নিউইয়র্কে স্মরণকালের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন

সন্ধান প্রতিবেদন: নিউইয়র্কের ইতিহাসে এই প্রথম স্মরণকালের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করা হলো।

এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুরো নিউইয়র্ক শহর ১৫ আগষ্ট হয়ে উঠেছিল বঙ্গবন্ধুময়। প্রতিটি অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী বাদে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল অবাক করার মত।

তবে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে ছন্দপতনও ঘটেছে। অনুষ্ঠানে গরুর মাংস থাকায় অনেকেই ক্ষুদ্ধ ও হতাশ হয়েছেন। অনেককে না খেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদেরকে অসাম্প্রদায়িক বলে পরিচয় দিলেও, নিউইয়র্কে তাদের অনুষ্ঠানে খাবার নির্বাচনে পুরোপুরি সাম্প্রদায়িক হয়ে ওঠেন।

এছাড়া কিছু কিছু শোক সভায় তরুণ-যুবকদের হৈ-হুল্লোড় ও উৎশৃঙ্খলা শোকের আবহকে ম্লাণ  করে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু স্মরণে অনুষ্ঠানসূচীতে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের স্যালুট,আলোচনা,প্রামান্য চিত্র প্রদর্শন,দোয়া মাহফিল,খাবার দিয়ে আপ্যায়ন,গাছের চারা ও জায়নামাজ বিতরণ। প্রতিটি অনুষ্ঠানে জাতিয় সংগীত পরিবেশন করা হয়।

এদিন শুধুমাত্র জ্যাকসন হাইটসে ছিল ৮টি অনুষ্ঠান। এর মধ্যে কোন কোন অনুষ্ঠানে বিশাল ডিজিটাল স্ক্রীনে ভেসে ওঠে শেখ মুজিবের ছবি ও ৭মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। এছাড়াও নিউইয়র্কেও বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা ব্রঙ্কস,ব্রকলিন,জ্যামাইকা,এষ্টোরিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী পরিবার, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ, জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী, একাত্তরের প্রহরী ফাউন্ডেশন-যুক্তরাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ,১৫ আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপন কমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী ফোরাম ইউএসএ, গোপালগঞ্জ ফাউন্ডেশন আমেরিকা ইনকসহ বিভিন্ন সংগঠন শোকের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন,যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ডঃ সিদ্দিকুর রহমান,সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, ড. নুরন নবী, মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, ড. প্রদীপ রঞ্জন কর,ডা. মাসুদুল হাসান,ড. দীলিপ নাথ,আব্দুস ছামাদ আজাদ,মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী,মহিউদ্দিন দেওয়ান,হুসনে আরা বেগম,মমতাজ শাহনাজ, মুজাহিদ আনসারী, স্বীকৃতি বড়–য়া, শাহীন আজমল, জয়নাল আবেদীন, নুরুজ্জামান সরদার,নুরুল আমিন বাবু,শাখাওয়াৎ বিশ্বাস,শাকিল মিয়া মো. আলম নমি, মীর নিজামুল হক,মামুন মিয়াজী,আবুল বাশার মিলন,মাহমুদুল হাসান,রফিকুর রহমান,ইমদাদ চৌধুরী, কাজী আজিজুল হক খোকন, মিনহাজ আহমেদ সাম্মু, এম এ আলম বিপ্লব প্রমূখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুকে কোনদিন বাংলার মাটি থেকে নি:শেষ করা যাবে না।  শেখ মুজিব সেই বিস্ময় যাকে মানচিত্র থেকে উৎখাত করতে চাইলে তিনি বিশ্ব মানচিত্রের বন্ধু হয়ে উঠেন।

বক্তারা আরও বলেন, এবার ১৫ আগষ্টে সারা বিশ্বে বাস্তবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রমানিত হয়েছে যে, বাঙালির হৃদয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অমর, অক্ষয় এবং চিরঞ্জীব। তিনি ছিলেন এবং আছেন ।

প্রসঙ্গত: বিগত সরকারের আমলে এই দিনটিতে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারী পর্যায়ে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হতো। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন অন্তর্র্বতী সরকার দিবসটিতে সরকারি ছুটি বাতিল করে। ফলে গত ১৫ বছর পর এবার জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনসুলেটে ‘১৫ আগষ্ট’ উদযাপন করা হলো না।

 

 

Exit mobile version