সন্ধান২৪.কম প্রতিবেদন:
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ সোসাইটি নবনির্বাচিত কর্মকর্তাদের অভিষেক অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে তুমুল হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এ সময় পুরো মিলনায়তনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
এমন হৈ-হট্টোগোল দেখে অনুষ্ঠানে আগত উপস্থিত মূলধারার নেতারা বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।
পরে কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এর পর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নিউইয়র্ক সিটি মেয়র এরিখ এডামস এসে উপস্থিত হন।
গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যে ৬ টায় উড সাইডের তিব্বতিয়ান কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ সোসাইটি নব নির্বাচিত কর্মকর্তাদের অভিষেক ও মহান বিজয় দিবস উদযাপনের আয়োজন করে।
কর্মকর্তাদের অভিষেকের আগে বক্তৃতা পর্ব চলে। এরই এক পযার্য়ে ডায়াসে বক্তব্য দিতে আসেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম। তিনি তার বক্তব্যের এক ফাঁকে বলেন,“আলম আমারা তিনবার বিজয় অর্জন করেছি তিন রকমের। একটা ৪৭ সালে,একটা ৭১ সালে ( চার বার।) একবার এরশাদের সময় আবার এই ৫ আগষ্ট। আমাদেও প্রিয় জিনিস সেই গণতন্ত্রকে সেই আমাদের অধিকারকে ,সে আমাদেও বেছে থাকার কথা বলার অধিকারকে, গণতান্ত্রিক অকিকার সমপূর্ণ রুপে ধংস কওে দিয়ে,আমাদেরকে একটা সেবা দাসের পরিনত করেছেন কোন একটা গোষ্ঠী। সেখান থেকে আমরা বিজয় লাভ করেছি। সেই বিজয়েরই আজকে একটা দিন। সুতরাং আমারা শপথ গ্রহন করি অতিতে যারা আমাদেরকে ঠকিয়েছে, অতিতে যারা আমাদও লুন্ঠন করেছে,অতিতে যারা আামদের কোন ভাবেই কাছে যেতে দেয় নাই। শুধু তাই না আমাদেও ঘরবাড়ি ধংস করেছে। আামাদের জেল খানায় রেখেছে, গুম করেছে,হত্যা করেছে ,নারীর উপর নির্যাতন করেছে। তােেদর াপ্রতি আজকের দিনে শপথ গ্রহন করতে হবে-এদেও সেই চেহারাকে আমরা তুলে ধরবো।” এই পর্যন্ত বক্তব্য দেয়ার সাথে সাথে উপস্থিত কিছু মুক্তিযোদ্ধ্য ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তার এই বক্তব্যেও প্রবল বিরোধীতা করতে শুরু করেন। এসময় ফফরুল আমল তার বক্তৃতা বন্ধ রাখেন।
কিন্ত ততক্ষণে দর্শক সারীতে শুরু হয় প্রচন্ড হৈ-হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কি। মুক্তিযোদ্ধারা ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর মঞ্চের দিকে তেড়ে আসতে থাকে। কিন্ত সোসাইটির কর্মকর্তরা তাদেরকে নিবৃত্ত করে। এই ‘গ্যাঞ্জামে’ বিএনপির নেতা-কর্মীরাও জড়িয়ে পড়েন।
তুমুল গন্ডগোলের মধ্যে অভিষেক উপ কমিটির সদস্য সচিব মাইনুল উদ্দিন মাহবুব মাইকে বলতে থাকেন, ‘এটা কোন রাজনৈতিক প্রগ্রাম না,এটা আমাদের সামাজিক অনুষ্ঠান।এখানে ঝগড়া-ঝাটি মানায় না। আমরা সভ্য সমাজে বাস করি। সবাই বক্তব্য রাখছে, বক্তব্য হচ্ছে আমার মনের ব্যাপার মুখের ব্যাপার, দুই মিনিটের ব্যাপার আপনারা এ কান দিয়ে শুনে ও কান দিয়ে বের করে দেন।’
সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হোসেন খানও মাইকে বার বার ঘোষনা দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। তাছাড়া বাংলাদেশ সোসাইটির নব নির্বাচিত সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী এবং আহŸায়ক মো: মহিউদ্দিন দেওয়ান উত্তেজিত সবাইকে নিজ নিজ আসনে বসার আহŸান জানান। কিন্ত ততক্ষণেও দর্শক-শ্রোতাদের দিক থেকে ফখরুল আলমের বিরুদ্ধে ‘ভ‚য়া’ ‘ভ‚য়া’ চিৎকার শোনা যায়।
কর্মকর্তাদের দীর্ঘ চেষ্টার পর পরিস্থিতি শান্ত হলে আবার অনুষ্ঠান শুরু করা হয়। এর পর বক্তব্য দিতে এসে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি রব মিয়া বলেন,… আমি আাপনাদের আচরণে নিজকে লজ্জিত মনে করছি…। সোসাইটির নির্বাচন শেষ হয়ে গেছে, এখন এখানে যে সমস্ত কথা এসেছে সে সমস্ত আসার কথা ছিল না। সুতরাং আপনার চৈত্র মাসের ওয়াজ আপনারা পৌষ মাসে করছেন। আমাদেরকে জানতে হবে, এখন কি মাস কি ওয়াজ করতে হবে। শীতের দিনে গরম কালের ওয়াজ চলে না। আজকে এখানে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার জন্য আমি সাংবাদিক ভাইদেও কাছে দু:খিত।
এদিকে এই লজ্জাজনক ঘটনাকে নিয়ে উপস্থিত একজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটি একটি সামাজিক সংগঠন। এখানে কারো কোন রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া মোটেই উচিত হয় নাই।
অপর একজন বলেন, তিনি নিজেকে হাই লাইট করার জন্য জেনে-শুনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এই বক্তব্য দিয়েছেন,কিন্ত এতে করে সোসাইটির ভাবমূর্তি ক্ষুুুুুুন্ন হলো।
এদিকে এই অপ্রীতিকর ঘটনা সোসাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকেই অনুষ্ঠান নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করতে থাকেন।
আমজাদ হোসাইন সোসালমিড়িয়ায় মন্তব্য করেছেন- লজ্জিত, এই দেশে থেকে আপনাদের এই ধরনের আচরণের জন্য।
ছোটন আল আমিন বলেছেন-‘টেকি সর্গে গেলেও ধান বানে।”
আলম সাঈদ মন্তব্য করেছেন,‘তোমারা কবে মানুষ হবে? বিদেশে এসেও সেই পল্টন ময়দানের মত আচরন করেলে কি চলবে? বিদেশীরা কি বলবে? লজ্জা!!!’
সেলিম রেজা: ‘বিতর্ক করার জন্য এই লোকটি যথেষ্ট।এটা একটা সামাজিক অনুষ্ঠান তাই এ ধরনের বক্তব্য পরিহার করা দরকার এবং বাংলাদেশের রাজনৈতি বিষয় সম্পুর্ণ পরিহার করে প্রবাসীদের স্বার্থে কথা বলা উচিত। কারণ হিসাবে আমি বলবো এটা কোনো রাজনৈতিক মঞ্চ নয়।