সন্ধান২৪.কম: মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা দুঃসংবাদ দিয়ে বলেছে, বরফ গলার কারণে মহাসাগরগুলোতে জলের স্তর অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় গোটা পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আন্টার্কটিকার ফ্লোরিডায় ৮০ মাইল প্রস্থের পৃথিবীর সবচেয়ে প্রসস্ত থোয়াইটস বা ডুমসডে হিমবাহটি দ্রæত গলে যাচ্ছে। এর ফলে আগে যে ধারণা করা হচ্ছিল তার থেকেও দ্রæত বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা।
এই হারে উচ্চতা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে সবথেকে দ্রæত ক্ষতিগ্রস্থ হবে নিউইয়র্ক শহর। এর সাথে থাকবে মিয়ামি, ব্যাংকক, সাংহাই, লিমা ও কেপ টাউনের মত শহরগুলো।
কমপক্ষে ৮০ কোটি মানুষ আধা মিটার পানির নিচে তলিয়ে যাবে। শহর ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকা সমুদ্রের নিচে তলিয়ে যাবে।
শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি বাস করে। এখানেই দেশের প্রধান বন্দরগুলো, বিনোদনমূলক এলাকাগুলো অবস্থিত। এছাড়া এই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। এছাড়া ব-দ্বীপ অঞ্চল ও জলাভূমিগুলোও হুমকিতে রয়েছে।
মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার এক বিশ্লেষণ তাই বলছে। গত ৩০ বছর ধরে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যেসব ডাটা সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি, তা বিশ্লেষণ করেই এই দুঃসংবাদ দিয়েছে তারা। এক রিপোর্টে নাসা জানিয়েছে, ১৯৯৩ সাল থেকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা মোট ৯.১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু ২০২১ থেকে ২০২২ সালেই উচ্চতা বেড়েছে ০.২৭ সেন্টিমিটার। এটিকে সামান্য মনে হলেও কয়েক দশকের বিচারে এই পরিমাণ অত্যন্ত ভয়াবহ। সময় যত যাচ্ছে এই উচ্চতাবৃদ্ধি আরো গতি পাচ্ছে।
জানা যায়, ২০৫০ সালে প্রতি বছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ০.৬৬ সেন্টিমিটারে গিয়ে দাঁড়াবে। ২০৫০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপকূলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে এই অবস্থা আরো খারাপ হবে। আর এই অবস্থার জন্য মানুষকেই দায়ী করেছে নাসা।
মানুষ প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন করে চলেছে বায়ুমন্ডলে। আর এটিই পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি করছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি করছে। দুই মেরুতে বরফ গলায় নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে।
ওয়াশিংটনে নাসার আর্থ সায়েন্স ডিভিশনের পরিচালক কারেন সেন্ট জার্মেইন বলেন, সাম্প্রতিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি নিয়ে আমরা নিশ্চিত। আমরা এখন সমুদ্রের উচ্চতা কতা এবং কত দ্রæত তা বাড়তে থাকবে সেটি আরো ভালোভাবে প্রজেক্ট করতে পারি। আমরা গত কয়েক দশক ধরে সমুদ্র পর্যবেক্ষণ করে তথ্য সংগ্রহ করেছি।