নিউইয়র্কে বাংলাদেশীদের ভাবমূর্তি তলানীতে ঠেকতে বসেছে

এস.কে.সরকার ঃ আসলেই। বাঙালীর বুদ্ধি বেশী, আক্কেল কম। তা না হলে,নিউইয়র্কে বিভিন্ন আয়োজনে-অনুষ্ঠানে,সভায়-সমাবেশে,বক্তৃতায়-বিবৃতিতে হাস্যকর সব কান্ড-কারখানা করি। তাতে করে আমাদের মান-মর্যাদা,আত্ম-সম্মানবোধ কোথায় গিয়ে ঠেকে তার মাপ কেউ করে না। কেউ ভাবেও না, ভাবতে চানও না।
গোঁজা মিলের আয়োজনে দেশ-বিদেশের অতিথিরা কি ভাবলো সে ব্যাপারে আমাদের কমিউনিটির ভাবখানা ‘কুচ পরোয়া নেহি’।
এ ছাড়া কিছু কিছু অনুষ্ঠান এমন নি¤œ মানের এবং রুচিহীন হয় যে, সে সব দেখলে লজ্জায় মাথা নত হয়। নিজেকে বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে দ্বিধা হয়।
অনুষ্ঠানের যে একটা নুন্যতম ষ্ট্যান্ডার্ড থাকা দরকার তার কোন বালাই থাকে না। কে কি করছে, কে কি বলছে তার কোন আগামাথা খুঁজে পাওয়া যায় না। আর ‘মাইক প্রিয়’ বাঙালির মাইক পেলে তো কোন কথাই নাই। অপ্রাসঙ্গিক ও অযৌক্তিক ম্যারাথন বক্তৃতায় মশগুল হয়ে যায়। সময়-জ্ঞানের কোন ধার ধারে । কোন খানে কি বলতে হবে,কতটুকু বলতে হবে সে বোধটুকও থাকে না।
স্টেট সিনেটর ক্রিস্টিন গিলিব্রান্ডের সমর্থনে এমন এক অনুষ্ঠান ‘দর্শক বিহীন’ ভাবে শেষ হলো।


গত ১৮ জুন বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের একটি রেষ্টুরেন্টে ক্রিস্টিন গিলিব্রান্ডকে সমর্থন দিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নিউইয়র্কের কয়েকজন ব্যক্তির আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আয়োজকসহ অতিথির উপস্থিতি ছিল মাত্র ১১ জন। আর সাংবাদিক ১২ জন।
সাংবাদিক ও আয়োজক বাদ দিলে অনুষ্ঠানে হাতে গোনা মাত্র ৪/৫ ছিলেন। অথচ অনুষ্ঠানের ব্যানারে ২৫ জন আয়োজকের নাম ছিল। কিন্ত ব্যানারে নাম লেখা বেশী ভাগ আয়োজকই অনুপস্থিত ছিলেন। অর্থ্যা ‘গানের চেয়ে বাজনা বেশী’ ছিল।
অনুষ্ঠানে উপস্থিতির সংখ্যা এক্কেবারে নগন্য ছিল। তাই মুখ রক্ষার জন্য বোধকরি কয়েকজন সাংবাদিককে বক্তব্য দেয়ার জন্য মঞ্চে আহŸান করা হয়।

সাংবাদিক ও আয়োজক বাদ দিয়ে মাত্র ৪/৫ জন নিয়ে অনুষ্ঠান করায় উপস্থিত একজন খুব হতাশা ও ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, মূলধারার গুরুত্বপূর্ণ মানুষদের ডেকে এনে এ রকম হাস্যকর অনুষ্ঠান করার অর্থ কি? তিনি হতাশার সুরে প্রশ্ন করেন, এমন অনুষ্ঠান করে কমিউনিটির ভাবমূর্র্তী কোথায় যাচ্ছে ?
নিউইয়র্কে বাংগালী কমিউনিটির এখন নতুন প্রবণতা বা স্টাইল চালু হয়েছে। তা হলো সবার আগে কে, কোন অনুষ্ঠান দখল করতে পারে। কে আগে, কোন ব্যক্তিকে নিজেদের দিকে টানতে পারে। আয়োজকরা তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। এতে করে অনুষ্ঠানের মান কেমন হলো, গ্রহনযোগ্যতা কতটুকু পেল, উপস্থিতির সংখ্যা কত হলো তার কোন তোয়াক্কা কেউ করে না। দায় সারা গোছের এমন আয়োজন দেখে রবীন্দ্রনাথের কবিতার কথা মনে হয়, ‘সাত কোটি বাঙালিরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি।’

গত ১৮ জুন রেষ্টুরেন্টে ক্রিস্টিন গিলবান্ডের অনুষ্ঠান দেখে হতাশ হওয়া ছাড়া আর কোন পথ নাই। এ দৈন্য দশা থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে কবে ? স্বভাব যায় না মলে, খাছলত যায় না ধুলে’ এই অপবাদ থেকে রেহাই কবে হবে ? আমারা যে বীরের জাতী তা এই মেইন স্ট্রিমকে কবে বুঝিয়ে দিতে পারবো ? না কি আজীবন তোষামোদী,লেজুরবৃত্তি আর দালালী করেই আমাদের চলবে ?
অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ রাখেন মাজেদা এ উদ্দিন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফাহাদ সোলায়মান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য করেন হাবিব রহমান ,শা জে চৌধুরী , লাভলু আনসার, আব্দুল কাদের মিয়া, নাজমুল আহসান, আবু তাহের ,রকি প্রমূখ।
দুই দেশের সঙ্গীত পরিবেশন করেন শামিম সিদ্দিকী ও চন্দ্রা রায়।

Exit mobile version