নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশন ও কনস্যুলেট আবারও রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণে

সাধারন মানুষেরা কার কাছে আশ্রয় চাইবে ?

নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেট আবারও রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
অন্তবর্তী সরকারের আগে গত ১৫ বছর এই দুটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের অধীনে।

নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান

 

গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় এলে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নিয়ন্ত্রন চলে আসে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের হাতে।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক ক্ষমতা বদলের সাথে সাথে নিউইয়র্কে এই দুটি প্রতিষ্ঠানের জাতিয় অনুষ্ঠান পালনের কর্মসূচী কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় ।
‘৫ আগস্টে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের পতনের পর এমন পরিস্থিতি প্রত্যাশিত ছিল না” এমন হতাশা নিউইয়র্কের বেশ কয়েকজন প্রবাসীর।
একজন মুক্তিযোদ্ধা আক্ষেপ করে বলেন, ‘যে যায় লংকায় সে ই হয় রাবন’ এই প্রবাদবাক্যটি জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটের ক্ষেত্রে বলা যায়। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে সেই দলের নেতারা যে ভাবে এই প্রতিষ্ঠান দুটিকে ব্যবহার করেছেন, তাতে ব্যাপক সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছিল কমিউনিটি।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও বিএনপির নেতারাও আওয়ামী লীগের কায়দায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এতে করে আবারও সমালোচনা শুরু হয়ে গেছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেট বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে দেখা যেত আওয়ামী লীগের নেতারা সব সামনের সারিতে আসন গ্রহন করতেন। এবং তাদের প্রেসক্রিবশনেই অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কে কে বক্তব্য দেবেন, অনুষ্ঠানে কারা কারা আমন্ত্রণ পাবেন সব ঠিক করে দিতেন আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে বিবেক-বুদ্ধি সম্মন্ন মানুষ অনুষ্ঠানে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।
ক্ষমতার পালাবদলের সাথে সাথে বর্তমানেও মিশনে ও কনস্যুলেট একই অবস্থা দেখা দিয়েছে-এমন মন্তব্য করেন একজন সাংবাদিক। তিনি বলেন, গত কয়েক দিন আগে এই দুটি প্রতিষ্ঠানে মহান বিজয় দিবসের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বেশী দেখা যায়। এবং তাদেরকেই বক্তব্যের সুযোগ করে হয়।
আক্ষেপ করে একজন প্রবাসী বলেন, ‘এসব দেখার জন্যই কি এদেশের জনগন বার বার ক্ষমতার পালাবদল করতে আন্দোলনে নামে, প্রান দেয় অকাতরে ? ‘দেশে একটি পরিবর্তন আনার জন্য আবু সাঈদ, মুগ্ধর মতো সূর্যসন্তানেরা প্রাণ দিয়েছেন। বহু মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। ফলে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেটেকে সাধারণ মানুষর কাছে গ্রহনযোগ্য হতেই হবে।
তিনি বলেন,সত্যিকারের এ দুটি প্রতিষ্ঠানে পরিবর্তন বা সংস্কার আনতে হবে। জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে এবং দায়বদ্ধতা আনতে হবে।
জ্যাকসন হাইটসের একজন ব্যবসায়ী বলেন, দিনবদলের সাথে সাথে যে আশার বাণী, প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদের আচরনও আগের সরকারের মতোই হয় তাহলে আমাদের মতো সাধারন মানুষেরা কোথায় স্বস্তি খুঁজে পাবো জানিনা। কার কাছে আশ্রয় চাইবে মানুষ ?

Exit mobile version