সন্ধান২৪.কম: শুক্রবার রাতেই বাংলাদেশে কার্ফু জারি করা হয়েছিল আগেই। এ বার আরও কড়া পথে হাঁটল প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার সরকার। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, সারা বাংলাদেশে ‘শুট অন সাইট’ জারি করেছে সরকার। অর্থাৎ দেখামাত্রই গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হল সেনাবাহিনীকে। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে যে আন্দোলন চলছে, তাতে শনিবার পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ১১৪ জন বলে জানিয়েছে রয়টার্স-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। বিবিসি নিউজ বাংলা দাবি করেছে, শনিবার সে দেশে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মী।
শুক্রবার রাতেই বাংলাদেশে জারি করা হয়েছে কার্ফু। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছিল সেই কার্ফু, যাতে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় দোকান, বাজার সারতে পারেন । সে কথা জানিয়েছেন শাসকদল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘চরম অবস্থায়’ জনতার উপর গুলি চালানোর অনুমতিও দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। এই আবহে রবি এবং সোমবার সারা দেশে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। কার্ফু জারি হওয়ার পর থেকে সে দেশের রাস্তা সুনসান। শনিবার সকাল থেকে রাস্তায় রাস্তায় টহল দিয়েছে সেনা। ঢাকার রাস্তায় দেখা গিয়েছে সেনার সাঁজোয়া গাড়ি। আগামী রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে কার্ফু চলবে। তার পর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে জাতিসংঘ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
কার্ফুর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমবে বলেই মনে করছে সরকার। যদিও বিবিসি নিউজ বাংলার দাবি, শনিবার সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, শনিবার সেখানে সাত জনের মৃতদেহ পৌঁছেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। ওই সংবাদমাধ্যমের আরও দাবি, সাভারেও এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে । বার্তা দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকেও। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান ভলকার টার্ক শুক্রবার বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ছাত্রদের উপর হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশ সরকার যদিও নরমে-গরমে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করে চলেছে। শুক্রবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তথা শীর্ষ স্তরের নেতা নাহিদ ইসলামকে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বেশ কয়েক জন নেতাকেও আটক এবং গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদের একাংশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ‘সমান্তরাল প্রচেষ্টা’ চালাচ্ছে হাসিনার সরকার। শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় আন্দোলনের দু’জন সমন্বয়কের সঙ্গে ‘শীর্ষ স্থানীয় সরকারি আধিকারিকদের’ একটি বৈঠক হয়েছে বলে বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে।