পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস সংকট: রমজানে এ অবস্থা অনভিপ্রেত

তীব্র গরমে বেশ কিছুদিন ধরেই রাজধানীবাসী হাঁসফাঁস করছিল। এ অবস্থায় সবাই আশা করেছিল এবার অন্তত রমজান মাসে পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। কিন্তু রোজার প্রথম দিনেই তীব্র গ্যাস সংকটে রাজধানীবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় রোজার প্রথম দিনে নগরবাসীর অনেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন শিক্ষার্থীদের স্কুলে আনা-নেওয়াসহ এ বিষয়ক কাজে। দিনের দ্বিতীয় ভাগে ইফতারি তৈরি করতে গিয়ে তাদের অনেকেই লক্ষ করেন চুলায় গ্যাস নেই। রাজধানীর বহু এলাকায় চুলায় গ্যাসের চাপ এত কম ছিল যে, পানিও গরম করা যায়নি। ইফতারির জন্য কিছুই রান্না করতে না পেরে যারা পছন্দ করেন না, তাদেরও দোকানের খাবার ক্রয় করে খেতে হয়েছে। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে কর্মজীবী মানুষ।

জানা গেছে, রোজার মাঝামাঝি থেকে গ্যাস সংকট আরও তীব্র হতে পারে। এ কারণে বিপুল পরিমাণ পানির ঘাটতি হতে পারে। ফলে নগরবাসীকে দুর্ভোগ মাথায় নিয়েই পার করতে হবে রোজার মাস। জানা যায়, শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পল্লি বিদ্যুতের চাহিদা বেশি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে রোজার মাসে গ্রামবাসীকেও বিদ্যুতের কষ্টে ভুগতে হবে। তবে এসব দুর্ভোগের কথা মানতে নারাজ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিরা।

তাদের মতে-বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের তেমন কোনো সমস্যাই হবে না। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হয়েছে। তবে এসব খাতের বিশেষজ্ঞদের মতে, জোড়াতালি দিয়ে সংকট নিরসন করতে গিয়ে সব ক্ষেত্রে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে রমজানে। সংকট নিরসনে রমজানে কিছু কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হবে। একই সঙ্গে অনেক এলাকার শিল্প-কারখানায়ও গ্যাস কমিয়ে দেওয়া হবে। এতে গ্যাসের সাশ্রয় হলেও বিদ্যুৎ সংকট বাড়বে। বিদ্যুৎ সংকটের প্রভাব পড়বে শিল্প-কারখানায়; ব্যাহত হবে শিল্পোৎপাদন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দেশের বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বিবিয়ানার ছয়টি কূপ বন্ধ।

যার প্রভাব পড়েছে ঢাকায়। সংকট কাটতে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় লাগবে। তবে কূপ মেরামত করতে সময় বেশি দরকার হলে সংকট দীর্ঘায়িত হবে। এদিকে ৮ এপ্রিল একটি এলএনজির কার্গো দেশে পৌঁছার কথা রয়েছে। আশা করা যায়, ১০ এপ্রিল নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। গ্যাসের সংকট কাটাতে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

এ অবস্থায় গ্যাসের অপচয়ের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির অপচয় বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; একই সঙ্গে ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

Exit mobile version