নিজস্ব সংবাদদাতা, গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা ঃ
১৯ অক্টোবর দুপুরে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে হোটেল-রেস্টুরেন্টে অবাধে প্রবেশ ও খাবার গ্রহণের নাগরিক অধিকার এবং শতশত বছর ধরে বসবাসরত স্থানে হরিজন জনগোষ্ঠীর ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের সামনে হরিজন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সী শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরও হরিজন জনগোষ্ঠী আজও পূর্ণ নাগরিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এই সমতা ও মানবিকতার বাংলাদেশে আজও হরিজন জনগোষ্ঠী হোটেল-রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে পারে না। খাবার খেতে গেলেও বৈষম্যের দেয়ালে ঠেকে যায় তাদের মানবতা। এ ছাড়াও স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও হরিজন জনগোষ্ঠী আজও নানামুখী বৈষম্যের শিকার। শত শত বছর ধরে একই স্থানে বসবাস করেও হরিজন জনগোষ্ঠীর ভূমির মালিকানা এখনো নিশ্চিত হয়নি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাওয়া এই জনগোষ্ঠী আজ উচ্ছেদ, ভূমিহীনতা ও অনিশ্চিত জীবনের শিকার। এটি শুধু সামাজিক অবিচার নয়, বরং রাষ্ট্রীয় দায়িত্বহীনতার চিত্রও প্রকাশ করে। এখনও হরিজন জনগোষ্ঠীর মানুষকে হোটেল ও রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে বা অন্যদের মতো অবাধে খাবার গ্রহণ করতে দেওয়া হয় না। এটি সরাসরি নাগরিক ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।

এর আগে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে একই দাবিতে একটি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি সন্তোষ বাসফোর এর সভাপতিত্বে এ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন অবলম্বনের প্রধান নির্বাহী প্রবীর চক্রবর্তী, জেলা আদিবাসী-বাঙালী সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, লেখক-সাংবাদিক কায়সার রহমান রোমেল, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবু সুফিয়ান সুজা, ইউনিয়ন জামাতের আমীর শামসুল হক, গণফোরাম নেতা নুরুল ইসলাম সরকার, বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রাজেশ বাসফোর, সহসভাপতি সুধীর বাসফোর, গোবিন্দগঞ্জ বাসফোর-হরিজন ঐক্য পরিষদের সভাপতি ঘরুয়া বাসফোর, সাঘাটা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বাসফোর, কলেজ শিক্ষার্থী সুনীতা বাসফোর প্রমূখ।