অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ,বাড়ছে অসন্তোষ

ড. সিদ্দিকুরের নেতৃত্ব প্রশ্নের মুখোমুখি

সন্ধান২৪.কম:দলের ভিতরে একনায়কতন্ত্র ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল,বিদ্রোহ ও অসন্তোষ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
নিউইয়র্কের মাঠের রাজনীতিতে কোনো কোনো জায়গায় আওয়ামী লীগই আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
খুব দ্রুত দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও বিদ্রোহ দমনে ব্যবস্থা না নিলে জাতীয় নির্বাচনে ভযাবহ পরিণতি হবে বলে দলের অনেক নেতা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
দলের সমালোচনা করে অনেকেই সোসাল মিডিয়ায় তাদের ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করছেন।
সম্প্রতি এমনি এক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা ফরিদ আলম। তিনি ফেসবুকে তার ওয়ালে মন্তব্য করেছেন,‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের কিছু নেতাদের ধান্দাবাজি এখনো চলছে…।”
ফরিদ আলমের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
দরুদ মিয়া রনেল লিখেছেন,‘ভাই আখেরি সময় এসেছে লালা কাড দেখানোর প্রকাশ্যে।এ তোফান মনে হচ্ছে আখেরি তোফান ( তুফান)।’
মোহাম্মদ কামাল হোসাইন মন্তব্য করেছেন, ‘সিদ্দিক আর আজাদ যতদিন থাকবে ততদিন আওয়ামীলীগএর দুর্দিন যাবে- মাইন সেট আওয়ামীলীগের তাদের মত ধান্দাবাজ নেতা রেখে আওয়ামীলীগ চালায়- আর জামাতের কাছে ক্ষমতা ছাড়তে হয়। এরা জামাতের কানেকশন রাখে।’
রেজাউল করিম চৌধুরীর মন্তব্য, ‘যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কোন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগঠন না,এটি মনে হয় কিছু ব্যক্তি সংগঠন,তাদের মন যা চায় তারা তাই করে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ পদবী মনে হয় এটা যেন, যেন দোকানের মুদী মাল,টাকা দিলে পাওয়া যায়।’
শেখ হাসিনা সংগ্রাম পরিষদ‘র মন্তব্য-আবার সেই ধান্দাবাজের সাথে আপনারাই তাল মিলিয়ে চলেন তাদের মাথায় তেল দিয়ে জয় বাংলা জয় বাংলা বলে নিজেদের স্থান করে দেন এটাই স্বাভাবিক।’
‘ওদের ধান্দা কোনদিন শেষ হবেনা।’ মন্তব্য করেছেন নাসিমা সুলতানা মহুয়া।
দুই/তিনজন নেতার সিদ্ধান্তে দল পরিচালনা, কিছু নেতাকে অতিরিক্ত মূল্যায়ন করা এবং ত্যাগী নেতাদের দূরে ঠেলে দেয়া ইত্যাদি কারণে ড.সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে প্রতিনিয়ত দলের ভিতরেই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে।
ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ তিনি জামাযেত ইসলাম ও জামাত সমর্থিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে নিবিড় ও গভীর সম্পর্ক রেখে চলছেন বলে দলের ভিতর থেকেই অভিযোগ উঠছে। এছাড়াও নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশন নিয়েও দলের সংখ্যালঘুরা ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন। এ ব্যাপারে দলের একজন নেতা বলেন, উনি মুখেই অসাম্প্রদায়িক কিন্ত মনে মনে চরম সাম্প্রদায়িক।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ষ্টেটে, বিভিন্ন স্থানে দলের ভেতর বিরোধ তৈরি হয়েছে। দলের ভিতরে প্রভাব বিস্তার ও বৈষয়িক স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণেও বিরোধের মাত্রা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠেছে। এছাড়া দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ,গঠনতন্ত্র না মানা,একে অপরের প্রতি অবিশ্বাসের জন্য দলের ভিতরে বিভিন্ন গ্রুপ ও উপদলের সৃষ্টি হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সন্ধান প্রতিনিধিকে বলেন, দলের তৃণমূলে যে কোন্দল ও বিভক্তি তৈরি হয়েছে, সেটি মেটানোর মত পদক্ষেপ নেয়ার এখন আর কেউ নেই। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এখন কিছুটা কোনঠাসা এবং আমাদের নেত্রী দেশের বাহিরে অবস্থান করছেন তাই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতারা লাগামহীন হয়ে যা ইচ্ছে তাই করছেন।
একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, দেশের এই সংকটময় সময়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উচিত সব দ্বিধা-দ্ব›দ্ব, হিংসা-বিভেদ ভুলে এক কাতারে দাড়ানো। কিন্ত দুই/একজনে একগুঁয়েমির কারণে সবাইকে এক ছাতার নিচে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কি তার অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে সক্ষম হবে? হলেও সেটি কতটা? এমন সব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।

Exit mobile version