, কোনো অভিযোগই হয়তো বাদ যাবে না। সংবাদসূত্র : বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস
ট্রাম্পের ওপর যেসব অভিযোগের খড়্গ ঝুলে আছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যবসা সংক্রান্ত লেনদেনে প্রতারণা ও মানহানির মামলা। সাবেক কলামিস্ট ই. জিন ক্যারলসহ অনেক নারীই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও মানহানির মামলা ঠুকেছেন আগেই। ব্যক্তিগত লাভের জন্য হোয়াইট হাউসকে ব্যবহারের অভিযোগ তো রয়েছেই।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতার বলে বেশকিছু অভিযোগের তদন্ত ও মামলার কার্যক্রম ট্রাম্প আটকে রেখেছেন বা বিলম্বিত করছেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, আয়কর বিবরণী দাখিল না করা। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়মুক্তির সুযোগকে তিনি কাজে লাগিয়ে এর থেকে কংগ্রেসকেও ঠেকিয়ে রাখছেন।
ট্রাম্পকে সবচেয়ে গুরুতর যে আইনি হুমকি মোকাবিলা করতে হতে পারে, সেটি হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে ম্যানহাটন জেলা অ্যাটর্নি বোর্ডের ফৌজদারি তদন্ত। আদালতে দাখিল করা নথিতে প্রসিকিউটররা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ও তার প্রতিষ্ঠান ব্যাংকিং প্রতারণা, ইন্সু্যরেন্স প্রতারণা, ফৌজদারি কর অপরাধ তথ্য রেকর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না, তা তদন্তে খতিয়ে দেখা হতে পারে।
এদিকে, আগামী ৩ নভেম্বরের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। নিজেদের দলের ভোট বাড়াতে অনবরত কথার তুবড়িও ফোটাচ্ছেন তারা। শনিবার জর্জিয়ায় এক সমাবেশে সমর্থকদের উদ্দেশে রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে হেরে গেলে আমাকে দেশ ছাড়তে হতে পারে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি হেরে গেলে কী ঘটবে, আপনারা কল্পনা করতে পারেন? হেরে গেলে আমার ভালো লাগবে না। সম্ভবত আমাকে এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ এদিন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনকে নিয়ে বারবার হাসি ঠাট্টাও করেন তিনি। সাবেক এই ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছে হেরে গেলে তা হবে খুবই বিব্রতকর বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
এদিকে, মার্কিন দৈনিক ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ বলছে, মতামত জরিপের পাশাপাশি নির্বাচনি প্রচারণাতেও জো বাইডেনের চেয়ে পিছিয়ে আছেন ট্রাম্প। গত মাসে জো বাইডেন নির্বাচনি তহবিল রেকর্ড ৩৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করলেও ট্রাম্পের তহবিলে জমা পড়েছে ২৪৭ মিলিয়ন ডলার। তবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আপাতত আর কোনো তহবিল সংগ্রহের পরিকল্পনা করছেন না। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আরও অর্থ উত্তোলন করতে পারতাম। আমি বিশ্বের সর্ববৃহৎ তহবিল সংগ্রহকারী হতে পারতাম। কিন্তু আমি এটা করতে চাই না।’
করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্টের মহামারি মোকাবিলার কৌশল নিয়ে দেশটিতে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এর মাঝে নিউইয়র্ক টাইমস ট্রাম্পের শুল্ক ফাঁকির গোপন তথ্য প্রকাশ করে দেশটিতে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্রেট প্রার্থী বাইডেনের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন বলে বেশকিছু জনমত জরিপে আভাস মিলেছে। যদিও অধিকাংশ জরিপে এগিয়ে আছেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
মিশিগান গভর্নরের কঠোর সমালোচনায় ট্রাম্প
অন্যদিকে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসকে শুরু থেকেই খুব বেশি গুরুত্ব না দেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মহামারি মোকাবিলায় মিশিগানের নেওয়া নীতি ও বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য রাজ্যটির ডেমোক্রেট গভর্নর গ্রিচেন হুইটমারের কঠোর সমালোচনা করেছেন। শনিবার মিশিগানের মাস্কিগনে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচার সমাবেশে সমর্থকরা হুইটমারের বিরুদ্ধে ‘তাকে আটকে রাখো’ স্স্নোগানও দিয়েছেন।
নভেম্বরের নির্বাচনে ডেমোক্রেট বা রিপাবলিকান পার্টি যে কারো দিকে হেলতে পারে, এমন ‘দোদুল্যমান রাজ্যগুলোর’ মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের তিন দিনের প্রচার শুরুই হয়েছে মিশিগান দিয়েই।
‘দোদুল্যমান’ এ রাজ্যগুলোর বেশ কয়েকটিতে চার বছর আগের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলেও এবার বেশিরভাগ রাজ্যের জনমত জরিপেই ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন এগিয়ে রয়েছেন। রিপাবলিকান প্রার্থী শনিবার মিশিগানে ও উইসকনসিন বড় সমাবেশ করেছেন। এই দুই রাজ্যেই সম্প্রতি করোনার ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। কিন্তু ট্রাম্পের সমাবেশে অংশ নেওয়া বেশিরভাগই সামাজিক দূরত্ব মানেননি। সৌজন্য ; যায় যায় দিন