নিউইয়র্কে মির্জা আজমেকে জামালপুরবাসীর সংবর্ধনা

সন্ধান২৪.কম: জামালপুরের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমকে সংবর্ধনা দিয়েছে নিউইয়র্কে বসবাসরত জামালপুরবাসী । তার  যুক্তরাষ্ট্র আগমন উপলক্ষে গত সোমবার নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের কাছে উডসাইডের গুলশান টেরেসে প্রবাসী জামালপুরবাসী, যুক্তরাষ্ট্র এ নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা মো. নাজমুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা। দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্কে থাকা জামালপুরের বিশিষ্ট ব্যাক্তিসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বতস্ফুর্ত ভাবে এ সংবর্ধনায় উপস্থিত হন। এতে অনুষ্ঠানস্থল লোকে লোকারণ্যে পরিণত হয়। প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জামালপুরের শিশু-কিশোররা।
মির্জা আজম বলেন, জামালপুরসহ সারা বাংলাদেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তার মূল কারিগর হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার হাত ধরে, তার অনুগ্রহ ও আশীর্বাদেই আমার রাজনৈতিক সব অর্জন, এই পর্যায় আসতে পেরেছি। আর আমাকে কত ৩৪ বছর হচ্ছে টানা সাতবার এমপি নির্বাচিত করায় আমি আমার সংসদীয় আসনের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। তাদের কারণেই আজকে জামালপুর মানে মির্জা আজম হিসেবে মানুষ চিনতে পারে।
জামালপুরের উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে জামালপুরে ৫০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছি, সেগুলোর কাজ চলমান আছে। জামালপুর ঢাকা ডুয়েল গেজ রেললাইন প্রকল্প অনুমোদন করিয়েছি। যাতে মানুষ দ্রæত ঢাকায় আসতে পারেন। জামালপুরের অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলছে, সেখানে ১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে।
তিনি বলেন, জামালপুরে কি নেই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে, বঙ্গমাতা শেখ ফজল মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় , জামালপুর আইটি পার্ক, জামালপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ভবিষ্যতে একটি টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় হবে। ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় শেখ হাসিনা নকশী পল্লী হচ্ছে। সারাদেশের সব হস্তশিল্পের বিক্রয় কেন্দ্র হবে এই নকশী পল্লী। সেখানে ফ্যাশন ডিজাইন ইনস্টিটিউট আছে। আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় টানেলর নির্মাণ হবে জামালপুরে। সে প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে, তাহলে জামালপুর হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনসাল জেনারেল নাজমুল হুদা বলেন, আমার বাল্য, শৈশব এবং যৌবনের প্রাথমিক দিনগুলো কেটেছে জামালপুরের মাটিতে। জামালপুরের আলো বাতাস পানি মাটি আমার নিজের। তাই সেটাই ও আমার নিজের জেলা।
আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি  মুক্তিযোদ্ধা লাভলু আনসার বলেন, জামালপুরের মানুষের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ যে কোন ব্যক্তি বা যে কোন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সবাই এক হয়ে যান। এই ঐক্য অব্যাহত থাকুক।
সাপ্তাহিক আজকালের হেড অব মার্কেটিং আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, জামালপুরের মানুষজন বেশিরভাগ কাজ করেন মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু তাদের বেশিরভাগই অদক্ষ কর্মী। ফলে তারা কঠোর পরিশ্রম করেও সে অনুপাতে আয় করতে পারেন না। কিন্তু দক্ষতা থাকলে পাঁচগুণ বেশি আয় করা সম্ভব। এছাড়া সিঙ্গাপুরেও অনেক কর্মীর প্রয়োজন, তবে সে প্রশিক্ষণ নিতে ১০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। কিন্তু গ্রামের মানুষের পক্ষে তা যোগাড় করা সম্ভব হয় না। এজন্য জামালপুরে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে সংসদ সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে ৬ বিঘা জমি দান করার প্রতিশ্রুতি আবু বক্কর সিদ্দিক সিদ্দিক। এছাড়া জামালপুরের মানুষের মাঝে ঐক্যের উপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবাই মির্জা আজমের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছি। ভবিষ্যতে সবাই এভাবে এক থাকবো। জামালপুরে কোন বিভক্তি থাকবে না।
সমাজকর্মী মোরশেদা জামান, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট শাহাদাত হোসেন বাবু, সালেহ শফি গেন্দা, কৃষিবিদ আশরাফুজ্জামান, সাইদুর রহমান সেলি, আলমগীর খান, খন্দকার মুরাদু, জিল্লুর রহমান, নাসির উদ্দিন, অজিত ভৌমিক প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুরের সন্তান ফরিদ আলম অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন।

Exit mobile version